যিশু ও রাহুল
গোয়েন্দা ছাড়া বাংলা ছবি অচল। আর গোয়েন্দার চরিত্রে ওই জনা কয়েক মুখ মোটে! তাই যে ব্যোমকেশ, সে-ই কখনও ফেলুদা। আবার এক জনই একাধিক গোয়েন্দা চরিত্রে! নাহ, আবির চট্টোপাধ্যায়ের কথা হচ্ছে না। ঠিক তাঁর মতোই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যিশু সেনগুপ্তর ক্ষেত্রেও। খবর বলছে, আগামী ফেলুদা হতে চলেছেন যিশু। পরিচালক অবশ্যই সন্দীপ রায়।
এর আগের ‘ডবল ফেলুদা’ ছবিটি সন্দীপ করেছিলেন অন্য এক প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে। কিন্তু এ বার তিনি ফের এসভিএফ-এর সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন। ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ নিয়ে ছবি। শোনা যাচ্ছে, প্রযোজনা সংস্থা নতুন মুখ নিতে আগ্রহী। যাতে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আর সব্যসাচী চক্রবর্তী সে ক্ষেত্রে মানানসই হচ্ছেন না। অতএব নতুন মুখ খোঁজার পালা শুরু। আর সেখানেই যিশুর নাম উঠে আসছে। অঞ্জন দত্ত জানিয়েছেন, তিনি আর ব্যোমকেশ বক্সী করবেন না। তাই যিশুকে সত্যান্বেষীর ভূমিকায় যে দেখা যাবে না, তা মোটামুটি পাকা। তাই ফেলুদা হিসেবে এখন তিনিই সেরা বাজি। বদলানোর কথা তপসেরও। ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় প্রস্তাব পেয়েছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত হচ্ছেন না বলেই শোনা যাচ্ছে।
যিশু এমনিতে এখন যে কোনও পরিচালকের কাছেই প্রথম পছন্দ। গোয়েন্দা হিসেবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ব্যোমকেশেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাই ফেলুদা হিসেবেও তাঁকেই ভাবা হচ্ছে। তবে এখন সবটাই প্রাথমিক পর্যায়ে। টলিউডে হিসেবনিকেশ ঘুরে যেতে মোটেও বেশি সময় লাগে না। এর আগে যেমন ফেলুদা হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের নাম উঠে এসেছে। কিন্তু সন্দীপ রায় আগেই সেই নাম বাতিল করেছেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে এমনিতেই মুখ কম। আবিরের নামে ইতিমধ্যেই বাদ। তিনি একধারে ব্যোমকেশ এবং সুবর্ণ সেনের চরিত্র করছেন। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ভাবনায় নেই। অতএব বাকি থাকছেন যিশুই।
কিন্তু যিশুও আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন। যেমনটা পড়েছিলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। অরিন্দম শীলের ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ ছবিতে অজিত হচ্ছেন না শাশ্বত। তাঁর জায়গায় আসছেন রাহুল। ব্যোমকেশের জন্য কৌস্তুভ রায়ের প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে শাশ্বত চুক্তিবদ্ধ। তিনি অন্য কোনও প্রযোজনা সংস্থার হয়ে গোয়েন্দা ছবি করতে পারবেন না। একই চুক্তি রয়েছে যিশুর সঙ্গেও। তাই তাঁরও ফেলুদা হওয়ার ক্ষেত্রে কাঁটা রয়েছে। তবে যেহেতু অঞ্জন আর ব্যোমকেশ করবেন না, তাই কৌস্তুভ যদি যিশুকে ছাড়পত্র দেন... সবটাই নির্ভর করছে পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর। যেটা ছিল না শাশ্বতর সময়ে।
শাশ্বত নাকি কৌস্তুভের সঙ্গে নিজের চুক্তির কথাও জানতেন না। শাশ্বত শুধু বলেছিলেন, তিনি অঞ্জনের কাছে মৌখিক ভাবে দায়বদ্ধ। তাই পরিচালক অনুমতি দিলে তিনি অনায়াসে অজিতের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন। অঞ্জন স্বাভাবিক ভাবেই কোনও আপত্তি করেননি। এসভিএফ-এর সঙ্গেই তাঁর পর পর ছবির পরিকল্পনা চলছে। শাশ্বতকে মাথায় রেখেই অজিতের চরিত্র তৈরি করেন অরিন্দম। সব কিছুই পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছিল। কিন্তু আর পি টেকভিশনের তরফ থেকে এসভিএফ-কে আইনি নোটিস দেওয়া হয়। এর পরেই শুরু হয় নতুন অজিত খোঁজার পালা। রাহুলকে প্রস্তাব দিতে তিনিও ছোট পর্দায় ধারাবাহিকের ব্যস্ত শিডিউল সামলে রাজি হয়ে যান।