Web Series

রোমাঞ্চহীন রহস্যগল্প

এক মিনিটের জন্যও তাঁর উপর থেকে চোখ সরাতে দেননি। সুনীলের অসাধারণ কমিক টাইমিং ও অভিনয় সিরিজ়টিকে তাও ধরে রাখে।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ০৫:৫৬
Share:

সানফ্লাওয়ার
(ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: বিকাশ বহেল,
রাহুল সেনগুপ্ত
অভিনয়: সুনীল, মুকুল, রণবীর
৫/১০

Advertisement

একটি খুনের তদন্ত নিয়ে কৌতুকাশ্রিত সিরিজ়। সিরিজ়ের গোড়াতেই বিশদে খুন দেখানো হয়ে যায়। খুনির পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়। তার পরে সিরিজ় জুড়ে চলতে থাকে তদন্ত। সন্দেহ সরতে থাকে খুনির আশপাশে একজন থেকে অপর জনের উপরে। আর খুনি ফস্কে যেতে থাকে পুলিশের হাত থেকে। খুনের রহস্যগল্পে একে বলা যায় রিভার্স হুডানইট মেথড। আর তার সঙ্গে রয়েছে হিউমর, যা ‘সানফ্লাওয়ার’ সিরিজ়টির স্বাতন্ত্র্য কিছুটা হলেও বজায় রেখেছে।

সানফ্লাওয়ার আবাসনের বাসিন্দা মিস্টার রাজ কপূর খুন হয়। তার ডাবের জলে ব্রোমেথ্যালিন মিশিয়ে দেয় প্রফেসর আহুজা (মুকুল চড্ডা)। পুলিশ পৌঁছয় স্পটে। খুনের তদন্তের ভার পড়ে ইনস্পেক্টর দিগেন্দ্রর (রণবীর শোরে) উপরে। আবাসনের সব বাসিন্দাকেই জেরা করা হয়। এই আবাসনেই থাকে সোনু সিংহ (সুনীল গ্রোভার)। ওসিডিতে আক্রান্ত সোনুর আচরণ সন্দেহের উদ্রেক করে। অন্য দিকে সোনুর ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া যায় ইনজেকশন ও ইঁদুর মারার বিষ, যাতে থাকে ব্রোমেথ্যালিন। ফলে পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে তার উপরে। প্রফেসর আহুজা কি ধরা পড়ে শেষ পর্যন্ত?

Advertisement

তদন্ত এগোনোর সঙ্গে-সঙ্গে আবাসনের বাসিন্দারা ধরা দেয় ক্যামেরার ফোকাসে। সেখানে যেমন আছে আদর্শবাদী মিস্টার আইয়ার, তেমনই আছে বেনিয়মে চলা দুই যুবতী। গল্পে রয়েছে বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীর সঙ্গে পরিচারিকার প্রেমও। আবার সোনুর অফিসে রয়েছে তার ক্রাশ। এ রকম একাধিক চরিত্রের আসাযাওয়া প্রথম দিকে ভাল লাগলেও পরের দিকে তা অহেতুক দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছে সিরিজ়ের। আদপে রহস্য উদ্‌ঘাটনে কোনও ভাবেই সহায়ক হয়নি। রহস্য ও তদন্ত পাশাপাশি চলতে-চলতে একটা সময়ে রহস্য হারিয়ে যায়। আবার কৌতুকের দৃশ্যও অহেতুক বাড়ানোয় তার মজা নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে, সুনীলের পিছনে ক্যাব ড্রাইভারের লম্বা দৌড় ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়। সিরিজ়ের এডিটিংয়ে আর একটু যত্নশীল হওয়া দরকার ছিল।

তবে সিরিজ়ের প্রাণকেন্দ্র সুনীল গ্রোভার। এক মিনিটের জন্যও তাঁর উপর থেকে চোখ সরাতে দেননি। সুনীলের অসাধারণ কমিক টাইমিং ও অভিনয় সিরিজ়টিকে তাও ধরে রাখে। মুকুল চড্ডা ও রাধা ভট্টর অভিনয়ও প্রশংসনীয়। আর চমৎকার একটা আবহসঙ্গীত রয়েছে গোটা সিরিজ়ে, যার রেশ থেকে যায়।

তবে রহস্যগল্পে রহস্যই যদি সাবপ্লটে চলে যায়, তা হলে তা বিরক্তির উদ্রেক করে। রহস্যের কোনও রোমাঞ্চই আর অনুভূত হয় না। অহেতুক কমেডিও হাসির খোরাক জোগাতে অক্ষম। রহস্যগল্পে পরিচালক জুটি বিকাশ বহেল ও রাহুল সেনগুপ্ত যে সুতো ছড়িয়ে রেখেছেন, তা না গুটিয়েই সিরিজ়টি শেষ হয়ে যায়। হয়তো দ্বিতীয় সিজ়নে সুতো গোটাবেন। কিন্তু প্রথম সিজ়ন সেখানে অসমাপ্ত থেকে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement