প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। সোমবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল অভিনেতার কন্যা, পায়েল ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি জানান, অভিনেতার শেষকৃত্য দমদমেরই কাছাকাছি কোনও শ্মশানে করা হবে।
রক্তে বিষক্রিয়া বা সেপ্টিসেমিয়ার মতো অসুখের শিকার হয়েছিলেন প্রদীপ। গত কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রবিবার তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রক্তে বিষক্রিয়ার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। ফুসফুসের সংক্রমণ তো ছিলই, সঙ্গে নিউমোনিয়াও ধরা পড়েছিল।
শেষ কাজ শেষ হল না। পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর ছবি ‘দত্তা’র শ্যুটিং করছিলেন অভিনেতা। দু’দিন শ্যুটিং করার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে ভর্তি করানো হয় নাগেরবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালে। তার পর দমদম ক্যান্টনমেন্টের মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালের বেসরকারি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই প্রয়াত হলেন অভিনেতা।
রবিবার অভিনেতার স্ত্রী তপতী মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, অবস্থা একদমই ভাল নয়। তিনি বলেন, “প্রথমে নাগেরবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। তার পর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। শনিবার তা-ও সাড়া দিচ্ছিলেন। এখন দিচ্ছেন না। ওঁর ফুসফুসের সমস্যা অনেক দিনের। কার্বন জমে যায়।”
প্রদীপের দুই সন্তান। ছেলে এবং মেয়ে দু’জনেই থাকেন দুবাইয়ে। মেয়ে পায়েল রবিবার সকালে কলকাতায় এসেছেন। সোমবার পায়েল বললেন, ‘‘বাবার মৃত্যু সব সময়ই বেদনাদায়ক। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলার অবস্থায় আমি নেই।’’
সত্যজিৎ রায়ের ‘জন-অরণ্য’-এর সোমনাথ চরিত্রটি করে নজরে কাড়েন প্রদীপ। এ ছাড়া ‘অশ্লীলতার দায়ে’, ‘সতী’, ‘পুরুষোত্তম’, ‘হীরের আংটি’-র মতো ছবি উপহার দিয়েছেন প্রদীপ।
প্রদীপের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখেছেন, ‘তাঁর প্রয়াণে অভিনয় জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।... আমি প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’