ভারতীয় ওয়েব সিরিজের সেনসেশন এই মুহূর্তে কে বা কারা, এমন প্রশ্ন উঠলে যে নাম অবধারিত ভাবে প্রথম সারিত থাকবে, তিনি মানভি গাগরো। বলিউডের নানা সিরিয়াল ও ছবিতে টুকটাক কাজ করলেও মূলত ওয়েব সিরিজই জনপ্রিয় করেছে এই সুন্দরী অভিনেত্রীকে।
টিভিএফ পিচার্স ও টিভিএফ ট্রিপলিং-এর মতো ওয়েব সিরিজগুলির হাত ধরেই লাইমলাইটে আসেন এই ‘চঞ্চল’ ওরফে মানভি। প্রশংসিত তো হয়েছিলেনই, তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অল্প সময়ের মধ্যে মানভির কেরিয়ার গ্রাফের উত্থানও বশ নজরকাড়া।
তাঁর জন্মদিনের দিনটি ‘শিক্ষক দিবস’ হিসাবে খ্যাত। দিল্লিতে জন্ম মানভির। বাড়ির সকলে নানা পেশায় যুক্ত থাকলেও অভিনয় জগতে কেউ কখনও যুক্ত ছিলেন না।
বড় হয়ে মানভি অভিনয়ে এলেও ছোট থেকে মূলত নাচটাকেই আঁকড়েছিলেন মানভি। চার বছর বয়স থেকে ১২ বছর অবধি রীতিমতো কত্থক শিখেছেন। পরে ওয়েস্টার্ন ডান্সেও তালিম নেন।
ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলেও নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন মানভি। নানা সৃজনশীল কাজে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে স্কুলের ‘অনেস্টি ক্লাব’-এর সদস্য হিসবে নির্বাচিতও হন।
তবে কেবলই নাচ বা অন্যান্য সৃজনশীল কাজেই নিজেকে বেঁধে রাখেননি মানভি। পড়াশোনাতেও রীতিমতো ভাল ছিলেন তিনি। বায়োলজি ছিল তাঁর প্রিয় বিষয়।
২০০৭-এ নাচের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয়ের প্রতিও টান অনুভব করেন মানভি। ডিজনি ইন্ডিয়া সিরিজে অভিনয়ের সুযোগও মিলে যায়। স্কুল ছাত্রীদের দ্বারা তৈরি একটি ব্যান্ডের গল্পই ছিল এই সিরিজের মূল গল্প।
এই সিরিজে অম্বিকা গিল নামের এক ট্যাম্বোরিন বাদকের চরিত্রে অভিনয় করেন মানভি। এই সিরিজে তাঁর নজরকাড়া অভিনয় তরুণ প্রজন্মের কাছে একপ্রকার ‘রোলমডেল’ বানিয়ে দিয়েছিল মানভিকে।
২০০৮-এ কলেজে পড়তে পড়তেই তাঁর কাছে বলিউডের অফার আসে। ‘দ্য চিতা গার্লস: ওয়ান ওয়ার্ল্ড’ নামের ছবিতে অভিনয় করেই প্রথম নজরে আসেন মানভি। তবে এর পর পড়াশোনার জন্যই অভিনয় জীবনে ছেদ পড়ে মানভির। আবার ২০১০-এ নাটকের মাধ্যমে ফেরেন অভিনয়ে।
কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নো ওয়ান কিল্ড জেসিকা ২০১১’ প্রদর্শিত হলে মানভির অভিনয় সেখানে সমাদৃত হয়। সমালোচকদেরও নজরে পড়েন তিনি।
এর পরই বিভিন্ন ওয়েব সিরিজের জন্য ডাক আসতে তাকে। তবে চিত্রনাট্য পছন্দ না হলে সই করবেন না, এমন মনোভাব নিয়েই ছেডে়ছিলেন বেশ কিছু চরিত্র। অবশেষে টিভিএফ পিচার্সের চিত্রনাট্য পছন্দ হয় মানভির। তার পর টিভিএফ ট্রিপলিংয়েও সমান দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করেন।
শুধু তা-ই নয়, ২০০৫-এ টিভিএফ-এর কর্ণধার অরুণাভ কুমার যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত হলে মানভি তাঁর পাশে দাঁড়ান। নিজের ‘পেশাগত বড় ভাই’ হিসাবে অরুণাভকে দাবি করে তিনি জানান, যে কোনও পরিস্থিতিতেই তিনি তাঁর ‘নির্দোষ’ দাদার পাশে আছেন। এ নিয়ে বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।
আবারও কিছু দিন অভিনয় থেকে সরে গিয়ে সাইকোলজিতে অনার্স পাশ করেন মানভি। ২০১২ সালে তাঁর গ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর ফের ফেরেন অভিনয়ে। এখনও চুটিয়ে অভিনয় করছেন নানা ছবিতে।
অভিনয়ের কারণেই নানা ভাষা শেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ আছে। হিন্দি ছাড়াও জানেন ইংরেজি, কাশ্মীরী। সম্প্রতি বাংলাও শিখছেন।
সোশ্যাল সাইটেও যথেষ্ট সক্রিয় এই অভিনেত্রী। অনুরাগীর সংখ্যাও প্রায় আকাশছোঁওয়া। কিন্তু ওয়েব দুনিয়ায় সেনসেশন তুলে দেওয়া এই অভিনেত্রীর বয়স কত জানেন? আগামী সেপ্টেম্বরে ৩৪ বছরে পা দেবেন মানভি।