—ফাইল চিত্র।
মধুবালার নেপথ্যে সমবেত নৃত্য দিয়ে যাঁর যাত্রাশুরু, ‘কলঙ্ক’-এ মাধুরী দীক্ষিতের নৃত্যের নেপথ্য-কারিগর হিসেবে সে যাত্রা শেষ হয়েছিল বলিউডের ‘মাস্টারজি’র। শুক্রবার ভোরে চলে গেলেন সরোজ খান। শ্বাসকষ্ট নিয়ে সম্প্রতি তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭১ বছর বয়সে চলে গেলেন এই শিল্পী।
বলিউডকে ‘এক্সপ্রেশন’ শিখিয়েছিলেন যে কোরিয়োগ্রাফার, তাঁর কেরিয়ার শুরু হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। দেশভাগের সময়ে সরোজের পরিবার পাকিস্তান থেকে চলে এসেছিল এ পারে। তখন তিনি সরোজ নন, নির্মলা। আড়াই-তিন বছর বয়স থেকেই দেওয়ালে ছায়া দেখে নাচ করত ছোট্ট নির্মলা। পরিবারে অনটন থাকায় খুব তাড়াতাড়ি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করে নির্মলা। দশ বছর বয়সে প্রথম বার সমবেত নৃত্যে সুযোগ, তা-ও মধুবালার নেপথ্যে, ‘হাওড়া ব্রিজ’ ছবির গান ‘আইয়ে মেহেরবাঁ’।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে তাঁর ‘মাস্টারজি’ বি সোহনলালের সঙ্গে বিয়ে হয় সরোজের। তত দিনে আর ‘গ্ৰুপ ডান্সার’ নয়, মাস্টারজির ডান হাত হয়ে উঠেছেন সরোজ। সোহনলাল ইউরোপ টুরে গিয়েছেন, রাজ কপূরের ছবিতে তাঁর জায়গায় নাচ কম্পোজ় করার ডাক পড়ল সরোজের। ‘নিগাহে মিলানে কো জি চাহতা হ্যায়’-এর স্টেপ সরোজকে পাশে বসিয়ে তুলে নিলেন নূতন। ১৯৭৪-এ ‘গীতা মেরা নাম’ ছবিতে কোরিয়োগ্রাফার হিসেবে প্রথম ব্রেক।
এক ঝলকে
• হাওয়া হাওয়াই (মিস্টার ইন্ডিয়া)
• এক দো তিন (তেজ়াব)
• মেরে হাতো মে নৌ নৌ চুড়িয়া (চাঁদনি)
• চোলি কে পিছে (খল নায়ক)
• চুরা কে দিল মেরা (ম্যায় খিলাড়ি তু আনাড়ি)
• ডোলা রে (দেবদাস)
আরও পড়ুন: ১৩ বছরে বিয়ে চল্লিশোর্ধ্ব প্রশিক্ষকের সঙ্গে, কৈশোরেই মাতৃত্ব, ঘুঙুরের শব্দে ঢেকেছিলেন জীবনের ক্ষত
আরও পড়ুন: কোন ভুলের মাশুল গুনলেন সুশান্ত? শেষ ইনস্টায় প্রশ্ন তুলেছিলেন সরোজও
তার পরে হেমা মালিনী, শ্রীদেবী এবং পরবর্তীকালে মাধুরী, করিশ্মা, ঐশ্বর্যা, করিনা দশকের পর দশক ধরে পর্দায় ঢেউ তুলেছেন সরোজ খানের ইশারায়। ‘ডোলা রে’, ‘ইয়ে ইশক’ কোরিয়োগ্রাফার হিসেবে জাতীয় সম্মান এনে দিয়েছিল তাঁকে। ‘এক-দো-তিন’ মাধুরীর পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে পাকাপাকি জায়গা করে দিয়েছিল যে সরোজকে, সেই শিল্পী পরবর্তীকালে অভিমান করেছিলেন তাঁর প্রিয় ছাত্রীর উপরেই। হাতে কাজ নেই শুনে সলমন খান এগিয়ে এসেছিলেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একসঙ্গে কাজ করার। তা আর সত্যি হল না!