মমতা খুশির খবর দিলেন টলিউডকে।
করোনা বিধি-নিষেধের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়লেও খুশির খবর টলিউডে। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকসংখ্যা ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে হল ৭৫ শতাংশ। সোমবার নবান্ন থেকে করোনার নতুন বিধি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী, আরও ২৫ শতাংশ বাড়ল প্রেক্ষাগৃহের দর্শকসংখ্যা। এর আগে ওমিক্রনের প্রভাবে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ না হলেও ১০০ শতাংশ দর্শকসংখ্যা কমিয়ে করা হয়েছিল ৫০ শতাংশ। যার ফলে, ফের মাথায় হাত পড়েছিল হল-মালিক, পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতাদের। বেশ কিছু ছবি-মুক্তিও পিছিয়েছিল এই কারণেই। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরিয়ে দিল বিনোদন দুনিয়ায়।
প্রেক্ষাগৃহে ৭৫ শতাংশ দর্শকসংখ্যা বাড়ায় উচ্ছ্বসিত শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অন্যতম কর্ণধার মহেন্দ্র সোনিও। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রথম সারির প্রযোজকের যুক্তি, "দর্শকসংখ্যা যখন ৫০ শতাংশ ছিল তখনও সাধারণ মানুষ প্রেক্ষাগৃহে গিয়েই ছবি দেখার পক্ষপাতী ছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় প্রতীক্ষার পরে অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে আমাদের বড় বাজেটের ছবি 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণা স্বাভাবিক ভাবেই প্রযোজকদের মনে নতুন আশার জন্ম দিয়েছে।"
৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে ছবি-মুক্তিতে আপত্তি ছিল একাধিক পরিচালক-প্রযোজকের। তাঁদের মধ্যে অন্যতম রাজ চক্রবর্তী। রাজ যত বার তাঁর নতুন ছবি ‘ধর্মযুদ্ধ’ মুক্তির কথা ভেবেছেন, তত বার অতিমারির কারণে পিছিয়েছে তারিখ। এ ভাবেই ২০২০-র ছবি প্রেক্ষাগৃহে আসার কথা ছিল ২০২২-এর জানুয়ারিতে। তখনও বাধ সাধে ওমিক্রন। করোনায় দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হন রাজ এবং তাঁর স্ত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি, দর্শকসংখ্যা নতুন করে সীমিত হওয়ায় সেই সময়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে ব্যারাকপুরের বিধায়ক জানিয়েছিলেন, এই অবস্থায় ছবি-মুক্তির কথা ভাবছেন না তিনি।
সোমবার নতুন করোনা-নীতি ঘোষণার পরেই ফের যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে। খুশি চেপে রাখতে পারেননি রাজ। বলেছেন, ‘‘দিদি’র ঘোষণায় বাকিদের মতো আমিও আনন্দিত। এ বারে ‘ধর্মযুদ্ধ’ নিয়ে আমাকেও নতুন ভাবে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে।’’ কবে ছবি-মুক্তির কথা ভাবছেন রাজ? পরিচালকের কথায়, ফেব্রুয়ারিতে হয়তো আসবে না তাঁর ছবি। কারণ, আগামী মাসে একাধিক বাংলা ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে হয়তো মার্চ মাসে ছবি-মুক্তির কথা ভাবতে পারেন তিনি।
তবে এক্ষুণি এ বিষয়ে কোনও কিছু ঘোষণা করতে নারাজ রাজ। তাঁর যুক্তি, ‘‘যত বার ঘোষণা করেছি, তত বার ছবির মুক্তি পিছিয়েছে। তাই ইচ্ছে, সব গুছিয়ে একেবারে দর্শকদের খুশির খবর দেব।’’কী ভাবছেন হল-মালিকেরা? ২৫ শতাংশ দর্শকসংখ্যা বৃদ্ধিতে কতটা খুশি তাঁরা? প্রিয়া প্রেক্ষাগৃহের মালিক অরিজিৎ দত্তের কথায়, ‘‘আমাদের আবেদন ছিল ১০০ শতাংশ দর্শক-বৃদ্ধির। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত দিক বিবেচনা করে ৭৫ শতাংশ করেছেন। আমরা খুশি।’’ প্রেক্ষাগৃহে আপাতত চলছে ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’, ‘৮/১২ বিনয়, বাদল, দীনেশ’, ‘টনিক’। অরিজিতের দাবি, তিনটি ছবিই ভাল ব্যবসা দিচ্ছে। তাঁর মতে, আরও ২৫ শতাংশ দর্শক বাড়লে যে ছবিগুলির বাণিজ্য ভাল হচ্ছে, সেগুলি আরও একটু ভাল ব্যবসা দেবে। এমনই আশা সকলের। সেই সঙ্গে সবার অপেক্ষা, কবে আবার আগের মতো কানায় কানায় পূর্ণ হবে প্রেক্ষাগৃহ?
১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে শ্রীমন্ত সেনগুপ্তের ছবি ‘আবার বছর কুড়ি পরে’। তার আগেই প্রেক্ষাগৃহে বাড়ছে ২৫ শতাংশ দর্শকসংখ্যা। খবর জেনে ভীষণ খুশি ছবির অন্যতম অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শোনার পরেই ছবি-মুক্তির আনন্দ যেন আরও বেড়ে গেল। অতিমারির কারণেই তৈরি ছবিটি এত দিন পড়েছিল। আমাদের সবার অনেক পরিশ্রমের ফসল। বেশি সংখ্যক দর্শক সেই ছবি দেখতে পেলে তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে?’’ পাশাপাশি, তনুশ্রী জোর দিয়েছেন করোনা-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রেও। তাঁর মতে, সতর্কতা মেনে সপরিবারে প্রেক্ষাগৃহে ফিরুন দর্শকেরা। বাংলা বিনোদন দুনিয়া লাভের মুখ দেখুক। মন ভাল হোক দর্শকদেরও।
প্রেক্ষাগৃহে ৭৫ শতাংশ দর্শকসংখ্যায় ছাড় দেওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অন্যতম কর্ণণধার মহেন্দ্র সোনিও। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রথম সারির প্রযোজকের যুক্তি, "দর্শকসংখ্যা যখন ৫০ শতাংশ ছিল, তখনও সাধারণ মানুষ প্রেক্ষাগৃহে গিয়েই ছবি দেখার পক্ষপাতী ছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় প্রতীক্ষার পরে অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে আমাদের বড় বাজেটের ছবি 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণা স্বাভাবিক ভাবেই প্রযোজকদের মনে নতুন আশার জন্ম দিয়েছে।"