রাষ্ট্রপতি সকলকে পুরস্কার দিতে পারবেন না শুনে এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন প্রায় ৬৮ জন শিল্পী-কলাকুশলী। বাংলার পুরস্কারজয়ীদের মধ্যে সেরা অভিনেতা ঋদ্ধি সেন ছাড়া আর কেউই পুরস্কার নেননি।
শিল্পীদের বক্তব্য, ২ মে দিল্লিতে পৌঁছে তাঁরা জােনন, রামনাথ কোবিন্দ নিজে ১১ জনের বেশি কারও হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার সময় পাবেন না। এতেই ক্ষুব্ধ হন তাঁরা। তার মধ্যে রয়েছেন বাঙালি পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও অতনু ঘোষও।
কৌশিকের ‘নগরকীর্তন’ এ বছর চারটে জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছে। এই ছবির জন্যই পুরস্কার পেয়েছেন ঋদ্ধি। এ ছাড়া ছবিটি শ্রেষ্ঠ রূপসজ্জা (রাম রজক), শ্রেষ্ঠ পোশাক পরিকল্পনা (গোবিন্দ মণ্ডল) এবং জুরির বিশেষ পুরস্কার জিতেছে। ঋদ্ধি ছাড়া কেউই এ দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। কৌশিক বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় পুরস্কার রাষ্ট্রপতিরই দেওয়ার কথা। বিজ্ঞপ্তিতেও তা-ই ছিল। রাষ্ট্রপতি অসুস্থ থাকলে পুরস্কার দেন উপরাষ্ট্রপতি। যিনি পুরস্কার দেবেন, তাঁর হাতে যদি সময় না থাকে সেটা শিল্পীদের পক্ষে অসম্মানের।’’
এ বছর শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবির পুরস্কার পেয়েছে অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘ময়ূরাক্ষী’। রাষ্ট্রপতির পুরস্কার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অতনু বললেন, ‘‘আমন্ত্রণপত্রে লেখা আছে যে, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার দেবেন। তার অন্যথা হলে ব্যাপারটা বিভাজন হয়ে দাঁড়ায়। এই বৈষম্যের প্রতিবাদ করেছি বলেই অনুষ্ঠানে যোগ দিইনি।’’
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিলেও বিভাজনের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেননি ঋদ্ধি সেনও। বললেন, ‘‘খুবই অনুচিত হল এটা। তবে পুরস্কারগুলো তো ঠিক করেন জুরিরা, রাষ্ট্রপতি বা মন্ত্রীরা নন। ফলে কার হাত থেকে পেলাম, সেটা মনে হয় না অতটাও বিবেচ্য।’’
কলকাতায় চিত্রনির্দেশক গৌতম ঘোষ অবশ্য মনে করালেন, ‘‘এ রকম অতীতেও ঘটেছে। এক বার আমরা রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিলেও অন্যরা মন্ত্রীদের থেকে পুরস্কার নিয়েছিলেন। কিন্তু এটা বাঞ্ছনীয় নয়।’’ গৌতম যোগ করছেন, পুরস্কারটা কিন্তু এখন আর রাষ্ট্রপতির পুরস্কার নেই। স্বর্ণকমল, রজতকমল নাম হয়েছে এগুলোর। তবে যেহেতু সর্বোচ্চ পুরস্কার, তাই রাষ্ট্রপতি এটুকু করতেই পারতেন।’’ প্রবীণ পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কথায়, কেন এমন হল, তার ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। যেটা কিন্তু এখনও কেউই পাননি।