মুরাদ হাসান-মাহিয়া মাহি
গদি হারানোর পরে কোথায় বাংলাদেশের দাপুটে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান? অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে ফোনে অশালীন হুমকি দেন তিনি। দু'বছর আগের সেই ফোনালাপের অডিয়ো ক্লিপ এখন ভাইরাল। তার আগে বিরোধী দলনেত্রী খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যাকে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উদ্দেশেও কটূক্তি করেছিলেন তিনি। দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় সামলাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রী এ বার চুপিচুপি দেশত্যাগও করলেন।
জানা গিয়েছে, একটি বিমানে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন মুরাদ হাসান। বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ২১ মিনিটে। বৃহস্পতিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে পৌঁছে গিয়েছিলেন কয়েক ঘণ্টা আগেই। বিমান ছাড়তে দেরি হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে মুরাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। ওই রাতেই মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় অভিযোগ করা হয়। সাধারণ ডায়েরি হিসেবে দায়ের করা অভিযোগটি শাহবাগ থানা পাঠিয়ে দিয়েছে ঢাকার পুলিশ কমিশনারের কাছে। পুলিশ কমিশনার অভিযোগটি সাইবার অপরাধ বিভাগে পাঠাবেন বলেই ধারণা। এই সব তৎপরতার মধ্যে কী করে মুরাদ হাসান দেশত্যাগ করলেন, উঠেছে সেই প্রশ্ন। এর প্রেক্ষিতে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আইনের নজর দুর্বল বলেই মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশে দু’বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান। প্রথমে তিনি ছিলেন ২০১৮ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। পরে দফতর পালটে মুরাদ হাসানকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ দিকে, মাহিয়া-ফোনালাপ কাণ্ডে নায়ক মামনুন হাসান ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অল রশিদ জানান, মুরাদ হাসান ফোন করেছিলেন ইমনকে। তার পর ইমনের মোবাইলেই তিনি কথা বলেন মাহিয়ার সঙ্গে। তাই প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি এ কথাও জানান, মাহিয়া মাহি দেশে ফিরলে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে এখন বাংলাদেশ জুড়ে একটাই প্রশ্ন— ইমন ও মাহিয়াকে নিয়ে পুলিশের যথার্থ পরিকল্পনা থাকলেও পদত্যাগী মন্ত্রী মুরাদ হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করা হল না কেন? সেটাই তো বেশি জরুরি ছিল।
মুরাদ হাসান কী ভাবে দেশত্যাগের অনুমতি পেলেন, এ বিষয়ে রহস্য দানা বাঁধছে ক্রমশ।