‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-র টিজার ইউটিউবে রিলিজ হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলের জন্য তৈরি সিরিজ ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-র টিজার ইউটিউবে রিলিজ হয়েছে। আর তার পরেই বাঙালি নেটাগরিকদের একটা অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কিশোরপাঠ্য গোয়েন্দা সিরিজ ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’। বাবলু, বিলু, ভোম্বল নামে তিন কিশোর ও বাচ্চু ও বিচ্ছু নামে দুই কিশোরী এবং তৎসহ তাদের ল্যাংবোট দেশি কুকুর পঞ্চুকে নিয়ে এই সিরিজ।
এরা সকলেই টিন এজার। কাহিনি কাঠামোয় ইংরেজ সাহিত্যিক এনিড ব্লাইটনের ‘দ্য ফেমাস ফাইভ’ সিরিজের আদল বেশ স্পষ্ট। পাঁচ কিশোর-কিশোরীর এই অ্যাডভেঞ্চার কাম গোয়েন্দা কাহিনির সিরিজ ১৯৮০-র দশকে খুবই জনপ্রিয় হয়। পরে এই সিরিজকে অ্যানিমেশনে দেখা গিয়েছে। এ বার লাইভ অ্যাকশনের বন্দোবস্ত হতেই নেটাগরিকদের একাংশের খেপে যাওয়ার পিছনের কারণটা কিন্তু বেশ অদ্ভুত কিসিমের।
রিলিজ হওয়া টিজারটিতে দেখা যায়, পাণ্ডব গোয়েন্দাদের দলপতি বাবলুর জন্মদিন পালনের তোড়জোড় চলছে কোনও এক বাগানে। সেখানে বাচ্চু নামের কিশোরীটি বাবলুর দিকে ক্রাশ-পূর্ণ নয়ানে তাকাচ্ছে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে সাম্প্রতিক কালের বাংলা ছবি ‘পরিণীতা’-র হিট গান ‘মন দিতে চাই’ বাজছে। এহেন দৃশ্যেই নেটাগরিকদের ওই অংশের আপত্তি। তাঁদের বক্তব্য, লেখক ষষ্ঠীপদবাবু তাঁর সিরিজের কোথাও এমন ক্রাশের আভাসটুকুও দেননি। এখানে এহেন ইঙ্গিত কৈশোরকে কলুষিত করছে। অবিলম্বে এই ‘বিপর্যয়’-এর বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা প্রয়োজন— এই মর্মে ফেসবুকে তাঁরা প্রায় আন্দোলনের ডাক দিয়ে বসলেন। সেই চ্যানেলের বিরুদ্ধে ‘সংবেদী’ বঙ্গজন আক্ষরিক অর্থেই গর্জে উঠলেন। কৈশোর কলুষিত করার অজুহাতে প্রায় খাপ পঞ্চায়েত বসে গেল। বিচার চলতে লাগল ওই চ্যানেল ও সিরিজ-পরিচালকের।
এই কৈশোর কলুষিতকরণের অভিযোগের ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং। একটি কিশোরী এক কিশোরের উদ্দেশে আড়নয়ান হানলেই আর ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘মন দিতে চাই’ বাজলেই কৈশোর কলুষিত? অথচ ওই গানটি যখন ‘পরিণীতা’ ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে, তা এক স্কুলপড়ুয়া মেয়ের লিপেই ছিল। তখন তো এমন কোনও অভিযোগ ওঠেনি! আসলে ব্যাপারটা বোধ হয় স্ক্রিন-কৈশোর নিয়ে নয়, বিষয়টার শিকড় আরও খানিকটা গভীরে। বস্তুত, যাঁরা এই নৈতিক পুলিশবৃত্তি চালাচ্ছেন, তাঁরা কৈশোরে ছিলেন ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-র পাঠক। ১৯৮০-র দশকে পড়ে আসা সেই কাহিনিমালার চিত্রায়ন থেকে তাঁরা তাঁদের কৈশোরেই ফিরে যেতে চান। কিন্তু প্রশ্ন এই, ১৯৮০-র দশকেও কি বাঙালির কৈশোর ‘সং অব ইনোসেন্স’ ছিল? আর যত কলুষতার উৎস কি সেই আড়াই অক্ষরের শব্দটি, যাকে আমরা ‘প্রেম’ বলে জানি?
আরও পড়ুন: বিরাট প্রকাশ্যে আনলেন অনুষ্কার বেবি বাম্পের ছবি
টিভি চ্যানেলের সামনে আবার অন্য সমস্যা। তাঁদের এমন কিছু জিনিস পরিবেশন করতে হয় যা বাড়ির বেশির ভাগ সদস্যকে টিভির সামনে বসিয়ে রাখতে পারবে। তাই, শিশুতোষ সিরিয়াল পরিবেশনার চাইতে ইয়ং-অ্যাডাল্ট কিছু দর্শকের পাতে তোলাই টিআরপি বাড়ানোর সহজতম পন্থা। ছেলে-ভুলনো কাহিনিতে যদি সেই দিক ভেবে প্রেমের পাঁচফোড়ন পড়ে, তা হলে দোষ কোথায়? যত দূর মনে পড়ে, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ সিরিজ যখন প্রকাশিত হত, সেই ১৯৮০-র দশকে, সেই সময় বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিসরে কিশোর-কিশোরীদের মেলামেশা তেমন অবাধ ছিল না। ‘প্রেম’ শব্দটাই তখন একটা ট্যাবু হিসেবে গণ্য হত। বাবা-খুড়া-জ্যাঠামহাশয়ের সামনে তো বটেই, জয়েন্টে র্যাঙ্ক করা পিসতুতো দাদা কি চশমা-শোভন গেরামভারী মামাতো দিদির সামনেও সেই শব্দ নিয়ে স্পিকটি নট। কিশোর সাহিত্য বলে যে বস্তু লভ্য ছিল, সেটাও প্রেমহীন এক ঊষর স্পেস। ১৯৮০-র দশকে ‘ইয়ং অ্যাডাল্ট’ শব্দটাই আমবাঙালির পরিসরে অচেনা ছিল। ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছেলেমেয়েরা এনিড ব্লাইটন পড়ত। মেয়েরা খানিক এগিয়ে মিলস অ্যান্ড বুন প্রকাশিত রোম্যান্টিক নভেল। অবশ্য এই টিন এজেই বাঙালি বইপোকারা গোগ্রাসে শেষ করে ফেলত ব্যোমকেশ বা শরদিন্দুর ঐতিহাসিক উপন্যাস। কৈশোরে বঙ্কিমে মজেছেন, এমন উদাহরণও অলভ্য ছিল না। বলাই বাহুল্য, ব্যোমকেশ কাহিনিতে নিহিত ফ্রয়েডীয় মনস্তাত্ত্বিক সুবাস কৈশোরকে উন্মন করে তুলতো, ১৫-১৮ বছরের মধ্যে যাঁরা ‘বহ্নি পতঙ্গ’ বা ‘আদিম রিপু’ অথবা ‘রক্তের দাগ’ পড়েছেন, তাঁরা হাড়ে হাড়ে জানেন তার স্বাদ। ১৯৮০-র দশকে শরদিন্দু পড়ার জন্য কিন্তু আবডাল দরকার পড়ত না। বড়দের সামনেই সেই বই পড়া যেত।
কিন্তু মনে রাখা দরকার, বাংলা সাহিত্যের সমসাময়িক পরিসরটা আদৌ সেই রকম ছিল না। সেই সময়ে কিশোর সাহিত্যের অন্যতম প্রধান লেখক সত্যজিৎ রায়ের লেখার জগৎটাই ছিল একপেশে। পুরুষ অধ্যুষিত। আরও বিশদে বললে, ব্যাচেলর পুরুষ অধ্যুষিত। একই কথা বলা যায় সেই সময়ে বাংলা সাময়িকপত্রে প্রকাশিত জনপ্রিয় কমিকস টিনটিনের ক্ষেত্রেও। পুরুষ অধ্যুষিত সেই জগতে প্রেম দূর-অস্ত, মেয়ে নামক জীবটিই দুর্লভ ছিল। এই সব সাহিত্যের মধ্যে বাস করা কিশোরদের কাছে কিশোরীরা ছিল একান্ত রহস্যের খাসমহল-শিসমহল। কোচিং ক্লাসে সম্ভ্রম উদ্রেককারী দূরত্বে আবস্থান করে ঘোরতর শূন্যতাবোধ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকত না কৈশোরের ঝুলিতে।
১৯৮০-র দশকে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে একটা বিশেষ প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এই সময়ে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্য খুব বেশি মাত্রায় অ্যাডভেঞ্চার ও রহস্য কাহিনি নির্ভর হয়ে দাঁড়ায়। এর আগে যে এই প্রবণতা ছিল না, এমন নয়। ঔপনিবেশিক শাসনের সময় থেকেই বাঙালি কিশোর বা বালকের অ্যাডভেঞ্চার ছিল এই প্রকার সাহিত্যের এক বিশেষ প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা দেখিয়ে থাকেন, এর পিছনে ঔপনিবেশিকতার পৌরুষমণ্ডিত সংস্কৃতির সমান্তরাল এক পৌরুষ দেখানোর চেষ্টা বিদ্যমান ছিল। বলাই বাহুল্য, এই সব কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র হত পুরুষ। ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ বা ‘ভোম্বল সর্দার’-এর থিমে কোনও কিশোরীকে কল্পনাও করা যেত না। তবে এই সময়ে মধুসূদন মজুমদার বা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মতো লেখকের পাশাপাশি পারিবারিক কাহিনি অথবা হাসির গল্প লিখেছেন আশাপূর্ণা দেবী। শিবরাম চক্রবর্তী বা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ও লিখেছেন। তবে মনে রাখা দরকার, এই সব লেখালেখির মধ্যেও এক রকম পুরুষ-কেন্দ্রিকতা বজায় ছিল। যেখানে নারী চরিত্রই জায়গা পায় না, সেখানে কৈশোরের বর্ণনা যে একতরফা, তা নতুন করে বলার নয়। লীলা মজুমদারের রচনায় ‘হলদে পাখির পালক’-এর মতো রচনা অবশ্য এর মধ্যেও ছিল, যেখানে এই ছকের বাইরে ভাবনার উড়ান ছিল। কিন্তু সে রকম সাহিত্যের সংখ্যা একেবারেই হাতে গোনা। কিন্তু, ১৯৮০-র দশক থেকে বাকি পরিসর লুপ্ত হতে শুরু করে। লক্ষণীয় ভাবে কিশোর সাহিত্যে হাসির গল্প লেখাও কমে। প্রায় পুরোটা জুড়েই বিরাজ করতে থাকে রহস্য কাহিনি অথবা অ্যাডভেঞ্চার, কদাচিৎ ভূতের গল্প।
এই সব অ্যাডভেঞ্চার বা রহস্য কাহিনিতে মূল চরিত্র পুরুষ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবু, সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা-শঙ্কু-তারিণীখুড়ো, সমরেশ বসুর গোগোল, বুদ্ধদেব গুহর ঋজুদা থেকে শুরু করে সমরেশ মজুমদারের অর্জুন— এরা সকলেই পুরুষ। শুধু পুরুষ নয়, এরা আবার ব্যাচেলরও। অ্যাডভেঞ্চার বা রহস্য আবর্তিত হতে থাকে কোনও মূল্যবান প্রত্নবস্তু চুরি বা এমন কোনও বিষয়কে ঘিরে যেখানে যৌনতা দূর-অস্ত, নর-নারীর সম্পর্কগত জটিলতাও অনুপস্থিত। প্রায় প্রতিটি ফেলুদা-কাহিনিতেই এই প্রত্নবস্তু চুরির ব্যাপারটা ঘুরে ফিরে আসে। প্রায় কোনও কাহিনিতেই নারী চরিত্র সামনে আসে না। ‘অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য’র কেন্দ্রে এক নারী থাকলেও সে নিতান্তই বালিকা। ফলে বাস্তবের কৈশোরে যে ‘ক্রাশ’-ঘটিত বর্ণালী থাকতে বাধ্য, তা ফিকশনাল কৈশোরে একেবারেই ছিল না। এর মধ্যে অবশ্য সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ব্যতিক্রম। তাঁর ‘রুকু সুকু’ সিরিজে কিশোরী এসেছে, তাদের প্রতি কিশোরের ভাললাগাও এসেছে সাবলীল ভাবে। কিন্তু তার সংখ্যা একান্ত ভাবেই কম। বুদ্ধদেব গুহর ‘ঋভুর শ্রাবণ’-এও এই বর্ণালী আছে। কিন্তু সে-ও তো সেই হাতে গোনার মধ্যেই পড়ে।
এর মানে এই নয় যে, ইয়ং অ্যাডাল্ট সাহিত্য মাত্রেই তাতে পুরুষ ও নারীর সম্পর্ককে প্রাধান্য দিতে হবে। ভাবনাগত জটিলতা বা বহুস্তরীয় বিষয়ের উপস্থাপনও এমন সাহিত্য দাবি করে। সাম্প্রতিক সময়ে স্প্যানিশ লেখক কার্লোস রুইজ জাফোনের একাধিক ইয়ং অ্যাডাল্ট উপন্যাসে এই বহুস্তরীয় বিষয়ের অবতারণা দেখা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে হ্যারি পটার সিরিজও স্মর্তব্য। কিন্তু বাংলা সাহিত্য এই ধরনের উপস্থাপনা থেকে বহু দূরে। ‘হলদে পাখির পালক’-এর মতো বহুমাত্রিক লেখার সংখ্যা একেবারেই কম, এটা মনে রাখা দরকার।
