অগ্নিমিত্রা পাল
জয়ী আসানসোল (দক্ষিণ)-এর ভূমিকন্যা। কাঁধে নির্বাচনী কেন্দ্রের উন্নয়নের দায়িত্ব। ‘মুখ্যমন্ত্রী কাজ করতে দেবেন তো?’ এই চিন্তাও সঙ্গী। একক জয় কতটা উপভোগ করছেন অগ্নিমিত্রা পাল? আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট জয়ী বিজেপি প্রার্থী।
প্রশ্ন: আপনি জিতলে মিঠুন চক্রবর্তী আসানসোল (দক্ষিণ)-এ আসবেন বলেছেন। কথা হল?
অগ্নিমিত্রা: গণনাকেন্দ্র থেকে শংসাপত্র নিয়ে এইমাত্র বাড়িতে পা রাখলাম। একটু বিশ্রাম নিয়ে দাদার সঙ্গে কথা বলব।
প্রশ্ন: সারা দিন দুশ্চিন্তায় ছটফট করলেন?
অগ্নিমিত্রা: গণনাকেন্দ্রে গিয়ে একটি চেয়ারে ঠায় বসে থেকেছি। এক বারের জন্য উঠিনি। জল, খাবার কিচ্ছু খাইনি। জল খাইনি তার কারণ, ওখানে টয়লেট নেই বলে। জয়ের শংসাপত্র হাতে পাওয়ার পর এক বার টয়লেটে গিয়েছি। এ বার পরিচ্ছন্ন হব।
প্রশ্ন: উদ্যাপন?
অগ্নিমিত্রা: অতিমারি ছেড়ে যায়নি। ফলে, এক্ষুণি ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্যাপন নয়।
প্রশ্ন: আনন্দেও বিষাদ। দলীয় জয় অধরাই থেকে গেল...
অগ্নিমিত্রা: সেটাই কাঁটার মতো বিঁধছে। দল জিতলে বাংলার উপকার হত। তখন মন থেকে উদ্যাপন করতে পারতাম।
প্রশ্ন: খামতি কোথায়?
অগ্নিমিত্রা: দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেটা ভাল বলতে পারবেন। অনেকেই বলছেন, ‘ধর্মগন্ধী’ বা ‘বহিরাগত’ তকমাগুলোই নাকি পরাজয়ের কারণ। আমি মানি না।
প্রশ্ন: লকেট চট্টোপাধ্যায় পরাজিত। অগ্নিমিত্রা পাল জয়ী। রহস্যটা কী?
অগ্নিমিত্রা: এটা আমার কাছেও রহস্য (হাসি)। মনে হয়, আমি পুরোপুরি রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে পারিনি বলে। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদদের বাংলা পছন্দ করছে না। সম্ভবত আমার জয়ের এটাই কারণ। তা ছাড়া, আমি আসানসোলের ভূমিকন্যা। বাবা দীর্ঘদিন অঞ্চলের স্বনামধন্য চিকিৎসক। সেই পরিচয়ও সাহায্য করেছে।
প্রশ্ন: জয়ের আনন্দের পাশাপাশি দায়িত্বও বেড়ে গেল?
অগ্নিমিত্রা: একদম। আসানসোল (দক্ষিণ)-এর প্রত্যন্ত গ্রামে অনেক কিছু নেই। আমি স্থানীয় মহিলাদের কথা দিয়েছি পানীয় জল, রাস্তা, শৌচালয় সহ একাধিক পরিষেবার ব্যবস্থা করে দেব। এখন দুশ্চিন্তা হচ্ছে, দেওয়া কথা রাখতে পারব তো?
প্রশ্ন: শাসকদল কাজ করতে দেবে না বলছেন?
অগ্নিমিত্রা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে বলেছিলেন, শাসকদলের পাশাপাশি বিরোধীরাও এই রাজ্যে সমান মর্যাদা পাবেন। রাজনীতিতে, কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের সমান অধিকার থাকবে। আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করি।
প্রশ্ন: আগামী দিনে শুধুই জনসেবা? আর নিত্যনতুন পোশাকে সাজাবেন না মানুষদের?
অগ্নিমিত্রা: ওটা আমার শিকড়। আমার পরিচয়। ওটা কিছুতেই ছাড়তে পারব না। ভাবছি, পেশাকে অঞ্চলের উন্নতিতে কাজে লাগাব। ওখানকার মহিলাদের কাজ শিখিয়ে আমার পেশায় যুক্ত করব।