ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের কাছে ছুটলেন চৈতি ঘোষাল, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত।
মা নন্দিতা সেনগুপ্তের মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ঋতুপর্ণা, জানিয়েছেন অভিনেত্রীর আপ্তসহায়ক। খবর জানা মাত্র হাসপাতালে পৌঁছন বন্ধুরা। সিঙ্গাপুর থেকে ঋতুপর্ণার স্বামী সঞ্জয় চক্রবর্তী মেয়ে ঋষণাকে নিয়ে রওনা দিয়েছেন। খবর পেয়ে ঋতুপর্ণার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুনমুন সেন, রাইমা সেন ও চৈতি ঘোষাল। ছবির নায়িকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
বহু দিন ধরে ঋতুপর্ণা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চৈতির। তিনি এ দিন হাসপাতাল থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “ঋতুর বিয়ের আগে থেকে ওঁর মায়ের সঙ্গে আলাপ। আমার কিছু দিন পর থেকেই ঋতু ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করে। তাই আমাদের অভিনয়ের সফর খুব কাছাকাছি। মাসিমাকে আমরা মিমি বলে ডাকতাম। সব সময় বলতেন, ‘তুই তো সময় পেলি না আসার।’ খুব সুন্দরী, অভিমানী ও নরম একটা মানুষ ছিলেন। মাসিমার থেকেই এই আন্তরিক স্বভাব পেয়েছে ঋতু। ‘চতুরঙ্গ’ নাটকে আমাকে দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।”
চৈতি আরও বলেন, “হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় থেকে দেখেছি, একটা মেয়ে হয়ে দশটা মেয়ের কাজ করেছে ঋতু। মেয়ে হিসাবে অনেক চেষ্টা করেছে ও। আর চিকিৎসার হয়তো কিছু বাকি ছিল না। একটা সময় তো মানুষকে হার মানতেই হয়। ভেবেছিলাম, এ বারও সুস্থ হয়ে উঠবেন। তিনি বাড়ি আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ ক’টা দিন আর কিছু করার ছিল না। ঋতু খুব নরম মনের মেয়ে। মাসিমার থেকে কত বকুনি খেতে দেখেছি ওকে।”
অভিনেত্রী দেবিকা মুখোপাধ্যায় নিজের কষ্টের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন যেন। তাঁর কথায়, “এই কষ্ট আমিও পেয়েছি। সেই কষ্টই ঋতুও পাচ্ছে। ও তো মানুষ হিসাবেও খুব ভাল। ও এত গ্ল্যামারাস যে দেখে মনে হয় স্বার্থপর। কিন্তু ও খুবই ভাল মনের মানুষ। ঋতু খুবই মা-ঘেঁষা মেয়ে। তাই এই কষ্ট বলে বোঝানো মুশকিল। ঋতুর মা-বাবা দু’জনকেই চিনতাম।”
পরিচালক শিবপ্রসাদ বলেন, “ঋতু শুধু আমার ছবির নায়িকা নয়, আমরা পরিবারের মতো। ছবির অনেক আগে থেকে মাসি আমাকে চিনতেন। আমার জীবনে সাফল্য এলে তিনি খুব খুশি হতেন। মনে আছে ‘বেলাশুরু’র প্রিমিয়ারে এসেছিলেন। পরিবারের কেউ চলে গেলে যেমন মনে হয়, তেমনই লাগছে।”
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও হাসপাতালে পৌঁছে যান। তাঁর কথায়, “বহু বার মাসিমার সঙ্গে দেখা হয়েছে। প্রিয়জন হারালে যেমন লাগে, তেমনই মনে হচ্ছে। বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।”