Mamata Shankar

আমি ভাল মেয়ে হলে আঁচল নামিয়ে শাড়ি পরব কেন: মমতাশঙ্কর

“আমাদের বসনে, ভূষণে প্রকৃতিকে উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এখন সে সব থেকে আমরা বিচ্যুত হয়ে গিয়েছি। বেশি মাত্রায় নাগরিক হয়ে উঠেছি”, বললেন শৈবাল বসু।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩২
Share:

মমতা শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত।

প্রকৃতি ও নারীত্বের উদ্‌যাপন হল দক্ষিণ কলকাতায় শাড়ি-অলঙ্কারের প্রদর্শনীতে। সেই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় কবিতা পাঠ করলেন জয় গোস্বামী। পুরনো সাজের আভিজাত্য না কি সাজে নতুনত্বের ছোঁয়া? ফ্যাশনের সংজ্ঞা আসলে ঠিক কী? মতামত জানালেন মমতাশঙ্কর, বিবি রাসেল এবং ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

‘শৈলী’, হাতে বোনা শাড়ি ও অলঙ্কারে নারীত্বের উদ্‌যাপন তুলে ধরেছেন গ্রাম-বাংলার শিল্পীরা। প্রদর্শনীতে মমতাশঙ্কর বললেন, “পুরনো জিনিসকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। পুরনো জিনিসের একটা আভিজাত্য আছে।” তা হলে কি নতুন প্রজন্মের সাজ পছন্দ করেন না অভিনেত্রী? তাঁর স্পষ্ট উত্তর, “আজকাল মেয়েরা যে ভাবে শাড়ি পরে, তাদের আঁচল ঠিক থাকে না। ক্ষমা করবেন এটা বলছি, রাস্তার মেয়েরা ল্যাম্পপোস্টের নীচে যে ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে সে ভাবে এখনকার মেয়েরা শাড়ি পরে। তারা তো পেশার তাগিদে পুরুষদের আকর্ষণ করার জন্য ও ভাবে শাড়ি পরে থাকেন। কিন্তু বাকি মেয়েরা বিনা কারণে সেটা কেন করছে?” আরও যোগ করলেন, “মেয়েরা ও ভাবে শাড়ি পরবে তার পরে ছেলেরা কিছু বললে রেগে যায়। বলবে, মেয়েদের অসম্মান করা হচ্ছে। মেয়েদের একটা শালীনতার জায়গা আছে যা দেখে ছেলেরা সম্মান করবে। আমাদের নিজেদের যদি এই মর্যাদা না থাকে তা হলে ছেলেরা সম্মান করবে কী ভাবে! আমি এর প্রতিবাদ করছি। কিন্তু সম্মান-অসম্মান তো পোশাকের উপর নির্ভর করে না? পাল্টা জবাব অভিনেত্রীর, “প্রথম দেখাতেই তো একটা ধারণা তৈরি হয়। আমি হয়তো খুব ভাল মেয়ে কিন্তু শাড়িটা ওই ভাবে আমি পরব কেন? নিজেকে ও ভাবে দেখাতে যাব কেন!”

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পোশাক শিল্পী বিবি রাসেল পরামর্শ দিলেন একই পোশাকে কী ভাবে ভিন্ন সাজ আনা যায়। বললেন, “মমদি যে শাড়িটা পরেছেন আমিও সেই একই শাড়ি পরেছি কিন্তু তাঁর উপরে একটা ওয়েস্ট কোট পরেছি। সাজ বদলে গিয়েছে একেবারে। এই ভাবেই একই শাড়ি বা অন্য পোশাক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্টাইল করা যায়।”

Advertisement

অন্য দিকে, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাজের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে সাহিত্য। তাঁর কথায়, “আমার কাছে ফ্যাশন মানে রবি ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’র সেই লাইন - ‘ফ্যাশনটা মুখোশ, স্টাইলটা মুখশ্রী’। এই শাড়ি-গয়নায় মাটির গন্ধ রয়েছে। সাহিত্য ও সাজের মেলবন্ধনের ফলে, সংস্কৃতি প্রজন্মের মধ্যে সেতু তৈরি করে।”

‘শৈলী’র অন্যতম কর্ণধার ও শিক্ষক শৈবাল বসু বললেন, “আমাদের বসনে, ভূষণে প্রকৃতিকে উদ্‌যাপন করা হয়েছে। আটপৌরে ভাবে হলেও অনিবার্য ভাবে ছিল। এখন সে সব থেকে আমরা বিচ্যুত হয়ে গিয়েছি। বেশি মাত্রায় নাগরিক হয়ে উঠেছি।” তিনি আরও বললেন, “বাঙালি অলঙ্কার মানে শুধু বাঙালি হিন্দু নয় কিন্তু। যেমন, তাবিজ। ‘পথের পাঁচালী’র সর্বজয়া চৌকো তাবিজ পরতেন। বাঙালি মুসলিম ঘরানার গয়নাও রয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement