‘এক যে ছিল রাজা’র লুকে যিশু সেনগুপ্ত।
‘এক যে ছিল রাজা’-র লুক নিয়ে চারিদিকে এত কথা হচ্ছে। অথচ সৃজিতের সঙ্গে নাকি আপনার ঝগড়া লেগেছে?
হুমম! শুনছি। তবে মজার কথা, আমি বা সৃজিত কেউ এটা জানি না। আমি অসুস্থতার কারণে সৃজিতের ‘শাহজাহান রিজেন্সি’-তে অভিনয় করতে পারিনি। লোকে সেটাকেই ঝগড়া বলে ধরেছে।
আপনার নাকি সদ্য অপারেশন হয়েছে?
প্যানক্রিয়াসে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। একটা নয়, আমার দুটো সার্জারি হয়। ‘শাহজাহান রিজেন্সি’র শুট শুরুর সময় আমি অসুস্থ। সৃজিত রেগে গিয়ে বলেছিল, ‘তোকে করতেই হবে।’ আমিও রেগে গিয়েছিলাম। আমাদের মধ্যে এ সব হামেশাই হয়। ওর সঙ্গে কত ঝগড়া হয়! ‘উমা’-তেও কত বকেছে আমায়। তবে শুনলাম, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’-তে কাউকে বকেনি। এ বার চেঁচামেচি করলেই ধরব। তবে ‘এক যে ছিল রাজা’-য় কিন্তু কিছু বলেনি। আসলে আমি এই ছবিটায় একটা ট্রান্সে চলে গিয়েছিলাম।
আপনার লুকটাই তো সাঙ্ঘাতিক! অস্বস্তি হয়নি? ওই রকম পোশাকে...
ছবিতে আমার ছ’টা লুক আছে। কিন্তু প্রথম যে দিন মুর্শিদাবাদের মিউজিয়ামে শুট ছিল, ওই জটা, ওই নাগা সন্ন্যাসী লুক...এক মুহূর্তের জন্য অস্বস্তি হয়েছিল। ওই রকম ছোট পোশাক। সারা গা খোলা। কিন্তু তার পর নিজেকে বলেছিলাম, আমি এক জন অভিনেতা। এই চরিত্র জীবনে আর পাব না। তাই এসপার নয় ওসপার।
আরও পড়ুন, বলিউড তোমার নামে শ্রদ্ধায় মাথা নত করে ঋতুদা: যিশু
পুজোয় এক গুচ্ছ ছবির মধ্যে এই ছবি আসছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই ছবি ঘিরে দর্শকের চাহিদা বাড়ছে...
সৃজিত এই ছবিতে প্রত্যেকটা চরিত্রকে অভিনয় করার জায়গা দিয়েছে। রিনা পিসি, অনির্বাণ, জয়া, রুদ্র। বলা যেতে পারে, প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেককে লড়িয়ে দিয়েছে সৃজিত এই ছবিতে। এটাই এই ছবির স্পিরিট!
এই লুকেই ‘এক যে ছিল রাজা’তে দেখা যাবে জয়া আহসানকে।
‘সন্ন্যাসী রাজা’ নিয়ে এমনিতেই বাঙালির উৎসাহ আছে। এ বার এই ছবিতে...
একটা কথা, ‘সন্ন্যাসী রাজা’ আর ‘এক যে ছিল রাজা’র আকাশপাতাল তফাত। আগেরটা ইতিহাস থেকে গল্প তৈরি করেছিল। এটা ইতিহাসে যা ঘটেছে তাই দেখিয়েছে। যে কারণে এ ছবিতে আমার বিভিন্ন বয়স ধরা আছে। আমি ছবির জন্য একটু মোটাও হয়েছিলাম। বরফের মধ্যে যেমন খালি গায়ে হেঁটেছি, তেমনই মরুভূমিতে চলেছি গরম বালিতে।
এ সবের মধ্যে আবার কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে গিয়েও কাজ করেছেন। পারলেন কী করে?
জানি না। সৃজিতের এই ছবি আর ‘মনিকর্নিকা’, এক সঙ্গে শুট করতাম। দুপুরে মুর্শিদাবাদ থেকে বাই রোড দমদম এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে দিল্লি। দিল্লি থেকে যোধপুর। দুশো লোকের ইউনিট। কুলভুষণ খারবান্দা, সোনু সুদ, কঙ্গনা। আবার ওখান থেকে পরের দিন প্রচুর জার্নি করে মুর্শিদাবাদ। অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত, অনির্বাণ, রুদ্র। কী করে পারলাম জানি না!
আরও পড়ুন, ‘আলিয়া, দীপিকা, অনুষ্কাদের সঙ্গে কাজ করতে ভয় পাই’
আঙুলে বেশ কিছু আংটি দেখছি। এগুলোই কি এত কিছু করালো?
এ বছর আমার ভাল যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি। এই স্টোনের মধ্যে একটা বিজ্ঞান আছে। আমার কাজ হয়েছে, আমি খুশি।
আর নীলাঞ্জনা?
ও বিশ্বে একটা শক্তিকে বিশ্বাস করে।
যিশুর লুক প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
নীলাঞ্জনা না থাকলে যিশু সেনগুপ্ত ইন্ডাস্ট্রিতে কুড়ি বছর এমন করে থেকে যেতে পারত?
ও খুব কেয়ারিং। মেয়েদের ওকে দেখতে হয়। আমি আর কতটুকু সময় দিই? তবে আমার বড় মেয়ে এক বার বাংলায় কুড়িতে আঠারো পাওয়ায় আমি বলেছিলাম, তুই আমার মেয়ে হয়ে এটা কী করলি! মেয়ে তো চমকে গেছে। নীলাঞ্জনা বলছে, তুমি কেন এ রকম বলছ? আমি আমার মেয়েদের বলতে চাই, পড়াশোনাই জীবনে সব নয়। আগে মানুষ হতে শেখো। আমি ওদের বন্ধু আর নীলাঞ্জনা ওদের মা।
ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই বলে নীলাঞ্জনার জন্য আপনি অন্য কোনও মেয়ের প্রেমে পড়তে পারলেন না...
(হাসি) আরে বলুন নীলাঞ্জনার ভয়ে! এখনও বলে লোকে এই কথা। তাতে অবশ্য আমার কিছু যায় আসে না। আমাদের মধ্যে অসম্ভব মিউচুয়াল রেসপেক্ট আছে। নীলাঞ্জনা যেটা চায় না সেটা আমি ওর সামনেও করি না, পেছনেও না। এই শ্রদ্ধাটাকে কেউ ভয় হিসেবে ভাবে ভাবুক!
পুজোয় নয় নয় করে ছ’টা ছবি। টেনশন হচ্ছে?
প্রত্যেক বারই তো পুজোয় অনেক ছবি আসছে। আমার মনে হয় একটু কম এলে ভাল হয়। আমার মনে হয় হলের সংখ্যা বাড়লে ভাল হয়। আর আমি নিজে টলিউডে বছরে তিনটের বেশি আর ছবি করব না ভেবেছি।
মুম্বই-কলকাতা করে বেড়াচ্ছেন তিনি। সামনে অপর্ণা সেনের ‘ঘরে ও বাইরে’ শুট শুরু হবে। রাজা তখন বদলে যাবেন!
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)