ব্যস্ততা বেড়েছে আগের থেকে?
প্রিয়ঙ্কা: খুব। আগের থেকে অনেকটা। ২৮ জুলাই ‘যকের ধন’ রিলিজ করছে। তার পর অনিকেতদার সঙ্গে একটা ছবি করছি। কৌশিকদার ‘ছায়া ও ছবি’ও কমপ্লিট। পর পর বেশ কয়েকটা শর্ট ফিল্ম করলাম।
হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘আবার যকের ধন’ তো একটা জেনারেশনের কাছে ছেলেবেলার নস্টালজিয়া। শুটিং-এর আগে পড়ে নিয়েছিলেন?
প্রিয়ঙ্কা: না! পড়ব ভেবেছিলাম। হয়ে ওঠেনি। আর স্ক্রিপ্ট খুব ভাল ছিল।
আপনার চরিত্রটা কেমন?
প্রিয়ঙ্কা: আমার চরিত্রের নাম শর্মিষ্ঠা। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়। হঠাত্ করেই সে রাহুল আর পরমদা যে চরিত্রে অভিনয় করছে, তাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
শর্মিষ্ঠার মতো প্রিয়ঙ্কাও কি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়?
প্রিয়ঙ্কা: খুব একটা নয়। তবে, হলে মন্দ হয় না।
আরও পড়ুন, ‘মন এবং শরীর থেকে মেদ সরানোর চেষ্টা করেছি’
কী বলছেন? প্রেম, পালিয়ে বিয়ে, সন্তান, সেপারেশন, ডিভোর্স— এত কিছু ফেস করেছেন, এত কম বয়সে। সেটা অ্যাডভেঞ্চার নয়?
প্রিয়ঙ্কা: হা হা...। অ্যাডভেঞ্চারই বটে।
এখন তো আপনি ‘সিঙ্গল মাদার’, এনজয় করছেন?
প্রিয়ঙ্কা: অবশ্যই। কাজ, বাকি সময়টা সহজ। দারুণ একটা স্বাধীনতা এনজয় করছি।
আগে স্বাধীনতা ছিল না, বলছেন?
প্রিয়ঙ্কা: এটা ডিপেন্ড করে। এক এক বয়সে স্বাধীনতার মানেটা পাল্টে যায়। একটা সময় মনে হয়েছিল প্রেম করাটাই স্বাধীনতা। একটা সময় মনে হয়েছিল বাড়ি থেকে পালানোটা স্বাধীনতা...। তবে একটা রিলেশনে থাকলে উল্টো দিকের মানুষটার কিছু তো এক্সপেকটেশন থাকে। সেটা ইচ্ছে না করলেও কিছুটা মানিয়ে নিতে হত। আর যখন মনে হল আমার আর রাহুলের মধ্যে সেই স্পার্কটা কাজ করছে না, তখনই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এটাও স্বাধীনতা।
সিদ্ধান্তটা আপনার ছিল?
প্রিয়ঙ্কা: হ্যাঁ। আমার সিদ্ধান্ত। রাহুল আমাকে অনেক বার বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমার খুব জেদ। এই জেদটার জন্যই আমার সঙ্গে অনেক ভাল ঘটনা ঘটে। আবার অনেক খারাপও।
আরও পড়ুন, ‘ফড়িং’এর পর ‘ভালবাসার শহর’, ফের ছক্কা হাঁকালেন ইন্দ্রনীল
সম্পর্ক ভাঙার পিছনে অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেনের নাম কিন্তু বার বার উঠে এসেছে। সেটাই কি কারণ?
প্রিয়ঙ্কা: কোনও সম্পর্ক শুধুমাত্র একটা কারণে ভাঙে না। সন্দীপ্তার নাম উঠেছে। আমার দিক থেকেও কারও নাম উঠতে পারত। তাই ওটা কারণ নয়। রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কে অনেক খারাপ লাগা ছিল, অনেক ভাল লাগাও। রাহুল আর আমি দু’জনেই এখন ‘ব্লেম গেম’ খেলতে পারি। কিন্তু, সেটা কখনও করব না। ইটস্ টু পার্সোনাল। এমন কিছু রেকর্ডেড থাকুক আমরা চাই না, যেটা ১০ বছর পর দেখলে সহজের খারাপ লাগবে।
রাহুলকে মিস করেন?
