ইন্দ্রাশিস আচার্য।
ফের বঙ্গে নারদ তদন্ত। প্রথম সারির ৪ নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই নেটমাধ্যমে নিজের মত জানাচ্ছেন। তাঁদেরই এক জন পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য। সোমবার তিনিও একটি পোস্ট ভাগ করে নিয়েছেন। পোস্টের শুরুতেই ইন্দ্রাশিসের আক্ষেপ, ‘আমরা যে কী পরিমাণ বোকা তার তল খুঁজে পাওয়া যায় না! আমরা যে বোকা সেটা বোঝার বুদ্ধিটুকুও নেই’। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি বিশ্বকবির গানের কয়েকটি পংক্তি তুলে ধরেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘তিনি যেমনি বাজান ভেরী মোদের তেমনি নাচের ভঙ্গি/ এই জন্ম-মরণ-খেলায় মোরা মিলি তাঁরি মেলায়/ এই দুঃখসুখের জীবন মোদের তাঁরি খেলার অঙ্গী’। পরিচালকের মতে, লাইনগুলো কেমন যেন অন্য রকম লাগে!
কেন বললেন এ কথা? জানতে আনন্দবাজার ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল পরিচালকের সঙ্গে। ইন্দ্রাশিসের স্পষ্ট জবাব, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে এই পোস্ট তাঁর। প্রশ্নও তুলেছেন, ‘‘অতিমারির সময়ে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা কি কাম্য?’’ পরিচালকের কথায়, করোনা ভাইরাসের শিকল ভাঙতে লকডাউন ডাকা হয়েছে। নারদ তদন্তের পুর্ননির্মাণ, গ্রেফতার কাণ্ডে সেই লকডাউন ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। তাঁর চোখে এই বিশৃঙ্খলা অতিমারি কালে অনভিপ্রেত। ইন্দ্রাশিসের ভয়, এক সঙ্গে এত মানুষ পথে। এতে সংক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার নেবে। একই সঙ্গে তিনি বিস্ফোরক, ‘‘আমরা আসলে নিজেরাই বুঝতে পারছি না, কী হতে চলেছে। কোথায়, কে, কী পরিকল্পনা করছে।’’
অনেকেই বলছেন, বিষয়টি হয়ত পূর্বপরিকল্পিত। ইন্দ্রাশিসও কি তেমনটাই ভাবছেন? সাফ জবাব তাঁর, ‘‘আমি এ রকম কিছুই ভাবছি না।’’ তবে এত পুরনো মামলা অতিমারির সময়ে নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় তিনি বিস্মিত। ইন্দ্রাশিসের এই পোস্টে জনৈক নেটাগরিকের মন্তব্য, ‘রাষ্ট্রপতি শাসন প্রয়োগ করার লক্ষ্যে সমগ্র চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে’। পরিচালক কি এই মত সমর্থন করেন? ‘পিউপা’খ্যাত পরিচালকের দাবি, তিনি রাজনীতি ততটাও ভাল বোঝেন না। তাঁর সমস্ত আগ্রহ চলচ্চিত্র নিয়ে। পাশাপাশি এ কথাও বলেছেন, ‘‘পুনর্নির্বাচিত হয়ে শাসকদল ফিরেছে। সরকার তার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। অতিমারি রুখতে লকডাউন ডেকেছে। তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা আদতে সরকারের কাজ পণ্ড করে দেওয়া।’’
একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, এতে রাজনীতিবিদদের কতটা ফায়দা হচ্ছে তাঁর জানা নেই। তবে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সেটা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। কারণ, লকডাউন ব্যর্থ মানেই খেটে খাওয়া মানুষদের কাজের সময় নষ্ট হয়ে যাওয়া। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।