সোহম। ছবি: স্বপ্নিল সরকার
প্র: ‘কবীর সিং’-এর সাফল্য কি টলিউডে অতিরিক্ত মাইলেজ দিয়েছে?
উ: শিবুদাকে (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) যে দিন মেসেজ করেছিলাম, ঘটনাচক্রে সে দিনই উনি ‘কবীর সিং’ দেখেন। যোগাযোগ করতেই বলেছিলেন, ‘আমিই তোমাকে ফোন করতাম’। তার পরেই ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি’তে সুযোগ পাই। এর আগে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দৃষ্টিকোণ’-এ কাজ করেছি। একটা নাটকে উজানকে (গঙ্গোপাধ্যায়) ডিরেক্ট করেছিলাম, যেটা কৌশিকদা দেখতে এসেছিলেন। সেখান থেকেই উনি পছন্দ করেন আমাকে।
প্র: শুরুটা তো থিয়েটার দিয়ে...
উ: আমি ‘ম্যাড’-এর (ম্যাড অ্যাবাউট থিয়েটার) অংশ ছিলাম। এখন সত্যিই থিয়েটার করার সময় পাই না। বন্ধুরাও কেউ সিনেমা, কেউ ওয়েব সিরিজ়ে শিফ্ট করে গিয়েছে। যদিও আমার মুম্বই যাওয়া থিয়েটার সূত্রেই। ব্রডওয়ে মিউজ়িক্যাল ‘আলাদিন’-এ সুযোগ পেয়েছিলাম। সেই সময়েই মুকেশ ছাবরার সংস্থা একজন নতুন ছেলে খুঁজছিল। সেখানে ভাল ভাবে অডিশন দিয়ে বেরিয়ে নিজেকে একটা রেড ভেলভেট কেক দিয়ে ট্রিট দিয়েছিলাম! পরের সপ্তাহেই ডাক এসেছিল।
প্র: ‘কবীর সিং’-এর বিতর্কের ব্যাপারে আপনার কী মত?
উ: কয়েকটা জায়গা আপত্তিকর মনে হয়েছিল বইকি। সেগুলো পরিচালককে বলেওছিলাম। কিন্তু আমাদের মতো জুনিয়র আর্টিস্টের জায়গা থেকে স্ক্রিপ্টে মতামত দেওয়া কিংবা পরিবর্তন করা তো সম্ভব নয়। অনেক সময়ে প্যাশন নিয়ে কোনও কাজ করলে আমরা পক্ষপাতিত্বও করে ফেলি। তবে আমার যেটা খারাপ লেগেছিল, তা হল এই বিতর্কটার ফলে ছবির অনেক ভাল দিক লোকে নজরই করেননি।
প্র: অভিনয়ে এলেন কী ভাবে?
উ: ব্যারাকপুরে জন্ম। চার বছর বয়সে কলকাতায় শিফ্ট করে আমার পরিবার। তারপর ডন বস্কো স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই পারফর্ম করতাম, ব্যান্ডে গান করতাম। তাই স্টেজ-ফ্রি ছিলাম ছোট থেকেই। কলেজের সময় থেকে থিয়েটার মাথাচাড়া দেয়। প্রচুর সিনেমা দেখতে শুরু করি। বাংলায় শিবুদা-নন্দিতাদির ‘ইচ্ছে’, হিন্দিতে শাহরুখ খানের সিনেমা, হলিউডে জ্যাক ব্ল্যাকের ‘স্কুল অব রক’-এর মতো ছবি আমাকে খুব ইন্সপায়ার করেছিল অভিনয়ে আসার ক্ষেত্রে।
প্র: ‘ব্রহ্মা জানেন...’-এর কাহিনি মহিলা পুরোহিতকে নিয়ে, যে চরিত্রে রয়েছেন ঋতাভরী। সেকেন্ড লিড বলে চিন্তিত ছিলেন?
উ: ‘শোলে’তে গব্বর সিংয়ের স্ক্রিন প্রেজ়েন্স খুব বেশি সময়ের ছিল না, কিন্তু তাতেই তিনি ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর মতো ছবিতে কে লিড, সেটা বলা সম্ভব? কাজেই চরিত্রের দৈর্ঘ্য যা-ই হোক, তার ইমপ্যাক্ট হওয়া প্রয়োজন। স্টার নিলেই যে ছবি চলবে, এমন ফর্মুলা এখন আর নেই। দেয়ার ইজ় ইনসিকিয়োরিটি টু পারফর্ম বেটার। সেকেন্ড লিড নিয়ে কোনও নিরাপত্তাহীনতা ছিল না। আর ঋতাভরী দুর্দান্ত কো-স্টার।
প্র: হিন্দিতে সুযোগ পেয়েও বাংলায় কাজ করতে এলেন কেন?
উ: আমি তো আঞ্চলিক ভাষাতেও কাজ করতে চাই। আদিল হুসেনের মতো অভিনেতাই একজন দারুণ উদাহরণ এ ক্ষেত্রে। হিন্দিতে অফার এসেছে ওয়েব সিরিজ়, ছবির। এখনও নিয়মিত অডিশন দিই। ‘কবীর সিং’-এর পরে একটু ভাল চরিত্রের জন্য অডিশন দিচ্ছি, এই আর কী। এক ছবির পার্শ্বচরিত্র পরের ছবিতেই লিড রোল পেতে পারে এখন। ‘ব্রহ্মা জানেন’-এ কাজ করতে গিয়ে পারিবারিক অনুভূতি পেয়েছি। সেটা মুম্বইয়ে নেই। ওখানকার স্টুডিয়োপাড়ায় ঘুরলে স্ট্রাগলের রিয়্যালিটি চেক হয়ে যাবে। দে আর ভেরি প্রফেশনাল। তবে বাংলাও অনেক সিস্টেম্যাটিক হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে কাস্টিং ডিরেক্টর টেস জোসেফকে অ্যাসিস্ট করেছি। যদি যোগ্য হন, তা হলে কোনও কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।