গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
পরপর চার মডেল-অভিনেত্রীর আত্মহত্যার টলিউডের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। কী কারণে তাঁরা আত্মহত্যা করলেন? এই উত্তর খোঁজার পাশাপাশি উঠে এসেছিল আরও একটি প্রশ্ন। এঁদের মৃত্যুতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ইন্ডাস্ট্রি কতটা দায়ী? তারই খোঁজে এ বার এককাট্টা ফেডারেশন, আর্টিস্ট ফোরাম এবং বাংলা চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। উদ্যোগে রাজ্য মহুলা কমিশন।
বৃহস্পতিবার সল্টলেকে মহিলা কমিশনের দফতরে এক আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়। যোগ দেন সব পক্ষের প্রতিনিধিরা। ছিলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অন্য সদস্যরা, ফেডারেশনের তরফে স্বরূপ বিশ্বাস, শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, আর্টিস্ট ফোরামের তরফে ইন্দ্রাণী হালদার, সোহিনী সেনগুপ্ত, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, শঙ্কর চক্রবর্তী, লাভলী মৈত্র, দিগন্ত বাগচী, বিনোদন চ্যানেলের প্রতিনিধি কৌস্তুভী ঘোষ প্রমুখ।
এরও জবাব ইন্দ্রাণী দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘তখন আমি ক্রমাগত ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। ভাল পরিচালকেরা ডাকছেন না। ভাল ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছি না। খুব মনখারাপ। এক দিন কথাটা জানিয়েছিলাম সৌমিত্র জেঠুকে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি জবাব দিয়েছিলেন, আমি সত্যজিৎ রায়ের ছবির নায়ক। অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছি। তার পরেও সমানে লড়ে যেতে হচ্ছে। তোমায় লড়তে হবে না!’’
সে দিন থেকে ধৈর্য ধরতে শিখেছেন ইন্দ্রাণী। খারাপ সময়ে ক্রমাগত আউড়ে গিয়েছেন, সুদিন আসবে। তিনিও সুযোগ পাবেন। আজ নয় তো কাল। এই মন্ত্রই তিনি শেখাতে চান নতুন প্রজন্মকেও। অভিনেত্রীর যুক্তি, ভাল সময় উপভোগ করলে খারাপ সময়কেও মেনে নিতে হবে। জনপ্রিয়তা, মুঠো মুঠো বিজ্ঞাপনী ছবি, মাচার অনুষ্ঠানকেও খুশিমনে গ্রহণ করতে হবে। কোনও ধারাবাহিক ভাল টিআরপি-র অভাবে হঠাৎ বন্ধ হলে কপাল চাপড়ালে চলবে না। ইন্দ্রাণীর সংযোজন, ‘‘যখন ধারাবাহিক ‘তেরো পার্বণ’-এ অভিনয় করেছি, তখন সবাই বলতেন সিনেমায় নেমেছে। তখন সবাই নামতেন! এখন তো সিনেমার হাত ধরে সবাই উঠছেন। খ্যাতি, যশ, অর্থ, প্রতিপত্তি পাচ্ছেন। ইন্ডাস্ট্রি অনেক কিছু দিচ্ছে। তাই খারাপ সময় এলে ভেঙে পড়বেন না। অনুরোধ, আত্মহত্যা করবেন না।’’
নতুন প্রজন্মের মধ্যে তাই লড়াইয়ের আত্মবিশ্বাসটুকু দেখতে চান ইন্দ্রাণী। যাতে আর কেউ পল্লবী দে, বিদিশা দে মজুমদার, মঞ্জুষা নিয়োগী বা সরস্বতী দাস-দের মতো পরিণতির দিকে এগিয়ে না যায়। কারণ, তাতে আদতে কলুষিত হচ্ছে বিনোদন দুনিয়া। এমনটাই মত ‘শ্রীময়ী’র।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।