বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল মধুবালার ৯৬ বছরের দিদিকে!
তাঁর বোনের নাম মধুবালা। পর্দায় যাঁর দুঃখে চোখের জলে ভাসতেন দর্শকও। রূপের ছটায় আজও উদাহরণ হয়ে থাকা সেই নায়িকার দিদিই এসে দাঁড়ালেন এক নিষ্ঠুর পরিস্থিতির মুখোমুখি। পর্দায় নয়, ঘোর বাস্তবে। ৯৬ বছরের বৃদ্ধাকে সটান বাড়ি থেকে বার করে দিলেন তাঁরই পুত্রবধূ। শুধু তাই নয়, নিউজিল্যান্ড থেকে একাকী বৃদ্ধাকে বসিয়ে দিলেন মুম্বইয়ের উড়ানে! অভিযোগ করেছেন তাঁরই মেয়ে।
মধুবালার সবচেয়ে বড় দিদি কানিজ বালসারা। গত ১৭-১৮ বছর ধরে অকল্যান্ডে ছেলের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ৯৬ বছরের বৃদ্ধা। অভিযোগ, পুত্রবধূ সামিনা বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে সোজা এসে তুলে দেন মুম্বইগামী বিমানে। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় থাকেন কানিজের মেয়ে পারভিজ। তাঁর অভিযোগ, বিষয়টি তাঁকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেননি সামিনা। এমনকি, কানিজ যে একা দেশে ফিরছেন, সে খবর তিনি জানিয়েছেন পরভিজের এক তুতো ভাইকে। তা-ও বিমান মুম্বইয়ে পৌঁছনোর মাত্র আট ঘণ্টা আগে! পরভিজ তখন মুম্বইয়ে ছিলেন না। পালঘরে জরুরি কাজ মাঝপথে ফেলে রেখে তিনি তড়িঘড়ি ছোটেন বিমানবন্দরে।
পর্দায় মধুবালার দুঃখ কাঁদাত দর্শককে। তাঁর দিদিরই এই পরিণতি! প্রতীকী চিত্র
গত পাঁচ বছর দেশে আসেননি কানিজ। ২৯ জানুয়ারি রাত আটটা নাগাদ মুম্বইয়ে পৌঁছন বৃদ্ধা। পরভিজের অভিযোগ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফোনে খবর দেন। জানান, তাঁর বৃদ্ধা মায়ের কাছে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। কারণ তাঁর কাছে কোনও টাকাই নেই! অবশেষে যখন মা-মেয়ের দেখা হয়, কানিজ তাঁকে বলেন, “তুমি জানো ফারুক মরে গিয়েছে? আমি ওকে কবর দিয়ে এসেছি। আমার বড্ড খিদে পেয়েছে।”
পরভিজের দাবি, ছেলের টানেই নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিলেন তাঁর মা-বাবা। ভাই ফারুকও তাঁদের খুব ভালবাসতেন। অভিযোগ, শ্বশুর-শাশুড়িকে দু’চক্ষে দেখতে পারতেন না সামিনা। তাঁদের জন্য রান্নাও করতেন না। বাবা-মায়ের জন্য বাইরে থেকে খাবার আনাতেন ফারুক। তবে সমস্যা চরমে ওঠে গত ৮ জানুয়ারি, ফারুকের মৃত্যুর পরে। পরভিজের দাবি, মাসখানেকের মধ্যে সামিনা তাঁর মাকে শুধু বাড়ি থেকে তাড়িয়েই ক্ষান্ত হননি। টাকা-পয়সা, গয়নাগাঁটি সবই কেড়ে নিয়েছেন।
সামিনাকে তাঁরা যোগাযোগ করেননি? পরভিজের জবাব, “করেছিলাম। কিন্তু তাতে ওর কিছু যায় আসে কি? না হলে কি এক জন ৯৬ বছরের বৃদ্ধাকে কেউ অকল্যান্ড থেকে সিঙ্গাপুর-ব্যাঙ্কক-কলম্বো ঘুরে মুম্বইয়ে আসা উড়ানে একা চাপিয়ে দিতে পারত! আর কোভিড পরিস্থিতিতে বিমানসংস্থা এমন এক জন যাত্রীকে অনুমতিই বা দিল কী করে ভগবান জানে!