গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
লকডাউন অব্যাহত থাকলেও ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ বিধি শিথিলের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্ন থেকে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেখানে রেড এবং
অরেঞ্জ জোনকে ক্যাটাগরি ‘এ’ বা সংক্রামিত এলাকা, ক্যাটাগরি ‘বি’ বা বাফার এলাকা এবং ক্যাটাগরি ‘সি’ বা সংক্রমণহীন এলাকা, এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ক্লিন এরিয়া বা সংক্রমণহীন এলাকায় যা যা কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেই তালিকার ১৫ নম্বর পয়েন্টে আউটডোর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন শুটিং ও তার সঙ্গে যুক্ত কাজকর্মের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা সরকারি ভাবে পাননি বলে দাবি করেছে আর্টিস্টস ফোরাম ও ইম্পা।
কী ভাবছেন পরিচালকেরা? “আমাদের অনেকগুলো ছবি তৈরি আছে। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ মুক্তি পাবে আবার। ‘বেলাশুরু’ আর ‘লক্ষ্মী ছেলে’ও তৈরি। এখনই শুটের প্রয়োজন নেই আমাদের। এমনিতেই গরমে আমি শুট করি না। টপ সানে শুট হয় না। সব কিছু দেখি আগে। এমন হয়তো হল, সাত দিনে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়ে গেল, তখন আবার লকডাউন। কাজ বন্ধ। আমরা একটু সময় নিতে চাই”, নিজেদের প্ল্যান বুঝিয়ে দিলেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর গলাতেও অপেক্ষার সুর। তিনি বললেন, “সরকার ক্লিন জোনে শুটের কথা বলেছেন। এটা ভাল বিষয়। তবে কোনটা কখন ক্লিন জোন হচ্ছে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমি ধরে নিলাম এই সময় জঙ্গলে শুট করতে গেলাম, কিন্তু আমার ইউনিটকে সেখানকার মানুষ কি ঢুকতে দেবে? এখন কিছু দিন অপেক্ষা করাই ভাল। আমাদের সব ফোরামের সঙ্গে কথা বলতে হবে। অভিনেতা আর টেকনিশিয়ান যারা মাঠে নেমে কাজ করে, তারা আদপে কাজ করবে কি না সেটা জানতে হবে। কালকেই কিছু করে ফেলা যাবে না!”
আরও পড়ুন: লকডাউন পরবর্তী শুটিং-এ নায়ক-নায়িকার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য কি বাদ পড়ছে?
কালই যদি বলা হয় শুট শুরু? কী করবেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী? “ফ্লোরে সবাই পিপিই কিট পরে, টেকনিশিয়ান, স্পটবয় থেকে অভিনেতা, সকলের যদি থার্মাল স্ক্রিনিং হয় তবেই শুট সম্ভব। যে দিন থেকে শুট শুরু হবে সে দিন যেন সকলের কাছে টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকে, তবেই কাজ শুরু করা যেতে পারে”, মনে করছেন মিমি। পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা, “গরমের দেশে কি পিপিই কিট পরে শুট সম্ভব?
কবে ফিরবে শুটিংয়ের সেই দিন।
আরও পড়ুন: ‘আর পারছিলাম না’, নওয়াজের সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন স্ত্রী অঞ্জনা
অভিনেতাদের মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। কিন্তু প্রযোজক কী ভাবছেন? এসভিএফ-এর কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি বললেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। অপেক্ষা করছি নিয়মিত শুটিংয়ের নির্দেশাবলীর ওপর। আমাদের কাজ শুরু করার কোনও তাড়া নেই। আমরা শুটের কথা তখনই ভাবব যখন কাজের ধারা পুরোটাই স্পষ্ট বোঝা যাবে। ফ্লোরে প্রত্যেকের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচেয়েগুরুত্বপূর্ণ।” সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝে মাঝেই নিজের মত প্রকাশ করেন তিনি। হেয়ারড্রেসার হেমা মুন্সী এই নির্দেশিকা নিয়ে বললেন, “মাস্ক পরে অভিনয় কি আদৌ হবে?’’ পাল্টা প্রশ্ন তুললেন তিনি, “শুট হবে কোথায়? এই গরমের সময় আমরা তো ফ্লোরেই থাকি। কোনও বাড়িভাড়াও আর পাওয়া যাবে না। কেউ দেবে না। রাস্তাঘাটে কি শুট করা যায়?’’
দিন গুণছে টলিউড। শুটের কাজ মানেই টলিগঞ্জে জমায়েত? টালিগঞ্জ কি আদৌ ‘ক্লিন’ বা সি জোন? অনেক কিছুর উত্তর এখনও জানা নেই করোনা-জর্জরিত টলিউডের!