Entertainment News

‘মান্টো’র প্রচারে নন্দিতা এবার ‘কান’এ

ভদ্রলোকের ছিল বহুমুখী প্রতিভা। একাধারে তিনি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, স্ক্রিপ্ট রাইটার। অন্য দিকে, সেই তিনিই আবার নামী শিক্ষক। সাদাত হাসান মান্টো। তাঁকে নিয়েই ছবি বানিয়েছেন নন্দিতা দাস। সে ছবির নামও ‘মান্টো’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ১১:০৭
Share:

ভদ্রলোকের ছিল বহুমুখী প্রতিভা। একাধারে তিনি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, স্ক্রিপ্ট রাইটার। অন্য দিকে, সেই তিনিই আবার নামী শিক্ষক। সাদাত হাসান মান্টো। তাঁকে নিয়েই ছবি বানিয়েছেন নন্দিতা দাস। সে ছবির নামও ‘মান্টো’। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। আগামী মে মাসে কান চলচ্চিত্র উত্সব। নন্দিতা জানিয়েছেন, সেখানে ‘মান্টো’র প্রচারপর্বে তিনি হাজির থাকবেন।

Advertisement

এর আগে নন্দিতা কান-এ বহু বার গিয়েছেন। কিন্তু, পরিচালক হয়ে এই প্রথম বার যাচ্ছেন। নন্দিতার প্রথম ছবির নাম ছিল ‘ফিরাক’। ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার পটভূমিকায় তিনি ওই ছবি বানিয়েছিলেন। এ বার ছবির বিষয় হিসাবে তিনি বেছে নিয়েছেন মান্টোকে। নন্দিতার দাবি, “এ ছবি কিন্তু বায়োপিক নয়। মান্টো সাহেবেরই জীবনাদর্শের উপর কিছুটা আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে সমস্ত রকমের স্বাধীনতাই আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই সিনেমা বানানোর জন্য এর থেকে উপযুক্ত সময় আর হতে পারে না।’’

হঠাত্ মান্টোকেই কেন বেছে নিলেন নন্দিতা?
পরিচালকের কথায়, ‘‘মান্টোর লেখা প্রতিটা চরিত্র এক একটা অনুভূতির কথা বলে। সে সব অনুভূতি আজকাল আর নজরে পড়ে না। মান্টো যে ভাবে প্রচিলত সমাজের বিরুদ্ধে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন তা আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। ওঁর বাধনহীন সাহসিকতা আমার ভীষণ পছন্দের।’’

Advertisement

কেমন ছিল মান্টোর জীবন?

ছোটবেলা থেকেই তাঁর জীবনে বাবার কঠোর অনুশাসন ছিল। তবু, সে সবের ভিতরেও শুরু হয়ে গিয়েছিল মান্টোর বোহেমিয়ান এক জীবন। তিনি নাকি পড়াশোনায় ভয়ঙ্কর অমনোযোগী ছিলেন। আর সে কারণেই দু’বার এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। অমৃতসর রেল স্টেশনের ‘হুইলার’ থেকে বই চুরির অভিযোগও ছিল মান্টোর বিরুদ্ধে। গল্প-উপন্যাসের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল সেই ছোট থেকেই। জীবনের নানা টানাপড়েনের ভিতর একের পর এক ধাক্কা কাটিয়ে বড় হয়ে ওঠা তাঁর। মান্টোর সাহিত্যের বিরুদ্ধে একটা সময় অশ্লীলতার অভিযোগও ওঠে। বার ছয়েক তাঁকে আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃটিশ আমলে তিন বার। আর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, যখন তিনি পাক নাগরিক, তখন আরও তিন বার। তাঁর গোটা জীবন জুড়েই ছিল বিতর্ক।

দেখুন মান্টোকে নিয়ে সেই শর্ট ফিল্ম

আরও পড়ুন: ‘কমপক্ষে পঁচাশিটা বিয়ে করেছি, আমার একঘেয়ে লাগে না’

সম্প্রতি ‘মান্টো’ নিয়েই নন্দিতা দাসের শর্ট ফিল্ম ইউটিউবে মুক্তি পেল, ‘ইন ডিফেন্স অব ফ্রিডম’। সেখানে সেই নওয়াজকেই দেখা যাচ্ছে মান্টোর চরিত্রে। ফ্রেমে তিনি। রয়েছেন ক্লাস রুমে। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পক্ষে সওয়াল করছেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তিনি। প্রশ্ন আসছে ছাত্রদের কাছ থেকে। জবাব দিচ্ছেন মান্টো।

তবু প্রশ্ন থাকছে। ইউটিউবে প্রকাশিত ওই অংশে মান্টোর মুখে যে সব শব্দ নন্দিতা ব্যবহার করেছেন, তাতে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র মিলবে তো? ইদানীং বিভিন্ন ছবির ক্ষেত্রেই সেন্সর বোর্ডের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। তা সে ‘উড়তা পঞ্জাব’ হোক বা ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা’! সেন্সর বোর্ডের পাশাপাশি আরও এক আশঙ্কা রয়েছে। দেশভাগের পর থেকে মান্টো ছিলেন পাকিস্তানের নাগরিক। তিনি মারাও গিয়েছিলেন লাহৌরে। উরি হামলা পরবর্তী ভারত-পাক সম্পর্কের জেরে ও দেশের অভিনেতা অভিনেত্রীদের ভারতে কাজ করতে না দেওয়া এবং পাকিস্তানে ভারতীয় ছবি মুক্তি না পাওয়া— এমন একটা অবস্থায় ‘মান্টো’ দেখানো যাবে তো সে দেশে? যদিও ‘মান্টো’ কবে মুক্তি পাবে তা নিয়ে কিছু জানাননি নন্দিতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement