বিশ্ব অ্যালঝাইমার্স সচেতনতা দিবসের বার্তা দিয়ে গিয়ে ধরা দিলেন সম্পূর্ণ অন্য এক মীর।
মাত্র পাঁচ বছর আগের স্মৃতি। মীর আফসার আলির মনে আছে সব কিছু। কিন্তু তাঁর বাবার কাছে সবটাই ঝাপসা। আবছা ভাবে কিছুটা মনে করতে পারেন। বেশির ভাগটাই পারেন না। মঙ্গলবার প্রথম সে কথা অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন জনপ্রিয় সঞ্চালক। বিশ্ব অ্যালঝাইমার্স সচেতনতা দিবসের বার্তা দিতে গিয়ে ধরা দিলেন সম্পূর্ণ অন্য এক মীর। এ দিন যাঁর কলমে কৌতুকের ছিঁটেফোঁটাও নেই। বদলে বিশেষ দিনে এই অসুখে আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতা ঝরে পড়েছে তাঁর প্রতিটি শব্দচয়নে, বাক্যবন্ধে।
অ্যালঝাইমার্সের আক্রান্তদের সম্বন্ধে, তাঁদের অসুস্থতা সম্পর্কে অনুরাগীদের কী বার্তা দিয়েছেন মীর?
উদাহরণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন তাঁর বাবার কথা, ‘আব্বার জন্মদিন ৪ এপ্রিল। বছর পাঁচেক আগে আব্বাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, জন্মদিনে কী উপহার চান তিনি? আমার খুব ঘড়ির শখ। আব্বাকে ভীষণ উৎসাহিত হয়ে বললাম, “আব্বা, এই বছর আপনার জন্য আমার তরফ থেকে ঘড়ি।” মুচকি হেসে আব্বা বললেন, “ঘড়ি নয় বাপি, আমায় একটু সময় দিস!” তার পরেই সবিস্তারে জানিয়েছেন তাঁর বাবার অসুস্থতার কথা। গত চার বছর ধরে সঞ্চালক-অভিনেতার বাবা ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। পুরনো কথা, ঘটনা অনেকটাই ঝাপসা তাঁর কাছে। দিনক্ষণ, সাল-সময়--- কোন কিছুরই জ্ঞান নেই আগের মতো। তবে এখনও চিনতে পারেন মীরকে। নাম ধরে ডাকেন। ডাকলে সাড়া দেন।
বিশেষ দিনে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ‘আপনার বাড়িতেও কি এমন কেউ আছেন, যিনি কাজে মন দিতে পারছেন না, সব ভুলে যাচ্ছেন এক এক করে?’ যাঁদের পরিবারের সদস্য এই সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন তাঁদের উদ্দেশে মীর লিখেছেন, ‘অবহেলা করবেন না। দেরি করবেন না। তাঁদের দূরে ঠেলে দেবেন না। যাঁদের আজকাল মনে থাকে না, তাঁদের আরও বেশি করে মনে ধরে রাখুন।’ মীরের এই সংবেদনশীল পোস্ট ঘিরে এ দিন আর কোনও বিতর্ক নেই। বরং তাঁর লেখা পড়ে বহু অনুরাগী মনে করেছেন তাঁদের বাবা, শ্বশুরমশাই, পিসি, মাসি, দিদা, মা আরও অনেককে। যাঁরা ভুগছেন অ্যালঝাইমার্সে বা এই রোগে ভুগতে ভুগতেই এক সময় চিরবিদায় নিয়েছেন।