Mithun Chakraborty

‘মিঠুন, রাজনীতিটা ছেড়েই দে, এই ময়দান তোর জন্য নয়! কটূক্তি করলে খারাপ লাগে’

‘‘নিজের জন্মদিন নিয়ে মিঠুনের বড্ড কুসংস্কার। গত বছর জীবনে প্রথম ওর জন্মদিন পালন হয় জি বাংলার ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ সেটে। আমি পায়েস খাইয়েছিলাম।’’

Advertisement
মমতা শঙ্কর

মমতা শঙ্কর

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ১৩:২৬
Share:
অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী যখন রাজনীতিবিদ।

অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী যখন রাজনীতিবিদ। সংগৃহীত চিত্র।

এখনও জন্মদিনের আগে সাংবাদিকদের তোকে নিয়ে কত কৌতূহল! তোর সঙ্গে দীর্ঘ বন্ধুত্বের সুবাদে আমাকেও রকমারি প্রশ্ন। এই যেমন, লম্বা জার্নির পর তুই কি অনেক বদলে গিয়েছিস? বদলালে কোথায় বদল, কী কী বদল?

Advertisement

ওঁদের প্রশ্ন শুনতে শুনতে আমারও ঝটিতি অতীত সফর। সত্যিই কি তুই বদলে গিয়েছিস? ১৬ জুন তোর জন্মদিন। কাকতালীয় ভাবে সাল ১৯৭৬-এর ৬ জুন অর্থাৎ জন্মমাসে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ মুক্তি পেয়েছিল। তখন থেকে তোর সঙ্গে বন্ধুত্ব। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। ২০২২-এ আমরা ফের একসঙ্গে অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপতি’ ছবিতে। কাজ করতে করতে দেখলাম, আগের মতোই পিছনে লাগা, মজা করার অভ্যাস রয়ে গিয়েছে। কথায় কথায় খুনসুটিতে মাতিস। আড্ডা জমাস সুযোগ পেলে। কিন্তু মানুষ হিসেবে তুই যেন আরও ভাল হয়ে গিয়েছিস। আর একটু কি বেশি খিটখিটে! তুই কি বুড়ো হয়ে গেলি? এটুকু শুনেই প্রশ্ন করেছিলেন এক সংবাদিক। সপাট বলেছি, তুই বুড়ো! মিঠুন চক্রবর্তী কখনও বুড়ো হতেই পারে না।‘

Image Of Mithun Chakraborty, Mamata Shankar

মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তী এবং মমতা শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র।

অভিনেতা হিসেবে আরও ভাল হয়েছিস। ভাল ভাল বাংলা ছবি করছিস। তোকে নানা চরিত্রে ভাবা হচ্ছে। বন্ধু হিসেবে আমার খুব গর্ব হয়। অনেকে বলছেন, মিঠুনদা সেই বাংলায় ফিরলেন। আর একটু যদি আগে ফিরতেন, তা হলে আরও কিছু ভাল ছবি টলিউডের ঝুলিতে জমা পড়ত। আমি তো জানি, এর আগে মুম্বইয়ে তোর দম ফেলার সময় ছিল না। সে সব ফেলে কী করে বাংলায় আসবি? তা ছাড়া, এখনই বা কম কী করছিস! অনুরাগী মহলে তোকে নিয়ে আরও একটা মজার কৌতূহল। তোর প্রেমিক সত্তা কি এখনও আছে? এর উত্তর আমি কী করে দেব? তুই তো আমার খুনসুটিতে মাতার বন্ধু। আর শুটিংয়ের সময় কি এত কিছু দেখার সময় পেয়েছি?

Advertisement

তবে এটা খেয়াল করেছি, এখনও তুই কাজের মধ্যে বেশি ভাল থাকিস। এটা বোধহয়, তুই বলে নয়, সব শিল্পীর বেলাতেই খাটে। আমার কাকা রবি শঙ্কর শেষ বয়সেও মঞ্চে উঠে সেতার বাজিয়েছেন। মা অমলা শঙ্কর ৯৭ বছর বয়সে মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান করেছেন। সেই সব দেখার পর মনে হয়, শিল্পীরা শুধুই শিল্পের জন্য। শেষ নিঃশ্বাস ফেলার আগে পর্যন্ত। তবে তোর কি ইদানীং একটু ক্লান্ত লাগে? মনে হয়, সংসারের দায়িত্ব আর এক জন কেউ ভাগ করে নিলে ভাল হয়? আমার মনে হয়, তুই কিন্তু দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই বেশি সুখী। তোকে ঘিরে স্ত্রী যোগিতা বালি, তিন ছেলে, এক মেয়ে। এ রকম ভরন্ত সংসারই তো চেয়েছিলি? যদিও সংবাদমাধ্যমের দাবি, তোর ছায়াতে নাকি আজও আচ্ছন্ন তোর দুই ছেলে মহাক্ষয় আর নমোশি। সারা ক্ষণ তোর সঙ্গে ওদের তুলনা। বিখ্যাত বাবার সন্তানদের এটুকু তো সহ্য করতেই হয়, তাই না? কে বলতে পারে, আগামী দিনে তোর ছেলেমেয়েই হয়তো তোকে ছাপিয়ে গেল! সে দিন তোর মতো ‘সুখী বাবা’ আর কে হবে?

‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর সেটে মিঠুন চক্রবর্তীর জন্মদিনে মমতা শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র।

আজ তোর জন্মদিন। এই দিন নিয়ে তোর কত কুসংস্কার! কেক কাটিস না। পায়েস খাস না। কোনও উদ্‌যাপন নেই। না বাড়িতে, না বাইরে। ব্যতিক্রম ২০২৩। গত বছর জীবনে প্রথম প্রকাশ্যে তোর জন্মদিন হয়েছিল পরিচালক অভিজিৎ সেনের ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ সেটে। কেক কাটা হয়েছিল। আমার বৌমা তোর জন্য পায়েস রেঁধে পাঠিয়েছিল। নিজে হাতে তোকে খাওয়ালাম। জানি না, এ বছর তুই কোথায়। তবে জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু হিসেবে তোর কাছে একটা জিনিস চাইব? তুই রাজনীতি থেকে সরে আয়। এই দুনিয়া তোর জন্য নয়। তোর আরও অনেক কিছু করা বাকি। আরও অনেক ভাল ভাল ছবি, চরিত্র আশা করে বাংলা, বলিউড। তুই সে সব দিকে মন দে।

বিরোধী পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষ— যখন তোকে ভুল বুঝে কটাক্ষ করে, বন্ধু হিসেবে সে সব দেখতে বড্ড কষ্ট হয় রে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement