শ্রীলেখা ও তথাগত
নুসরত জাহান, যশ দাশগুপ্ত ও নিখিল জৈনের সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে ব্যস্ত রাজ্যের বেশির ভাগ মানুষ। অভিনেতা-সঞ্চালক মীর আফসার আলিও নুসরতকে খোঁটা দিতে ছাড়েননি। যদিও সমালোচনার ভিড়ের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছেন অনেক তারকাই। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অভিনেতা এবং পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের সাংসদ হোন বা না হোন, নুসরত মিথ্যে কথা বলে থাকলে, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই বলেছেন। তাই এক জন মহিলাকে নিয়ে কাঁটাছেড়া করা উচিত নয়। এই চর্চা এ বার বন্ধ হোক।’’ তথাগতের মতে, রাজনৈতিক লাভ খোঁজার জন্য বিরোধী দলের কোনও সদস্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। তাঁর কথায়, ‘‘এ রকম কাজ বিজেপি করে থাকে। কিন্তু বিজেপি ছা়ড়া অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থকরাও যদি তাই করেন, তবে তা ন্যক্কারজনক। তাঁরাও ক্রমশ বিজেপি হয়ে উঠবেন নিজের অজান্তে।’’ আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে নুসরত বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন ‘দেশের মাটি’-র ডোডো ওরফে তথাগত।
নুসরত জাহান বিবৃতি জারি করে বলেছিলেন, নিখিলের সঙ্গে তাঁর ‘বিয়ে’ অবৈধ এবং কার্যকরী নয়। তাঁরা সহবাসে ছিলেন। তার পরেই অভিনেত্রীকে নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয় নেটমাধ্যমে। এরই মাঝে রাজ্য রাজনীতিতেও নজরকাড়া পরিবর্তন ঘটে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন মুকুল রায়। নুসরত বিতর্ক এবং মুকুলের ঘটনাকে মিলিয়ে জনৈক নেটাগরিক একটি মিম শেয়ার করেন নেটমাধ্যমে। যেখানে লেখা, ‘বিজেপিতে আমি এতদিন যোগদান করিনি। বিজেপির সাথে লিভ-ইন এ ছিলাম। তাই বিজেপি ছাড়ার কোনো প্রশ্ন ওঠে না। ইতি মুকুল রায়।’ মুহূর্তের মধ্যে সেই মিম ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন নেটমাধ্যমে। বামপন্থী শ্রীলেখা মিত্রও সেই মিম ভাগ করে নিয়েছিলেন তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে। মুকুল রায়ের দলে ফেরা এবং নুসরতের লিভ-ইন-এর প্রসঙ্গকে পাশাপাশি রাখতে চাইলেন শ্রীলেখা। তখন অনেকে প্রশ্ন করেছিলেন, তবে কি অভিনেত্রীও নুসরতকে ট্রোল করার দলে যোগ দিলেন? সেই পোস্টেই তরজা শুরু হয়েছিল শ্রীলেখা এবং তথাগতের মধ্যে। মতবিরোধ হয় দু’জন শিল্পীর মধ্যে। তথাগত লেখেন, ‘নুসরত ভালো খারাপ যে রকমই মানুষ হোন না কেন তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করার অধিকার কারও নেই।’ তার পরে চলতে থাকে তথাগত-শ্রীলেখার তর্কবিতর্ক। আনন্দবাজার ডিজিটালকে শ্রীলেখা বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি, এক জন জনপ্রতিনিধি যদি অসততার আশ্রয় নেন, তা হলে সেটা অনুচিত। সেই প্রসঙ্গে আমার পোস্ট। নুসরতের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি ভাবিত নই। কিন্তু এখন তাঁকে আমি কেবল এক জন অভিনেত্রী হিসেবে দেখতে পারছি না। তিনি এক জন সাংসদ বটে।’’
তথাগতর মতে, ‘‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে নুসরত শ্রীলেখাদির উত্তরসুরী। কী ভাবে আর এক জন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বললেন ভেবে পেলাম না। সেখানে শ্রীলেখাদির মতো উদার মনের মানুষের থেকে এটা আশা করিনি আমি।’’ এমনিতেই অভিনয় করাকে সমাজ ভাল চোখে দেখে না বলেই ধারণা অভিনেতা-পরিচালকের। তার উপরে একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে সমাজের ধারণা বদলানো আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলেই মনে করেন তথাগত।