সত্যিই কি রাজ নিজেই ‘ছুটি’ চাইছেন? নাকি, এর নেপথ্যে অন্য কাহিনি?
অতিমারির কারণে এ বছরও পিছিয়ে গিয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের নির্ঘণ্ট। সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে উৎসবের সম্ভাব্য তারিখ ২০২২-এর ৭ জানুয়ারি। আরও একটি খবর ইতিমধ্যেই চর্চায়। টানা দু’বছর উৎসবে চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব সামলানোর পরে পদ থেকে নিজেই অব্যাহতি চাইছেন রাজ চক্রবর্তী। তাঁর জায়গায় নাম উঠে এসেছে অরিন্দম শীল-সহ একাধিক শাসক দল ঘনিষ্ঠের।
সত্যিই কি রাজ নিজেই ‘ছুটি’ চাইছেন? নাকি, এর নেপথ্যে অন্য কাহিনি?
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ব্যারাকপুরের বিধায়কের সঙ্গে। কী বললেন তিনি? রাজ সাফ বলেন, ‘‘আমি ক্ষমতা ধরে রাখায় একেবারেই বিশ্বাসী নই। ‘আমি’ নই ‘আমরা’ হয়ে থাকতে বেশি ভালবাসি। টানা দু’বছর এক পদে থাকার পরে মনে হচ্ছে, নতুন কেউ এলে বৈচিত্র্য আসবে উৎসবে। আমার যা দেওয়ার ছিল, গত দু’বছরে দিয়েছি। তাই পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছি। নিজেই সে কথা জানিয়েছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’’
রাজের এই স্বতঃপ্রবৃত্তিই আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে তাঁকে। যদিও বিধায়ক-পরিচালকের দাবি, এটাই তাঁর স্বভাববৈশিষ্ট্য। এক পদে থাকতে বেশি দিন ভালবাসেন না। তাঁর আরও যুক্তি, চলচ্চিত্র উৎসব সকলের। তাই কোনও পদ কুক্ষিগত হয়ে না থাকাই ভাল। সেই ভাবনা থেকেই রাজের এই পদক্ষেপ। যা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত।
উদাহরণ হিসেবে রাজ আরও বলেছেন, অরিন্দম শীল, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক ব্যক্তি তাঁকে চলচ্চিত্র উৎসবে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। বিধায়ক-পরিচালক মনে করেন, এ বার তাঁদের কারও এই পদে কাজের সুযোগ পাওয়া উচিত। নিজের ছেড়ে যাওয়া পদে কাকে দেখতে চান রাজ? পরিচালকের দাবি, ‘‘সবটাই নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রীর উপরে। আমার কোনও পছন্দ-অপছন্দ নেই। যিনি আসবেন, তিনিই স্বাগত।’’
রাজ এ-ও জানান, পদে না থাকলেও চলচ্চিত্র উৎসবে সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পরিচালক অরিন্দম শীলের সঙ্গেও। তাঁর বক্তব্য, এই খবর তিনি প্রথম জানলেন। তবে অরিন্দম এ-ও জানিয়েছেন, দীর্ঘ বছর এই উৎসবের সঙ্গে জড়িত তিনি। সম্মানীয় পদে আসীন। তার পরেও আগামীতে বিশেষ কোনও পদ দেওয়া হলে খুশি মনেই সেই দায়িত্ব সামলাবেন।
রাজের আবেদন গৃহীত হলে কবে এই পদ-পরিবর্তন ঘটবে? বিধায়কের মতে— যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, ততই মঙ্গল। তবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী খুবই ব্যস্ত। রাজের আশা, এর পরেই সম্ভবত তিনি তাঁর মত জানাবেন। বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল নন্দন এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘এখনও উৎসবের দিনক্ষণ স্থির হয়নি। একই সঙ্গে রাজ চক্রবর্তীও এ ধরনের কোনও কথা জানাননি।’’ তাই বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।