প্রিয়ঙ্কা: রাহুলের সঙ্গে সম্পর্ক বা প্রেমটা আর মিস করি না।
কিন্তু আন্ডারস্ট্যান্ডিং তো রয়েছে আপনাদের।
প্রিয়ঙ্কা: হ্যাঁ, বন্ধুত্বটা আমরা কনটিনিউ করছি।
সহজের জন্য?
প্রিয়ঙ্কা: অবশ্যই। সহজ আছে বলে তো আরও বেশি করে।
আরও পড়ুন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই একে অন্যের পিঠ চুলকোচ্ছি
না হলে থাকত না বলছেন?
প্রিয়ঙ্কা: আমি জানি না। তবে আমাদের দু’জনের কাছেই ফার্স্ট প্রায়োরিটি সহজ।
কিন্তু, আপনাদের দু’জনেরই তো আবার সম্পর্ক হতে পারে। তখন?
প্রিয়ঙ্কা: সম্পর্ক তো হবেই। সেটাই স্বাভাবিক। আমি চাইব, আমার জীবনের নতুন মানুষের সঙ্গে সহজের আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা ভাল হোক।
ছেলের সঙ্গে আড্ডা।
নতুন মানুষ এসেছেন তা হলে?
প্রিয়ঙ্কা: এখনও না, বন্ধু রয়েছে অনেক। তবে এখনও প্রেমে পড়িনি কারও। যে কোনও সময়ই পড়তে পারি (হাসি)।
শর্ট লিস্ট করেছেন?
প্রিয়ঙ্কা: হা হা হা...। আসলে আমি খুব তাড়াতাড়ি খুব বেশি রকম দুর্বল হয়ে পড়ি। তাই এখন ভাবি, যদি আমার জীবন থেকে কারও চলে যাওয়ারই হয়, আজই যাক। আমি কম কষ্ট পাব।
আরও পড়ুন, ‘পোশাক কোনও কোনও ক্ষেত্রে উত্তেজনা তৈরি করে, এটা মেয়েরাও জানে’
রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কের হ্যাংওভার পরের সম্পর্কে কাজ করবে?
প্রিয়ঙ্কা: আগের উত্তরে সেটাই বোঝাতে চাইছিলাম। একটা ভয় হয়েছে এখন আমার। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ভয়। সেই হ্যাংওভারটা থাকবে।
স্টেটাস সিঙ্গল হওয়ার জন্য কি কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের এক পরিচালক হেনস্থা করেছিলেন?
প্রিয়ঙ্কা: আমি পরে খবর পেয়েছিলাম, ওই ধরনের আচরণ উনি অনেকের সঙ্গেই করেছেন। আর অনেকেই ভেবে নেন, সিঙ্গল মানেই ইজিলি অ্যাভেলেবল। সেটা তো নয়।
কোনও খারাপ লাগা রয়েছে আপনার?
প্রিয়ঙ্কা: একটা সময় অনেকে ভেবেছিলেন, যে কোনও ছবিতে আমি আর রাহুল একসঙ্গে কাজ করব। বাকি প্রোজেক্ট করব না। সেটা ঠিক নয়। ‘চিরদিনই...’র পর আমাদের দ্বিতীয় কাজটাই আলাদা আলাদা ছিল। একটা সময় লোকে ভাবত, আমরা পার্সোনাল লাইফ নিয়ে বেশি ব্যস্ত, নেশা করি, কাজ করি না। সেটাও ঠিক নয়। আমরা নেশা করতাম সেটা ঠিক। কিন্তু সেটাও বয়সের ব্যাপার ছিল। আর এমন নয় যে আমরা কাজ করতাম না। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে এমন কিছু রটেছিল। সেটা ভাবলে খারাপ লাগে।
(সহজ ফিরল স্কুল থেকে। ঘরে ঢুকেই মাকে জড়িয়ে ধরল। রাহুলও এলেন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। অগত্যা রেকর্ডার অফ...।)
ছবি: অনির্বাণ সাহা।