ক্লোয়ি ঝাও
গত বারের শ্রেষ্ঠ পরিচালক নাম ঘোষণা করলেন এ বারের বিজয়ীর। গত বছরের বিজয়ী পরিচালকের নাম বং জুন-হো, আর ২০২১-এ সেরা পরিচালকের জন্য অস্কার পেলেন ক্লোয়ি ঝাও। একজন কোরিয়ার, একজন চিনের। আলাদা ভেনুতে ভাগ করে অনুষ্ঠান হওয়ায়, একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হতে গিয়েও হল না। তবে ক্লোয়ি ঝাওয়ের সেরা পরিচালক হওয়া, এমন অনেক অপ্রাপ্তিই মিটিয়ে দিয়েছে।
‘নোম্যাডল্যান্ড’-এর জন্য সেরা পরিচালক হয়েছেন তিনি। এই প্রথম কোনও এশিয়ান মহিলার হাতে সেরা পরিচালকের অস্কার উঠল। অস্কারের ইতিহাসে ক্লোয়ি দ্বিতীয় মহিলা, যিনি এই স্বীকৃতি পেলেন। ১১ বছর আগে ‘হার্ট লকার’ ছবির জন্য ক্যাথরিন বিগেলো পেয়েছিলেন সেরা পরিচালকের সম্মান। এর আগে বাফটা, গোল্ডেন গ্লোবেও সেরা পরিচালক হয়েছেন ক্লোয়ি।
তাঁকে নিয়ে সিনে-দুনিয়া উচ্ছ্বসিত হলেও, অনেকে এর আড়ালে রাজনীতির রং খুঁজে পাচ্ছেন। আমেরিকা ও চিনের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েনের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, সে প্রশ্ন উঠছে। কারণ ক্লোয়ি জন্মসূত্রে চিনা। ১৫ বছর বয়সে পড়াশোনার সূত্রে ইংল্যান্ড চলে যান। পরে ভর্তি হন আমেরিকার কলেজে। তিনি আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট পরিচালক হিসেবেই পরিচিত। আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁর অস্কার বিজয় নিয়ে চিনের সোশ্যাল মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যম একেবারে নিশ্চুপ। চিনে ক্লোয়ির ছবি মুক্তিও পায় না। নিজের প্রথম ছবি ‘সংস মাই ব্রাদার্স টট মি’র রিলিজ়ের সময়ে এক সাক্ষাৎকারে, চিনে কমবয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন ক্লোয়ি। তবে এ দিনের অস্কার স্পিচে চিনের প্রসঙ্গ তোলেননি পরিচালক।
এক সময়ে অস্কারে শ্বেতাঙ্গদেরই প্রাধান্য ছিল। তা নিয়ে বহু বিতর্ক, আন্দোলন হয়েছে। সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। কিন্তু অস্কারের মতো ‘কুলীন’ মঞ্চে, এশীয়দের সম্মানিত করার উদাহরণ খুব বেশি নেই। গত বছর সেই ধারা ভেঙেছিল বং জুন-হোর ‘প্যারাসাইট’। এ বার ক্লোয়ির ‘নোম্যাডল্যান্ড’। অ্যাকাডেমির সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বোঝা যায়, আগের দুর্নাম ঘোচাতে তারা কতটা উদ্যোগী। বর্ণবিদ্বেষের বিরোধিতা, সমকামী আন্দোলন সমর্থন, সবেতেই অ্যাকাডেমি সরব। এশিয়ান ছবিকে স্বীকৃতি দেওয়াও সেই উদ্যোগেরই ফসল বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি এশিয়ার সিনে-মার্কেটে প্রভাব বিস্তারও একটা উদ্দেশ্য তো বটেই।