আরও পড়ুন: রাজনীতিতে এলে ভালই করবেন সৌরভ, বললেন দেবশ্রী রায়
এই পরিসরেই প্রকাশিত হত ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’। লক্ষণীয় এটাই যে, সেই সিরিজে তিনটি কিশোরের সঙ্গে দু’টি কিশোরীও ছিল। এর আগে নলিনী দাশের ‘গণ্ডালু’ সিরিজে চার তরুণীর গোয়েন্দাগিরি দেখা গিয়েছে। ফলে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ একমাত্র পরিসর ছিল না, যেখানে ছেলেদের পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারে সামিল হয়েছে মেয়েরাও। কাকাবাবু বা ঋজুদা সিরিজে কিশোরী অ্যাডভেঞ্চারিণীর দেখা মেলে অনেক পরে। তবে এই সব কাহিনি পড়তে বসলে বোঝা যায়, মেয়েরা সেখানে এমন ভাবে উপস্থাপিত যে, তার বদলে কোনও পুরুষ চরিত্র থাকলেও কিছু এসে যেত না। আর এই সব কাহিনি ছিল একেবারেই লিনিয়ার ধাঁচের। রহস্যের সমাধান বা অ্যাডভেঞ্চারের অতিরিক্ত তাতে কিছু থাকত না। ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-ও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বাচ্চু বা বিচ্ছুকে সেখানে এমন কোনও ভূমিকায় দেখা যায়নি, যা বাবলু, বিলু বা ভোম্বলের থেকে লিঙ্গগত ভাবে আলাদা। না, সেখানে কোনও ‘ক্রাশ’ ছিল না। থাকার কথাও পাঠকরা ভাবেননি। পাঠকদের কৈশোরে ক্রাশ থাকলেও, সাহিত্যে তার প্রতিফলন পড়েনি বললেই চলে।
এখন, যখন ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-জাতীয় সাহিত্য পর্দায়, তখন তার মধ্যে ক্রাশ বা ওই জাতীয় সম্পর্কঘটিত জটিলতা সেই দর্শকরাই দেখতে চাইছেন না, যাঁরা কৈশোরে এই সিরিজের পাঠক ছিলেন। তাঁদের কাছে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’-কে চাক্ষুষ করার মানে কৈশোরে ফিরে যাওয়া। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, কৈশোরে ভাল লাগা বহু লেখার কাছেই আমরা প্রাপ্তবয়সে ফিরে যাই হারিয়ে যাওয়া সময়ের পুনরুদ্ধারের আশায়। আসলে হয়তো আমরা ফিরে যেতে পারি না, আমরা কৈশোরের পুনর্নির্মাণ করি। যে নির্মাণে আমরা কৈশোরকে এক ‘অমল গানের বই’ হিসেবেই দেখতে চাই। তাতে সম্পর্কগত জটিলতা বা যৌনতার ইঙ্গিত মাত্রের আমদানি আমাদের কাছে কলুষ বলে মনে হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও কি অস্বীকার করতে পারি যে, আমাদের কারওর কৈশোরই সে অর্থে ‘নিষ্কলুষ’ কামগন্ধহীন ছিল না? তেমন সাহিত্য আমরা, বাঙালি পাঠকরা সেই সময়ে পাইনি, তাই আমাদের কাছে কৈশোরের পুনর্নির্মাণের অর্থ সেই সব লেখার কাছেই ফিরে যাওয়া, তারা সেই সময় যে অবস্থায় ছিল। তার সামান্যতম বিচ্যুতি আমাদের কাছে বিসদৃশ ঠেকে। কিন্তু মুশকিল এখানেই যে বাংলা কিশোর সাহিত্যে ইয়ং-অ্যাডাল্ট জ্যঁরকে খুঁজে পাওয়া এক দুঃসাধ্য প্রকল্প। তাই এত ক্যাঁওম্যাও, ‘গেল-গেল’ রব। পুরো ব্যাপারটার দিকে তাকালে বোধ হতেই পারে, বাঙালির অবস্থা ‘রেখেছ ইয়ং করে, অ্যাডাল্ট করোনি’-গোছের। তার এক চুল কম বা বেশি নয়।
দেখুন সেই টিজার: