সিরিজ় ‘অ্যাডোলেসেন্স’ কি কর্ণের কপালে ভাঁজ ফেলল? ছবি: সংগৃহীত।
ছোট থাকলে একরকম। বয়ঃসন্ধি মানেই সন্তানের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠার বয়স। এই সময় থেকে মা-বাবার সঙ্গে চিন্তার, মতের পার্থক্য গড়ে উঠতে শুরু করে। প্রজন্মগত ফারাক স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে, দুই প্রজন্মের নিত্য সংঘাত। এই সংঘাত এড়ানোর কোনও উপায় বা পথ কি কোনও সিরিজ় বা বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান দেখাতে পারে? প্রযোজক-পরিচালক কর্ণ জোহর বলছেন, “পারে। ”
উদাহরণ হিসেবে তিনি সদ্য মুক্তি পাওয়া সিরিজ় ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর কথা বলেছেন। তাঁর মতে, চারটি অসাধারণ লং শটে বানানো চার পর্বের সিরিজ়ের প্রতিটি পর্ব মা-বাবার কাছে শিক্ষণীয়।
মুক্তির আগে থেকেই চর্চা ছিল। সিরিজ়টি মুক্তি পাওয়ার পরে তাই সাড়া ফেলেছে সব বয়সের দর্শকদের মনে। প্রত্যেকে প্রশংসা করছে ফিলিপ বারান্তিনি পরিচালিত সিরিজ়টির। দর্শকদের মতে, স্টিফেন গ্রাহাম, অ্যাসলে ওয়াল্টার্স, এরিন ডোহেরটি, জো হার্টলের অভিনয় দাগ কেটেছে সকলের মনে।
কর্ণ নিজে প্রযোজক-পরিচালক। পাশাপাশি তিনি যমজ সন্তানের ‘একাকী পিতা’। তাঁর মতামত সব সময়েই অন্যদের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেন তিনি প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ‘অ্যাডোলেসেন্স’কে?
নিজের মতামত জানিয়ে রবিবার তিনি সমাজমাধ্যমে একটি লম্বা পোস্ট করেছেন। সেখানেই স্পষ্ট, কেন তিনি সিরিজ় দেখে মুগ্ধ। কর্ণের মতে, “কোনও পডকাস্ট, সিরিজ় বা বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান মা-বাবাকে তাঁদের দায়িত্ব শেখাতে পারে না। দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতনও করতে পারে না। পারে অভিভাবকের আচরণ। সেটাই সন্তানদের কাছে তাঁর পরিচয়, গ্রহণযোগ্যতা।” এই জায়গা থেকে তাঁর দাবি, সন্তান তাই মা-বাবার প্রতিচ্ছবি, আয়না, যেখানে অভিভাবক নিজেকে দেখতে পান, পড়ে নিতে পারেন।
এই বিষয়টি স্পষ্ট ‘অ্যাডোলেসেন্স’ সিরিজ়ে। নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, “আমি বই পড়ে বড় হয়েছি। দুই মলাটের অস্তিত্ব আমার কাছে তাই বাস্তব। আমার দুই সন্তান বই পড়ে মুঠোফোনে। আমি কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করতে শিখেছি। আমার সন্তান মনের কথা জানায় সমাজমাধ্যমে, ইমোজি দিয়ে। ওদের উপরে সমাজমাধ্যমের প্রভাব অনেক বেশি।” কর্ণ আরও জানিয়েছেন, তাঁর প্রজন্ম যে বয়সে নিজেকে আবিষ্কারের নেশায় মগ্ন, সেই বয়সে এই প্রজন্ম বাকিদের সঙ্গে ‘তুল্যমূল্য বিচার’-এ ঘেরা। সমাজমাধ্যমে কটাক্ষ, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপে অহরহ বিদ্ধ। ‘ট্রোলিং’ তাদের মানসিকতা বদলে দিচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। বয়ঃসন্ধির মতো সময়ে তারা আরও স্পর্শকাতর। এই সময় কী করে তাদের সামলাতে হবে— এই পাঠ পড়িয়েছে সিরিজ়।
প্রযোজক-পরিচালকের কথায়, “আমি দুই সন্তানের অভিভাবক। একা হাতে মানুষ করছি। আমার কাছে সিরিজ়টির গুরুত্ব তাই অন্যদের থেকে একটু বেশিই।”