নীতু এবং ঋষি।
দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গত বছর এই দিনে থেমে গিয়েছিল ঋষি কপূরের পথ চলা। ইরফানের খানের চলে যাওয়ার এক দিন পরেই সিনেমা হারিয়েছিল আরও এক নক্ষত্রকে। তবু ঋষির রেখে যাওয়া শূন্যতাকেই প্রাণপণে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইছেন তাঁর কাছের মানুষরা।
মন ভাল নেই নীতুর। এই দিনেই তাঁর ‘বব’ তাঁকে একা রেখে পাড়ি দিয়েছিলেন না ফেরার দেশে। কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে! ‘জহরিলা ইনসান’-এর শ্যুটিংয়ের সময়ের ভাল লাগা যে ভালবাসার আকার নেবে, তা বোধ হয় তখন নিজেও বোঝেননি নীতু। সেই সময়কার সফল নায়িকা ঋষিকে বিয়ে করে সাজানো কেরিয়ার ছেড়ে মনোযোগী হয়েছিলেন ঘরকন্নায়। জীবনের সব চড়াই-উৎরাইয়ে পাশে ছিলেন অভিনেতার। স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের আঁচ এসে লাগতে দেননি পরিবার এবং সন্তানদের রসায়নে। তবে আজ ঋষিকে সামলানোর পালা নেই, সুযোগ নেই তাঁর সঙ্গে একান্তে বসে কাটিয়ে আসা দিন ফিরে দেখার। ইনস্টাগ্রামের দেওয়ালেও নীতুর আফসোস, ‘গত বছরটা প্রত্যেকের জন্যই দুঃখ এবং হতাশার ছিল। তবে আমাদের কাছে একটু বেশি, কারণ আমরা তোমাকে হারিয়েছি’। লেখার সঙ্গেই ভেসে উঠেছে ঋষি এবং নীতুর সাদা-কালো ছবি। দেখে মনে হচ্ছে, স্ত্রীকে কিছু বলার সময়ই লেন্সবন্দি হয়েছিলেন অভিনেতা। এখন আর কথা নেই। রয়েছে স্মৃতি। নীতু লিখেছেন, ‘এমন একটাও দিন যায় না, যখন তোমার কথা আলোচনা বা ভাবা হয় না। কারণ, তুমি আমাদের অস্তিত্বেরই একটা অংশ’। ঋষির উপদেশ, তাঁর হাসিঠাট্টার স্মৃতি নিয়েই দিনযাপন নীতুর। তাঁর কথায়, ‘ঠোঁটে হাসি রেখে সারাটা বছর ওকে আমরা উদযাপন করেছি। ও সব সময় আমাদের মনে রয়েছে। ওকে ছাড়া কোনও কিছুই এক রকম নেই। তবুও জীবন থেমে থাকে না’।
মেয়ে রিধিমারও মন ভিজেছে নস্টালজিয়ায়। সেই আঁচ এসে পড়েছে ইনস্টাগ্রামেও। বাবার সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। এক দিকে দেখা যাচ্ছে, ঋষির কোলে ছোট্ট রিধিমা। অন্য দিকে, পরিণত রিধিমা বাবার বুকে মাথা রেখে তাকিয়ে ক্যামেরার দিকে। এই ছবির সঙ্গেই তিনি লিখেছেন, ‘যদি এক বার তোমার মুখে আমার মুশক নামটা শুনতে পেতাম’।
নেটমাধ্যমে নেই ঋষির পুত্র রণবীর কপূর। তাঁর মনের ভাবনাগুলো তাই ছবি হয়ে ভেসে ওঠে না ইনস্টাগ্রাম বা টুইটারের দেওয়ালে। তবে আজকের দিনে যে বাবাকে মনে করে তাঁরও মন ভারী, সে কথা বলাই বাহুল্য।