পথের ধারে ফলের রস বিক্রি করতেন বাবা। অদূর ভবিষ্যতে তাঁর ছেলেই একচ্ছত্র অধীশ্বর হয়ে শাসন করলেন বলিউডের সঙ্গীত সাম্রাজ্য। গুলশন কুমারের জীবন হার মানায় হিন্দি ছবির চিত্রনাট্যকেও। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
দিল্লিতে গুলশনের জন্ম ১৯৫৬ সালের ৫ মে। রাজধানীর দরিয়াগঞ্জ এলাকায় ফলের রস বিক্রি করতেন তাঁর বাবা চন্দ্রভানকুমার দুয়া। ছোট থেকেই বাবাকে তাঁর কাজে সাহায্য করতেন গুলশন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
কিছুটা টাকাপয়সা জমিয়ে চন্দ্রভান একটি পুরনো দোকান কিনলেন। সে দোকানে পুরনো রেকর্ড আর অডিও ক্যাসেট বিক্রি হত। তখন কে আর জানত, একদিন এই দোকান থেকেই ক্যাসেট-সাম্রাজ্যের নতুন অধ্যায় শুরু করবেন তাঁর ছেলে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
সংসারে হাল ধরার পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছেন গুলশন। দিল্লির দেশবন্ধু কলেজ থেকে পাশ করার পরে তিনি দোকানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে নেন। ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন সুদেশ কুমারিকে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গুলশন শুধু অডিও ক্যাসেট বিক্রি করেই থেমে থাকলেন না। ক্রমশ জেনে নিলেন এই ব্যবসার নাড়িনক্ষত্র। বেশ কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই শুরু করলেন নিজের সংস্থা ‘সুপার ক্যাসেটস ইন্ডাস্ট্রিজ’। জনপ্রিয় হতে লাগল সেখান থেকে প্রকাশিত অডিও ক্যাসেট। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গুলশনের ঝুঁকি নেওয়া কাজে লাগল। ক্যাসেটের ব্যবসায় আসার কয়েক বছরের মধ্যে তিনি নয়ডায় শুরু করলেন মিউজিক প্রোডাকশন কোম্পানি। ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় পাড়ি দিলেন মুম্বই। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
মূল বাণিজ্যিক স্রোতে প্রথম সুযোগ এল ১৯৮৯ সালে। মূলত দূরদর্শনের জন্য নির্মিত হয়েছিল ‘লাল দুপাট্টা মলমল কা’। কিন্তু আনন্দ মিলিন্দের সুরে এই টেলিফিল্মের গান সুপারডুপার হিট হয়। ছবির প্রযোজক ছিলেন গুলশন কুমার। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
এরপর গুলশন কুমারের নামের পাশে ক্রমশ দীর্ঘ হতে থাকে সাফল্যের তালিকা। ‘আপ্পু রাজা’, ‘অশিকি’, ‘বাহার আনে তক’, ‘আয়ি মিলন কে রাত’, ‘দিল হ্যায় কি মানতা নেহি’-র মতো বক্স অফিস সফল ছবির প্রযোজক ছিলেন তিনি। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
‘বেওয়াফা সনম’ ছবির পরিচালক ও প্রযোজক, দু’টি ভূমিকাতেই তিনি সফল। ব্যবসায় লক্ষ্মীলাভে বিলম্ব হল না। আরবসাগরের তীরে গুলশন কুমারের সংস্থা ‘টি সিরিজ’-এর পালে তখন শুধুই সাফল্যের বাতাস। এখনও ভারতীয় সঙ্গীত দুনিয়ার ৬০ শতাংশের বেশি শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করে টি সিরিজ। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
আশৈশব শিব ভক্ত গুলশন কুমারের বিশ্বসা ছিল, তাঁর অর্থ-যশ-খ্যাতি সবই মহাদেবের কৃপা। তিনি রোজ পুজো দিতে যেতেন অন্ধেরির জিত নগরের জিতেশ্বর মহাদেব মন্দিরে। মূলত বস্তি এলাকার এই মন্দির তাঁর জন্যই প্রচারের আলোয় আসে। তিনি এই মন্দিরকে নতুন করে সাজিয়ে তুলেছিলেন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
এই মন্দিরের সামনেই ১৯৯৭ সালের ১২ অগস্ট গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ১৬টি বুলেটে বিদ্ধ হয়েছিল তাঁর দেহ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
নয়ের দশকের গোড়ায় তখন বলিউডের উপর আন্ডারওয়র্ল্ডের কালো হাত অনেক দূর বিস্তৃত। অভিযোগ, বেশ কয়েকবার প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন গুলশন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গুলশনের নিরাপত্তায় মজুত ছিলেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক কর্মী। তিনি অসুস্থ থাকায় সে দিন একাই মন্দির গিয়েছিলেন গুলশন। পুজো দিয়ে ফেরার পথে তাঁকে গুলি করে আততায়ী। তাঁকে বাঁচাতে গেলে চালকের পায়ে গুলি করা হয়। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
প্রত্যক্ষদর্শী চালকের দাবি, গুলিবিদ্ধ গুলশন মন্দিরের পাশে বস্তির ঘরগুলিতে আশ্রয় চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষে তিনি একটি শৌচালয়ের দেওয়ালের সামনে নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গুলশন কুমারের মূল হত্যাকারী আব্দুল রউফের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। আব্দুল এখন বন্দি আর্থার রোড কারাগারে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
প্রথম থেকেই গোয়েন্দাদের দাবি ছিল, এই হত্যাকাণ্ডে দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানির হাত আছে। গুলশন কুমারের পরিবার অস্বীকার করলেও তদন্তকারীদের দাবি, আন্ডারওয়র্ল্ডের দাবিমতো ‘প্রোটেকশন মানি’ পুরো না দেওয়াতেই এই পরিণতি হয় গুলশন কুমারের। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
বলিউডের বিখ্যাত সুরকার জুটি নাদিম-শ্রাবণের নাদিম সইফির নামও উঠে আসে তদন্তে। অভিযোগ, ব্যক্তিগত শত্রুতার বশে তিনিও এই হত্যাকাণ্ডে অন্ধকার দুনিয়ার সঙ্গে হাত মেলান। এই ঘটনার পরে নাদিম লন্ডনে পালিয়ে যান। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
নাদিমকে ভারতে ফেরানো সম্ভব হয়নি। তিনি পরে ব্রিটিশ নাগরিকত্বও পেয়ে যান। এখন তিনি দুবাইয়ের সুগন্ধি ব্যবসায়ী। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গুলশনের টি সিরিজের সাম্রাজ্য এখন দেখভাল করেন তাঁর ছেলে ভূষণকুমার, দুই মেয়ে তুলসি কুমারি, কুশলী কুমারি এবং ভাই। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গায়িকা অনুরাধা পোড়ওয়ালের সঙ্গে গুলশন কুমারের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন শোনা যায়। কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকার সময়ে অনুরাধা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি টি সিরিজ ছাড়া কোনও সংস্থার হয়ে গাইবেন না। গুলশনের অকাল ও রহস্যজনক মৃত্যুর পরে ধাক্কা খায় অতীতের প্রথম সারির এই গায়িকার শিল্পীজীবন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)