কপূর পরিবারে তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ছেলে রণধীর। আর গ্ল্যামারাস বলিউড নায়িকা ববিতা। তাঁদের প্রেম কাহিনি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয়, কারণ কপূর খানদানে এর আগে কারও সঙ্গে কোনও নায়িকার বিয়ে হয়নি।
‘মিস্টার ৪২০’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসাবে কাজ শুরু করেন রণধীর। এর পর সিনিয়র অভিনেতা হিসাবে ডেবিউ, ‘কাল আজ অউর কাল’ ছবিতে। বক্স অফিসে ছবিটি ব্যাপক সাড়া তো ফেলেইছিল, তাঁর সঙ্গে আলাপ করিয়েছিল ববিতারও।
ববিতা শিবদাসানি ছিলেন সেই ছবির নায়িকা। সেই ছবির সেটেই আলাপ হয় পরস্পরের। রণধীর ছিলেন পঞ্জাবি, আর ববিতা ছিলেন সিন্ধি। কপূর পরিবার তো একেবারে বেঁকে বসল ববিতাকে ছেলে ভালবাসে জেনে।
রণধীর বলেছিলেন, ববিতাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের প্রত্যেককে ছাড়তে রাজি তিনি।
ববিতাকে কিন্তু রাজ কপূর বেশ পছন্দ করতেন। তবে পুত্রবধূ হিসাবে নয়, তিনি চেয়েছিলেন গ্ল্যামারাস মেয়েটি তাঁর ছেলের বিপরীতে নায়িকা হন।
রণধীর আর ববিতা কিন্তু গোপনে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন, কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যাননি।
রণধীর এর পর পরিবারকে আবারও বোঝালেন, ববিতাকে ছাড়া তিনি বাঁচবেন না। কিন্তু রক্ষণশীল পরিবারে বিয়ে করতে গিয়ে হল মুশকিল। ববিতাকে একটা বিশেষ শর্ত দেওয়া হয় বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, যদিও তা কখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
১৯৭১ সালে খুব সাদামাটা ভাবে বিয়ে করেন তাঁরা। শুধু পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন কয়েকজন বন্ধুও।
বিয়ের পর ববিতা সিনেমায় অভিনয় করাই ছেড়ে দিলেন। ন্যাপিয়ান সি রোডের ফ্ল্যাটে ভালই ছিলেন তাঁরা।
১৯৭৪ সালে জন্ম হল বড় মেয়ে করিশ্মা কপূরের। বড় মেয়ে হওয়ার সময় থেকেই সম্পর্কের টানাপড়েন ছিল দম্পতির।
রণধীরের মদের নেশায় ববিতার সঙ্গে অশান্তি বাড়ছিল, তাঁরা একটা সময় আলাদা থাকতেও শুরু করেন। কিন্তু আবারও পরস্পর ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে একসঙ্গে সংসার শুরু করেন। ছোট মেয়ে করিনার জন্ম হয় ১৯৮০ সালে।
রণধীরের মদের নেশা বাড়তে তাকে আবারও। ববিতার সঙ্গে তাঁর এক পুরুষ বন্ধুর ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল সেই সময়। বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল এমনটাই।
কপূর পরিবার থেকে ববিতা অভিমানেই আলাদা থাকতে শুরু করেন দুই মেয়েকে নিয়ে।
এর পর কারিশ্মা, করিনা দুই মেয়ে একটু বড় হতে সন্তানদের কারণেই আবারও পরস্পরের কাছে আসতে থাকেন তাঁরা।
দুই মেয়েই বলিউডে স্বনামধন্য অভিনেত্রীর জায়গা করে নিয়েছেন। মায়ের আশা পূরণ করেছেন দুই সন্তান। কপূর পরিবারের মেয়েরা অভিনয়েও আসাও সেই প্রথম।
রণধীর আর ববিতার সবচেয়ে প্রিয় তাঁদের নাতি-নাতনিরা। বিশেষ করে ছোট্ট তৈমুরের সঙ্গে দাদু রণধীরের মিলের কথাও বলেন অনেকেই। দু’জনেই এখন ভাল আছেন সপরিবারে।