দোলের দিন ছুটি কাটান বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা দেখে। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
দোরগোড়ায় দোল উৎসব। রঙের উৎসব। এত দিনে নিশ্চয়ই উৎসব উদ্যাপনের পরিকল্পনা হতে আর বাকি নেই। কেউ সপ্তাহান্তেই পাড়ি দিয়েছেন বোলপুরে, কারও আবার গন্তব্য মায়াপুর। কেউ আবার আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে রং খেলেই পালন করতে চান দোল উৎসব। সঙ্গে ভাল খাওয়া-দাওয়া, আর আড্ডা তো আছেই। বাঙালির উৎসবযাপনের সুখাদ্য আর গল্প-গুজব না হলে চলে নাকি! কিন্তু যাঁরা রং খেলবেন না? তাঁদের কী পরিকল্পনা? রং খেলায় অনীহা থাকলেও আপনার উৎসব পালনে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সে জন্য রয়েছে আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ পরামর্শ। সিনেমা দেখে, খাওয়াদাওয়া করে কাটান দোলের গোটা দিন। কী কী সিনেমা দেখতে পারেন, তালিকা রইল নীচে.....
হোলির গান হিসাবে ‘বলম পিচকারি’ এই প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় গান। ছবি: সংগৃহীত।
ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি
অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’। ছবিতে অভিনয় করেছেন রণবীর কপূর, দীপিকা পাড়ুকোন, কলকি, কেঁকলা ও আদিত্য রায় কপূর। ছবির অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘বলম পিচকারি’। মানালি থেকে ফেরার পথে হোলি খেলায় মেতে ওঠে বানি, নয়না, অদিতি আর অভি। ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী, এই গানেই প্রথম নিজের চশমা পরা ‘পড়াকু মেয়ে’ লুক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন দীপিকা তথা নয়না। নয়না ওই নতুন অবতার দেখে চমকে গিয়েছিল বানি। হোলির গান হিসাবে ‘বলম পিচকারি’ এই প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় গান। দোলের দিন রং খেলার ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এই ছবি দেখে মন ভরাতেই পারেন।
‘লহু মুহ্ লগ গয়া’ গানে রণবীর ও দীপিকার রসায়ন উষ্ণতা ছড়িয়েছিল রুপোলি পর্দায়। ছবি: সংগৃহীত।
গোলিয়োঁ কি রাসলীলা রাম-লীলা
সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন ও রণবীর সিংহ। এই ছবির হাত ধরেই রণবীর-দীপিকার প্রেমের সূত্রপাত। ছবির ‘লহু মুহ্ লগ গয়া’ গানটা মনে আছে নিশ্চয়ই? ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে রং খেলেছিলেন রাম ও লীলা। ওই গানে রণবীর ও দীপিকার রসায়ন উষ্ণতা ছড়িয়েছিল রুপোলি পর্দায়। লাল রঙের মাধ্যমে প্রেমের রং ছড়িয়েছিলেন যুগল। দোলের দিন রং খেলতে না চাইলে, বিশেষ মানুষের সঙ্গে আরও এক বার দেখে নিতে পারেন এই ছবিও।
জ়োয়ার কুন্দনের গালে রং লাগানোর দৃশ্য এখনও ভোলেননি অনুরাগীরা। ছবি: সংগৃহীত।
রাঞ্ঝনা
আনন্দ এল রাই পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে ছিলেন সোনম কপূর ও দক্ষিণী তারকা ধনুষ। এই ছবির হাত ধরেই বলিউডে অভিষেক ধনুষের। অন্য এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছিলেন অভয় দেওলও। চিত্রনাট্য ও সিনেমাটোগ্রাফির জন্য দর্শক ও সমালোচকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল এই ছবি। ছবির বেশির ভাগই শুট করা হয়েছিল বেনারসের অলি-গলিতে। হোলির সময় অন্য এক রঙে সেজে ওঠে শতাব্দী প্রাচীন এই শহর। ছবির গানে সেই অন্য বারাণসীকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালক। জ়োয়ার কুন্দনের গালে রং লাগানোর দৃশ্য এখনও ভোলেননি অনুরাগীরা। দোলের দিন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আরও এক বার দেখে নিতে পারেন এই ছবিও।
‘মহব্বতেঁ’ ছবিতে হোলির রঙেই নরম হয়েছিল সম্পর্কের তিক্ততা। ছবি: সংগৃহীত।
মহব্বতেঁ
সম্পর্কের নানা আঙ্গিকের উপর ভিত্তি করে তৈরি ছবি ‘মহব্বতেঁ’। আদিত্য চোপড়া পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন ও শাহরুখ খান। পার্শ্বচরিত্রে ছিলেন উদয় চোপড়া, জিমি শেরগিল, শমিতা শেট্টির মতো একগুচ্ছ নতুন মুখ। বিশেষ চরিত্রে দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে। সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতে যে দোলের মতো উৎসবের কোনও তুলনা হয় না, তা দেখিয়েছিল এই ছবি। হোলির রঙেই নরম হয়েছিল সম্পর্কের তিক্ততা। দোলের দিন অন্য কোনও পরিকল্পনা না থাকলে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আর এক বার দেখে নিতেই পারেন এই ছবি।
‘হোলি কে দিন’ গানে ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর রসায়ন এখনও ভোলেননি অনুরাগীরা। ছবি: সংগৃহীত।
শোলে
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় এবং বৈগ্রহিক ছবি ‘শোলে’। সংলাপ ও অ্যাকশন দৃশ্য তো আছেই, সঙ্গে এই ছবিতেই হয়েছে বিখ্যাত গান ‘হোলি কে দিন’। ওই গানে ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর রসায়ন এখনও ভোলেননি অনুরাগীরা। দোলের দিন পরিবার-পরিজনদের নিয়ে আরও এক বার দেখে নিতে পারেন ‘শোলে’। গায়ে রং লাগুক, বা না লাগুক— ভাল ছবি দেখে মনে রং লাগবেই।
দোলের দিন দেখতে পারেন আশির দশকের জনপ্রিয় ছবি ‘সিলসিলা’। ছবি: সংগৃহীত।
সিলসিলা
হোলি বললেই বলিউডের যে গানের কথা মনে পড়ে যায় এক লহমায়, তা হল ‘রং বরষে’। দোলের দিন পাড়ার মোড়ে বা আবাসনের হোলি পার্টিতে এই গান এই গান শোনেননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যে ছবিতে ছিল এই গান, তার নাম ‘সিলসিলা’। অমিতাভ বচ্চন ও রেখার অবিস্মরণীয় রসায়ন উঠে এসেছিল এই ছবিতেই। ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জয়া বচ্চনও। ত্রিকোণ প্রেমের এই ছবি নিয়ে কম বিতর্কও হয়নি। দোলের দিন ফিরে যেতে পারেন আশির দশকের এই জনপ্রিয় ছবিতে।