নারায়ণী
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই বললেন, ‘‘আমার জন্ম কিন্তু মুম্বইয়ে। উইকিতে ভুল লেখা আছে।’’ কোনও তথ্যের জন্য উইকিপিডিয়া বা ইন্টারনেটের উপর ভরসা করার অর্থ হয় না, সেটা জানা। তা বলে নেটে নারায়ণী শাস্ত্রী সম্পর্কে ঘুরতে থাকা গসিপগুলো নিশ্চয়ই সব ভুল নয়? ‘‘না, না, ধোঁয়ার পিছনে আগুন তো থাকেই,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন টিভির জনপ্রিয় তারকা।
২০০০ সালে ‘কহানি সাত ফেরো কি’ ধারাবাহিক দিয়ে কেরিয়ার শুরু। তার পর ‘কিউ কি সাঁস ভি...’, ‘কুসুম’, ‘পিয়া কা ঘর’ একে একে সব জনপ্রিয় ধারাবাহিকের সঙ্গে নিজের নাম জুড়ে ফেলেছেন নারায়ণী। নতুন ধারাবাহিক ‘রিস্তো কা চক্রব্যূহ’তে তিনি আবার মায়ের চরিত্রে। মাঝ তিরিশেই মায়ের চরিত্র রিস্কি হয়ে গেল না? উত্তর দিতে এক মিনিটও সময় নিলেন না অভিনেত্রী। ‘‘অভিনয়ের আবার বয়স কী? অভিনয় তো অভিনয়। মায়ের চরিত্র করি কি বউয়ের চরিত্র, অভিনয়টা অভিনয়ই। আমরা তো এক-একটা চরিত্র প্লে করি। চরিত্রের বয়স বেড়ে গেলেও আমার যায় আসে না।’’
অভিনয়কে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কারণ থিয়েটার। পুণের সিমবায়োসিস ল কলেজে পড়ার সময়ই যুক্ত ছিলেন থিয়েটারের সঙ্গে। ‘‘ওটা ভিতের কাজ করেছিল। অনেকে জিজ্ঞেস করত, আমি থিয়েটারে অভিনয় করার পর কী করে রংচং মেখে টিভির কাজ করছি? আমার কিন্তু তেমন মনে হয়নি।’’ তাই মায়ের চরিত্রের অফার পেলেও এতটুকু ভেবে দেখেননি। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছেন।
ধারাবাহিকে এত সফল হলেও ছবির কাজ কিন্তু মোটে তিনটে। প্রশ্নটাই করতে দিলেন না নারায়ণী। ‘‘প্রতিভা দেখাতে সিনেমা করতে হবে নাকি? আমার কখনও মনে হয়নি সিনেমাই মোক্ষ। ধারাবাহিকে ভাল করলেও তো সেটা ভাল। অনেকে হয়তো ছোট পরদা বলে বিষয়টাকে ছোট ভাবেন। মনে রাখবেন, ছোট পরদা বড় পরদার বিভাজন অনেক দিন মুছে গিয়েছে। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম... এগুলো দেখুন না। ‘গেম অব থ্রোনস’ তো ছোট পরদার কনটেন্ট। তবু জনপ্রিয়তার দিক থেকে অনেক ছবিকে পিছনে
ফেলে দেবে।’’
কিন্তু ভারতীয় টেলিভিশন কি আর অতটা পরিণত? প্রশ্নটা বুঝে হেসে ফেললেন নারায়ণী। ‘‘আমার ওই ‘মানুষ মাছি হয়ে যাওয়া’র কমেন্ট নিয়ে বলছেন তো? কিছু কিছু আজগুবি কনটেন্ট আছে মানছি। তবে আমার মনে হয় ভারতীয় টেলিভিশন অনেক এগিয়ে। ‘গেম অব থ্রোনস’ যেমন এখন মহিলাপ্রধান হয়ে উঠছে, আমাদের ধারাবাহিক কিন্তু অনেক বছর ধরেই মহিলাপ্রধান। আমরাই তো তা হলে এগিয়ে।’’
তাঁর দাবি মতো ভারতীয় টেলিভিশনের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও সমাজের নিয়মনীতির চেয়ে এগিয়ে। সহ-অভিনেতা গৌরব চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্ক যেমন কোনও দিন লুকিয়ে রাখেননি। তেমনই নিজের বিয়েটাই আদ্যন্ত চেপে ছিলেন বেশ কয়েক বছর। আপনার কি ইন্ডাস্ট্রিতে তেমন কোনও বন্ধু নেই? না হলে স্টিভেন গ্রাভারের সঙ্গে তাঁর বিয়ের এ রকম মুচমুচে খবর ফাঁস হতে এত দিন লাগে? ‘‘বরং বলুন, আমার খুব ভাল বন্ধু আছে ইন্ডাস্ট্রিতে। যারা এমন খবরও ফাঁস করে দেয়নি।’’ তবু বন্ধুদের কোনও নাম বললেন না নারায়ণী।
শোনা যায়, ধারাবাহিকের ব্যস্ত শিডিউলে অভিনেতাদের শ্বাস নেওয়ার সময় থাকে না। বাড়ি সামলানোর ভার কি বরের উপর? ‘‘কেন এই তো তিনটে কুকুর, চারটে বিড়াল নিয়ে দিব্যি সংসার সামলাচ্ছি। এ বার বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করবেন না প্লিজ,’’ হাসতে হাসতে বললেন নারায়ণী শাস্ত্রী।