মাধবী মুখোপাধ্যায়
জন্মদিনে তাঁর মন খারাপ। ৭৯-তে পা দিয়ে মনে হচ্ছে এই যেন তাঁর শেষ জন্মদিন হয়। মাধবী মুখোপাধ্যায়। আনন্দবাজার ডিজিটাল থেকে ফোন করে শুভেচ্ছা আর প্রণাম জানাতেই মজা করে বললেন, ‘‘আমাকে প্রণাম কেন জানাচ্ছেন? এই তো আজ জন্মালাম!’’
কিন্তু পরমুহূর্তে চলে গেল হাসি। তিনি বললেন, ‘‘আজ সকাল থেকেই এত শুভেচ্ছার মধ্যেও মনে পড়ছে ভানুদার ওই কথা। ‘আশিতে আশিও না।’ আমি আর বাঁচতে চাই না। অনেক হয়েছে।’’।
মহানগরে আর থাকতে পারছেন না চারুলতা। মেয়ে জোর করেছে তাই রাত্রে টলি ক্লাবে জন্মদিনের ডিনারটা সারবেন। কিন্তু জন্মদিনে নতুন শাড়ির প্রসঙ্গ তুলতেই থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ছোটবেলায় মা ছিল। নতুন জামা পরতাম। মা নিজের হাতে রসগোল্লা তৈরি করত। এখন আর কী জন্মদিন? চারদিক কলুষিত হয়ে গেছে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলছে। গণতন্ত্র আর নেই। রাজতন্ত্র শুরু হয়ে গেছে।’’
থামলেন মাধবী। প্রতিবেশীরা জন্মদিনে তাঁর প্রিয় রান্না করে পাঠিয়েছেন। কেউ বা উপহার দিয়েছেন। তবুও ঘুরে ফিরে তিনি বললেন, ‘‘এ জন্মদিন আর চাই না। যে বিরোধী দল প্রকাশ্য জনসভায় ‘গোলি মার দো’ বলতে পারে তারা দেশের মানুষকে কী দেখবে? হিন্দু-মুসলিম সবই তো এক। হজে যারা যায় তারা তো শিবলিঙ্গকেই পুজো করে। হিন্দু-মুসলিমকে লড়িয়ে তো ক্রমশ সব শেষ হয়ে যাবে...’’
তাঁর গলা শুনে মনে হয় তিনি হাঁপিয়ে উঠেছেন। এই অন্ধকার পরিবেশে তিনি আর বেঁচে থাকতে চান না।