বিধ্বস্ত সুন্দরবন। ফাইল চিত্র
লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন রানাঘাটের বাড়িতে। কলকাতায় আর ফেরা হয়নি তাঁর। চিত্রনাট্যকার, উপস্থাপক সুজয়নীল বন্দ্যোপাধ্যায় এই লকডাউনেই রানাঘাটের বাড়িতে বসে ফেসবুক লাইভে তৈরি করে ফেললেন রেডিয়োর আবহ। “ঠিক করলাম গভীর রাতে, ১২টা নাগাদ সবাই যখন প্রায় ঘুমের বিছানায়, বাংলা সাহিত্যের পাতা থেকে কবিতা, গল্প পাঠ করব। এই শোয়ে ‘করোনা’ শব্দটাই বাদ রেখেছিলাম। আস্তে আস্তে দেখি নিয়মিত মানুষ আসছেন। টানা গল্প শুনছেন। তাঁদের বিভিন্ন কথা, নাম প্রকাশ না করে আমার মেসেজ বক্সে পৌঁছে যাচ্ছে।” উত্তেজিত সুজয়নীল।
এ ভাবেই জমে ওঠে রাতের ফেসবুক লাইভে রেডিয়ো আবহ। এর মাঝেই বাংলার আকাশে নেমে আসে দুর্যোগ, আমপান তছনছ করে দেয় মানুষের স্বাভাবিক জীবন। “আমার মনে হয় এত দিন তো আমি ফ্রিতেই এই লাইভ শো করেছি। দেখি না, আমার এই শোয়ের বিনিময়ে মানুষ যদি ন্যূনতম ১০০ টাকাও দেন। তা হলে শিল্পের মাধ্যমেও তো দুর্যোগের সামনে দাঁড়ানো মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারি! মানুষ যে ভাবে সাড়া দিয়েছেন আমি অভিভূত! দুটো শোয়েই ইতিমধ্যে ৬০,০০০ টাকা জোগাড় হয়েছে।” বললেন সুজয়নীল, যিনি অর্থের পুরোটাই আমপানে বিধস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে।
শুধু আমপানে বিধ্বস্ত মানুষের পাশেই নয়। সুজয়নীল অন্য দিকে গভীর রাতে ফেসবুক রেডিয়ো লাইভে মানুষের মনের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছেন। অবাক স্বরে বললেন সুজয়নীল, “জানেন, মেসেঞ্জারে এক মেয়ে লিখেছিলেন তাঁর বাবা তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। তিনি আবার লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই লড়াইয়ের গল্প জানাই আমি সকলকে।” এ ভাবেই মানুষের মনের কাছে, মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সুজয়নীলের ‘রেডিয়ো আবহ’ অতিমারি, অতি ঝড়ে দিকহারা মানুষের পাশে থাকছে।
আরও পড়ুন: ‘শক্তিমান’ সোনু সুদের উদ্যোগে বাড়ি ফিরছেন লকডাউনে আটকে পড়া বহু মানুষ
আরও পড়ুন: লকডাউনের মধ্যে প্রায় এক দশক পরে দেখা দিল এই লুপ্তপ্রায় ‘ভয়ঙ্কর’ চতুষ্পদ
সুজয়নীল বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি- ফেসবুক।