মনামী ঘোষ।
আজ একটু রিওয়াইন্ড করা যায় সময়টাকে?
মানে?
২০০১ বা ২০০২ সাল। একতা কপূরের অফিস থেকে যে ফোনটা এসেছিল, লোকে বলে যা নাকি মনামীর কেরিয়ার ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল...
ছিলই তো। রূপাদি (গঙ্গোপাধ্যায়) তখন মুম্বইতে। একতা কপূরের সিরিয়াল করছে। আমার রূপাদির সঙ্গে করা একটা ছবির ক্লিপিংস দেখে একতা কপূরের ভাল লেগে যায়। উনি তার পরের দিনই আমায় ফ্লাইটের খরচা দিয়ে মুম্বই নিয়ে যান। আমার স্ক্রিন টেস্ট হয়। তারপরই ওদের প্রোডাকশন টিম জানায় আমি লিড রোলে সিলেক্টেড। আজ রাত থেকে কাল রাত আউটডোরে শ্যুট। তিন মাস আমার বাড়ি যাওয়া বা অন্য সব কাজ বন্ধ! নাহ...তখন ওই অল্প বয়সে একদিনের মাথায় এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আর তখন একটা ডান্স রিয়্যালিটি শো এর কনট্রাক্ট সাইন করেছি। দুম করে চব্বিশ ঘন্টায় কলকাতা ছাড়া আমার সম্ভব ছিল না। আমাকে ওদের প্রোডাকশনের ইপি বলেছিল তুমি বুঝতেই পারছ না তুমি কি হারাচ্ছ! আমার বিপরীতে ছিল করন পটেল, আজ যিনি স্টার!
সত্যি কী কিছু হারিয়েছিলেন?
হুম! আফশোস তো হয়। যার বিপরীতে আমার চরিত্র ছিল সেই তো আজ ধারাবাহিকের বড় স্টার।
শেষ ১৯ বছর বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আপনাকে ছবিতে তেমন পেল না কেন?
দেখুন ছবির জন্য কোথাও কাউকে বলিনি। আপনি ভাববেন না, ‘ভূতের ভবিষ্যত’ বা ‘বেলাশেষে’— যে ছবিতেই কাজ করি না কেন আমি, দু ক্ষেত্রেই ওঁরাই আমায় ডেকেছিলেন।
আরও পড়ুন, ‘সঞ্জু’র এই ভুলগুলি খেয়াল করেছেন কি?
এরকম কখন মনে হয়নি ছবিই করি? ধারাবাহিক তো অনেক করলাম। এখন থাক...
নাহ। আমি কেরিয়ার শুরু করেছি ধারাবাহিক দিয়ে। আর এই যে টানা ধারাবাহিক করে আসা, তার সব লিড রোল করেছি আমি। আর লিড রোল করা মানে মিনিমাম দু’বছর কাজ চলেছে। এই ভাবে সময়টা পেরিয়ে গেছে। এখন ধারাবাহিক বন্ধ করে যদি ছবি করতে চাই তাহলে আমি যে জীবনযাত্রায় অভ্যস্থ হয়ে গেছি সেটা চালাতেই পারব না। ছবিতে পয়সা নেই তো। বড় কিছু নাম করা অভিনেত্রী ছাড়া ছবিতে ধারাবাহিকের চেয়ে কম টাকা পাওয়া যায়। এই যে ইচ্ছে হল ইওরোপ ট্যুর, ইচ্ছে হল তাইল্যান্ড! এ সব ছবির আশায় বসে থাকলে হত না। আমি অন্তত পারতাম না!
তাইল্যান্ড তো এস ভি এফ- র কাজে গিয়েছিলেন?
হ্যাঁ, ১০০ বছরে সিনেমা নিয়ে একটা শো হয়েছিল আমি অ্যাঙ্কারিং করেছিলাম।
বেড়ানো অভিনেত্রীর কাছে নেশার মতো।
‘মাটি’ ছবিতে অভিনয় করলেন কেন তা হলে?
দেখুন বিষয়টা সেরকম নয় যে ধারাবাহিকই করব, ছবি করব না। ছবিতে ভাল কাজ কে না করতে চায়? আমিও চাই। আর শৈবালদা-লীনাদির সঙ্গে আজ নয় সেই ‘পুণ্যিপুকুর’-এ ওঁদের সঙ্গেই তো কাজ।
একটানা ধারবাহিকের পর শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় আর লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কে সিনেমার পরিচালক হিসেবে কেমন লাগল?
একটা সময় ছিল যখন শৈবালদা ফ্লোরে ক্যামেরার সামনে আর লীনাদি প্রত্যেকটি সিন দেখছেন বসে। এখন ধারাবাহিকে সেটা হয় না। ওঁদের কাজ এত বেড়েছে... ‘মাটি’তে আবার ওই পুরনো ছবিটা খুঁজে পেলাম। দু’জনেই ফ্লোরে। বেশ লাগল...।
‘মাটি’ কেমন ছবি?
দেখুন সচরাচর যে ছবি হয়, ‘মাটি’ সেই ধারার একেবারেই নয়। আমি নিশ্চিত দর্শক এক অন্য ধারার ছবি দেখবেন। মেকিংটাও অন্যরকম। খুব চমৎকার করে ও পার বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। আমার দৃশ্যায়নেই তো মুসলিম বিয়ের গল্প আছে। এখন দেখা যাক দর্শক কী ভাবে নেয়। ইদানীং ছবির ক্ষেত্রে দর্শকের পালস্ বোঝা খুব শক্ত।
আরও পড়ুন, ফের হাজির ‘ডান্সিং আঙ্কল’, সঙ্গী এ বার হৃতিক! দেখুন ভিডিয়ো
আপনাকেও বোঝা বেশ শক্ত। হঠাৎ শোনা গেল আপনি বিয়ে কলেছেন...
আবার শুনতে পারেন। দেখুন ধারাবাহিকে বিয়ের দৃশ্য করে যদি আমি ইনস্টাগ্রামে ছবি দিই, ব্যাস অনলাইন মিডিয়া সেটা নিয়ে আমার বিয়ের খবর তৈরি করে দেয়। ব্যাস হয়ে গেল বিয়ে।
সত্যিকারের বিয়েটা কবে? প্রেম আছে তো?
হ্যাঁ আছে। তবে এখনি বিয়ে নিয়ে ভাবছি না!
আজ আবার একতা কপূর ডাকলেন এবং খুব সাহসী চরিত্রের জন্য, কী করবেন?
একদম যাবো। আমি সব দিক দিয়ে প্রস্তুত। আগে শারীরিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম শুধু। এখন মানসিক-শারীরিক দু’ভাবে প্রস্তুত আমি।