সপরিবার কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁদের পরিবারের তিন জনেই শিল্পী, অভিনয় এবং ছবির জগতের বাসিন্দা। পরিচালক এবং অভিনেতা হিসেবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচিতি নতুন করে উল্লেখ করার প্রযোজন নেই। মা-বাবার টিমে এখন নতুন সদস্য পুত্র উজান। নতুন বছরে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের তিন সদস্য এক নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন, যাকে তাঁরা বলছেন ‘রাইটার্স ব্যাঙ্ক’। পোশাকি নাম ‘দ্য স্ক্রিনপ্লেয়ার্স’।
কৌশিক বিষয়টা খোলসা করলেন। বললেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের বাংলায় ভাল চিত্রনাট্যকারের অভাব রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে মৌলিক চিত্রনাট্যের অভাবও। তাই আমরা ভাল গল্পের ভান্ডার তৈরি করতে চাইছি।’’ তবে শুধুই তিন জন নন, তাঁদের সঙ্গে এই উদ্যোগে বাইরের কেউ যোগ দিতেই পারেন। কৌশিকের কথায়, ‘‘আমরা একসঙ্গে চিত্রনাট্যকে ঘষামাজা করে তৈরি করব। বাইরে থেকে কোনও পরিচালক বা প্রযোজক এসেও আমাদের থেকে গল্প নিতে পারেন।’’
কী ভাবে এই ভাবনার সূত্রপাত? কৌশিক হেসে বললেন, ‘‘এটা কিন্তু ওই দোকান খুললাম, এ বার সবাই এসে এখান থেকে কনটেন্ট নেবেন, সে রকম নয়। আমরা তিন জনেই সাহিত্যের ছাত্র। দেখেছি, বাড়িতে তিন জন বসলে বিভিন্ন ভাবনার আদানপ্রদান হয়। সেটাকেই আমরা নিয়ম মেনে লিপিবদ্ধ করে রাখতে চাইছি।’’ ‘অসুখ বিসুখ’ ছবিতে কৌশিকের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছিলেন উজান। পরে চিত্রনাট্যকেও ঘষামাজা করে একটা অন্য আঙ্গিক দেন উজান। কৌশিক বললেন, ‘‘উজান খুব ভাল লেখে। ভবিষ্যতে হয়তো পরিচালনাও করবে। আমরা এখন থেকেই তিন জনে মিলে ভাল কনটেন্ট তৈরির উপর জোর দিতে চাইছি।’’
বলিউডে দীর্ঘ দিন মৌলিক কাহিনির ভান্ডার বাড়াতে বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা বা চিত্রনাট্যকাররা একজোট হয়ে কাজ করছেন। টলিউডে এই ভাবনা তুলনায় নতুনই বটে। কৌশিক বললেন, ‘‘আমি এই বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি প্রচার করতে চাইনি। আজকে হয়তো বিষয়টা অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। কিন্তু আমার বিশ্বাস, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রত্যেকেই এই উদ্যোগের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।’’
তাঁদের এই উদ্যোগ যে ভবিষ্যতে প্রযোজনাতেও পা রাখতে পারে সেই সম্ভাবনাও দেখতে পারছেন উজান। একই সঙ্গে বললেন, ‘‘তবে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য কনটেন্ট ব্যাঙ্কিং। সেই গল্পগুলো বাড়ির হেঁশেলেই তৈরি হবে।’’ এরই সঙ্গে উজানের সংযুক্তি, ‘‘বিদেশে একসঙ্গে মিলে লেখার উপরে খুব জোর দেওয়া হয়। কারণ কোনও একজনের একরৈখিক দৃষ্টিভঙ্গি যে কোনও বিষয়ের জন্যই খারাপ। অন্য কারও গল্পকেও আমরা আরও ডেভেলপ করতে পারি।’’
কৌশিক জানালেন তাঁরা ইতিমধ্যেই কলকাতা এবং কলকাতার বাইরেও বিভিন্ন প্রজেক্টের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। উজান জানালেন, একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের জন্য ভারতের প্রেক্ষাপটে তৈরি একটি অ্যানিমেশন শোয়ের কাজও শুরু করেছেন। তবে এই মুহূর্তে নতুন কাজগুলি নিয়ে বাড়তি তথ্য দিতে নারাজ পিতা-পুত্র।