শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
রাজনীতি নাকি তাঁর জন্য নয়! অবশেষে সার বুঝলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়? এমনই গুঞ্জন ভাসছে টলিউডের অন্দরে। ৩৪ বছর ধরে দাপটে বাংলা ছবির দুনিয়ায় রাজপাট সামলাচ্ছেন তিনি। মাত্র কয়েক মাস রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে সেই শ্রাবন্তীই হেরে গেলেন! তাই নাকি তিনি ফিরে এসেছেন নিজের ছেড়ে যাওয়া সাম্রাজ্যে, অভিনয় দুনিয়ায়। মঙ্গলবার উত্তর কলকাতায় দেব অধিকারী প্রযোজিত 'কিশমিশ' ছবির ক্যামিও চরিত্রের শ্যুটে তিনি এসেছিলেন। খবর, সেখানেই শ্রাবন্তী মুখোমুখি নিজের দলের আরেক প্রতিনিধি অঞ্জনা বসুর সঙ্গে। জানা গিয়েছে, দুই অভিনেত্রী এক জায়গায় হতেই মনের কথা চেপে রাখতে পারেনি শ্রাবন্তী। তাঁকে নাকি বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কয়েক মাসেই বুঝেছি রাজনীতি আমার জন্য নয়। তাই আবার মন দিয়েছি অভিনয়ে।’’
রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কিশমিশ’ ছবিতে শ্রাবন্তীকে দেখা যাবে অভিনেত্রী শ্রাবন্তী হিসেবেই। এ দিন শ্যুটে এসে বেশির ভাগ সময় তিনি নিজেকে বন্দি রেখেছিলেন মেকআপ ভ্যানে। উত্তর কলকাতার একটি গলির মধ্যে অবস্থিত পুরনো জমিদার বাড়িতে এ দিন সরস্বতী পুজোর শ্যুট হয়। সেখানেই শ্রাবন্তীকে দেখা যায় সাদা সিক্যুইনের শাড়িতে। তাঁর তরতাজা ভাব যেন বলে দিচ্ছিল, অভিনয় তাঁকে নতুন অক্সিজেন জোগাচ্ছে।
শ্যুটিংয়ে শ্রাবন্তী
শ্যুটের পর কিছু সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। জানান, জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে চিঠি পেয়ে তিনি আপ্লুত। বলেন, ‘‘প্রতি বছর দিদি আমার জন্মদিন মনে রাখেন। আশীর্বাদ জানান, উপহার পাঠান। এ বছরেও তাঁর ভুল হয়নি। দিদি চিঠিতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর থেকে বড় সম্মান আর কী হতে পারে?’’ যদিও নিন্দুকেরা এই নিয়েও অভিনেত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দলবদলের সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দিয়েছে তারা। অভিনেত্রীর মত, লোকে নানা কথা বলবেই। নিন্দুকদের মুখ তিনি কী করে আটকাবেন! যদিও এ দিন স্বামী রোশন সিংহকে নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি। তবে উচ্ছ্বসিত ছেলে ঝিনুক ওরফে অভিমন্যু চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা হতেই অভিনেত্রী খুশি ছোঁয়া গলায় জানিয়েছেন, ‘‘ছেলে আইসিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে। খুব ভাল নম্বর পেয়েছে।’’
দেবের আগামী ছবি ‘কিশমিশ’-এ বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সহাবস্থান। অঞ্জনা বসু, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় যদি বিজেপি-র প্রতিনিধি হন তা হলে দেব, জুন মালিয়া যথাক্রমে শাসকদলের সাংসদ, বিধায়ক। অন্য দিকে, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বামপন্থায় বিশ্বাসী।
পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তিনি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের বহু বছর আগে এই ছবির গল্প লিখেছিলেন। কিছু অভিনেতাদেরও বেছেছিলেন। শ্রাবন্তীর কথায়, ‘‘রাজনীতির বাইরে আমরা সবাই অভিনেতা। সেখানে কোনও বিরোধিতা নেই। তাই এ ভাবে মিলেমিশে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।’’ সোমবারে অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, রূপা ভট্টাচার্য বিজেপি ছেড়ে বাম দলে যোগ দিয়েছেন। তাই নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র। সামাজিক পাতায় দল ছাড়ার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। এই নিয়েও নাকি মতামত জানিয়েছেন শ্রাবন্তী।
সূত্রের খবর, অঞ্জনার কাছে এই নিয়েও আক্ষেপ করেছেন তিনি। কথার ভাঁজে বোঝাতে চেয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা যে কোনও দলের পক্ষেই সম্মানহানিকর।