রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম বার রাজনীতির ময়দানে। প্রথম বারেই জয়ী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান রচনা। প্রায় তিন মাস ধরে লাগাতার প্রচার। গোটা প্রচার জুড়েই বিতর্ক। কখনও ‘ধোঁয়া’ দেখেছেন, কখনও সিঙ্গুরের দই খেয়ে সেখানকার গরুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সমাজমাধ্যম জুড়ে তাঁকে নিয়ে মিমের বন্যা। জেতার পর সেই মিম প্রস্তুতকারকদেরই ধন্যবাদ জানালেন তিনি। আগামী পরিকল্পনা কী? জয়ের নেপথ্যে স্বামী প্রবাল বসুর ভূমিকা কতখানি? সেই সঙ্গে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ শোয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অকপট রচনা।
ফোন তুলতেই চিরপরিচিত সেই হাসি। জেতার ঘোর এখনও কাটেনি। হুগলিতেই রয়েছেন। সকালে স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। আর খানিক ক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় উদ্দেশে রওনা দেবেন। জয়ের পরের দিনটা কেমন লাগছে? ‘‘ভাল লাগছে, সব থেকে ভাল লাগছে তৃণমূলের এই জয়।’’
নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। এক সময়ের সহকর্মী। তাঁকে হারিয়েছেন। তবে নিজে জিতে অন্যকে খাটো করায় বিশ্বাসী নন রচনা। বরং আগামী পাঁচ বছর হুগলির জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। যাঁরা বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের পাশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ তিনি। অবশ্য এই মুহূর্তে কলকাতায় ফিরে আগে ছেলের সঙ্গে কয়েকটা দিন সময় কাটাবেন। রচনা বলেন, ‘‘ গত কয়েক মাসে একদম সময় দিতে পারিনি ছেলেকে। জেতার পর আমাকে বলেছে, ‘মা, আমাকে এ বার সময় দেবে’। ওকে নিয়ে ঘুরতে যাব আগে।’’
তবে রচনা নিজেও জানেন, গোটা প্রচার পর্ব জুড়ে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ঢালাও মিম। চলছে ঠাট্টা, রসিকতা। জেতার পর রচনা বললেন,‘‘ আমি তো তাঁদের দোষ দিচ্ছি না। তাঁদের রুজি-রোজগারের জায়গা। এই মিমের কারণে যে প্রচারটা পেয়েছি, তা আমার পক্ষেই গিয়েছে। কারণে,যে কোনও ধরনের প্রচারই কিন্তু আসলে প্রচার । ওঁরা আমাকে যে হাইপটা দিয়েছেন, তাতে সারা পৃথিবীর লোক জেনে গিয়েছে কে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ তিনি জেতার পর যদিও তাঁকে নিয়ে নতুন মিম প্রস্তুত। সংসদে রচনা ‘এ বার বলো’ বললেই নাকি কথা বলবেন সকলে! যদিও গোটাটা শুনে অট্টহাসি অভিনেত্রীর। তাঁর কথায়, ‘‘এর মধ্যেই নতুন মিম তৈরি হয়ে গেল। বাবা! আমি কিন্তু এদের প্রতিভা ও সৃজনশীলতাকে কুর্নিশ জানাই।’’
তবে তাঁর প্রতিপক্ষ লকেট বিজেপির এক বারের জেতা সাংসদ। তাই প্রথম থেকেই নিজের দুই বিশ্বস্ত সৈনিককে নিয়ে ময়দানে নেমেছিলেন বলেই জানালেন অভিনেত্রী। রচনার কথায়,‘‘ আমার এই জয়ের কৃতিত্ব দেব প্রবালকে (অভিনেত্রীর স্বামী) ও অশেষ পালকে (অভিনেত্রীর দাদা)। এই দু’জন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে।’’ সাংসদ হিসেবে নতুন দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। তবে কি ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ শোয়ের ভবিষৎ অনিশ্চিত? খানিক অভয় দিয়ে রচনা জানালেন, কোনও দিকেই অসুবিধে হবে না। দুই দিকের দায়িত্বই পালন করবেন তিনি। হয়তো তাঁর কষ্ট হবে, কিন্তু তিনি করতে পারবেন নিশ্চিত।
ReplyForward