বিশাল দাদলানি।
প্র: ‘সা রে গা মা পা’-র এই সিজ়ন থেকে দর্শক কী প্রত্যাশা রাখবেন?
উ: ভারতীয় মিউজ়িক রিয়্যালিটি শোয়ের ক্ষেত্রে ‘সা রে গা মা পা’-র ভূমিকা পথপ্রদর্শকের মতো। ব্র্যান্ডটির সঙ্গে দেশের প্রতিটি পরিবার কম-বেশি পরিচিত। কখনও না কখনও সকলেই শো দেখেছেন। ভারতীয় সঙ্গীতের শিকড়ের সঙ্গে এই শোয়ের যোগ রয়েছে। এই সিজ়নে সেই মান ধরে রাখার চেষ্টা করব।
প্র: কিন্তু এখন প্রতিটি চ্যানেলে একটি করে মিউজ়িক রিয়্যালিটি শো। এখনও কি গায়ক তৈরি হয় এই ধরনের শো থেকে?
উ: অভিজ্ঞতা, পরিচিতি এবং কাজের পরিসর বাড়ানোর জন্য রিয়্যালিটি শো গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সঙ্গীতের সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত, তাঁদের কাছে রিয়্যালিটি শো জার্নির শুরুমাত্র, শেষ নয়। এমনকি যে বিজয়ী হচ্ছে, তার জন্যও কথাটি প্রযোজ্য। নেপথ্য শিল্পী হিসেবে গাওয়া (প্লেব্যাক) এখন একমাত্র বিকল্প নয়। কেরিয়ারের শুরুতেই শ্রোতাদের কাছে নিজের কণ্ঠস্বরের পরিচিতি তৈরি করার গুরুত্ব রয়েছে।
প্র: বিশাল-শেখর জুটির সবচেয়ে বড় গুণ কী?
উ: শেখরকে (রবজিয়ানী) বিশাল বলে আর আমাকে শেখর বলে অনেকে ভুল করেন। কিন্তু আমরা দু’জনে এই বিষয়টাকে কমপ্লিমেন্ট হিসেবে ধরি। শেখর এমন একজন মানুষ, যার সঙ্গে আমার ইগোর লড়াই নেই। শেখরকে ‘গুরু’ বলে মানি। আমার নিজের ভাই নেই। কিন্তু থাকলে, শেখরের মতোই একজন কেউ হত (হাসি)।
প্র: আপনি তো রিমিক্স গানের কড়া সমালোচক...
উ: একটা শব্দেই এটাকে ব্যাখ্যা করা যায়, ‘আবর্জনা’!
প্র: কিন্তু গত এক দশকে বলিউডে রিমিক্স গানের রমরমা বেড়েছে।
উ: আমার কাছে পুরো বিষয়টা ‘ননসেন্স’। তাই গান চলুক বা না চলুক, আমার মত বদলাবে না। সব সময়ে অরিজিনাল গান শুনুন।
প্র: হিন্দি ছবিতে এখন গানের সংখ্যা কমে গিয়েছে। সুরকার-গায়কদের কাছে এটা কি চিন্তার বিষয়?
উ: আমি এই ভাবে ব্যাপারটা দেখি না। ছবিতে গানের সংখ্যা কমে গেলে, আমি ছবির সংখ্যা বাড়িয়ে নেব। সত্যি কথা বলতে, এটা কোনও সংখ্যার খেলা নয়। মিউজ়িকের প্রতি ভালবাসা থেকে কাজটা করি। ছবিতে একটা গান থাকুক বা ছ’টা, সুরকার হিসেবে আমার দায়িত্ব কমছে না। সংখ্যা কমে যাওয়া মানে আমার সুযোগ কমছে, সেটা কিন্তু নয়।
প্র: শ্রোতাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য অনেক ধরনের মিউজ়িক প্ল্যাটফর্ম এসে গিয়েছে। তাতে কি গায়কদের শুধুই সুবিধে হয়েছে?
উ: প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের ভাল-খারাপ দিক রয়েছে। যাঁরা অতিরিক্ত এক্সপোজ়ারের কথা বলেন, তাঁদের কাছে স্বাধীনতাও রয়েছে একাধিক মাধ্যম ব্যবহার না করার। তবে শ্রোতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের পথ হিসেবে যে কোনও মাধ্যম ভাল।
প্র: ইন্ডিপেনডেন্ট মিউজ়িকের ক্ষেত্রে কি হিন্দি ইন্ডাস্ট্রি ভাল কাজ করছে এখন?
উ: এক শ্রেণির মানুষ বলেন, ‘‘আজকাল এক রকম মিউজ়িক হচ্ছে...’’, আমার কাছে তাঁরা অতীতে বাস করেন। এখন যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা সকলেই পরিশ্রম করেন। ভাল কাজ করছেন, অন্য ধারার কাজ হচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রির অনেক সিনিয়র সুরকারও জুনিয়রদের সমালোচনা করেন। এই বিষয়টা একেবারে সমর্থন করি না। একজন সুরকারের আর একজনকে বিচার করার অধিকার নেই। শ্রোতারা শুনছেন, যা বলার তাঁরাই বলবেন।
প্র: আপনি মোদী সরকারের কট্টর সমালোচক। আরিয়ান-কাণ্ডেও মুখ খুলেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিল্পীদের আরও সরব হওয়া উচিত?
উ: আমার জীবনের একটাই মন্ত্র, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না...একলা চলো রে’ (হাসি)। আমার কথা তো আমি বলবই, কারও জন্য বলতে হলেও বলব। যাঁরা চুপ করে রয়েছেন, সেটা তাঁদের বিষয়।