ইমন চক্রবর্তী।
ইমন চক্রবর্তী। নেটমাধ্যমে প্রায় প্রতি দিনই কদর্য মিম, ট্রোলের শিকার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গায়িকা। ‘সারেগামাপা’ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর যেন আরও তীব্র হয়েছে সেই আক্রমণ। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও আলোচনার রসদ জুগিয়েছে নেটাগরিকদের একাংশকে। স্বভাবে একরোখা ইমন সব ধরনের কটূক্তি এড়িয়ে গেলেও ভেঙে পড়েছিলেন এই ‘অকারণ’ দোষারোপে। গত শনিবার আনন্দবাজার ডিজিটালের লাইভে গায়িকা নিজেই জানিয়েছেন সেই কঠিন সময় পেরিয়ে আসার কথা।
জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ অনুষ্ঠানে ইমনের দলের অর্কদীপ মিশ্র বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই দানা বাঁধে যাবতীয় বিতর্ক। নেটাগরিকদের একাংশ দাবি করেন, ‘ঘুষ’ দিয়ে নিজের দলের প্রতিযোগীকে জিতিয়েছেন ইমন। মঞ্চে অর্কদীপের পাশে ইমনের থাকা নিয়েও আপত্তি তুলেছিলেন দর্শকদের একাংশ। অনুষ্ঠানে গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পিছপা হননি তাঁরা। বরাবরের মতো সব বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও নানা জনের নানা কটাক্ষের চাপে শেষমেশ নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেন ইমন। তিনি বলেন, “সারেগামাপা-র ঘটনাটা ঘটে যাওয়ার পর আমি ৩-৪ দিন ঘর থেকে বাইরে যেতে পারিনি। আমি একজন মহিলা। কিন্তু অন্য মহিলারাই আমার গায়ে কাদা ছিটিয়েছিলেন। আমি ভাবছিলাম, কোনও অন্যায় না করেও কেন আমাকে এ ধরনের কথা শুনতে হচ্ছে। আমার মনে হত, আমি বাইরের বেরলেই সকলে আমাকে খারাপ চোখে দেখছে।”
এমন সমস্ত দ্বিধা সরিয়ে এর পরেও ফেসবুকে লাইভে এসেছেন ইমন। নিজের দিকে ধেয়ে আসা একাধিক কটাক্ষ নিয়ে সোজাসুজি কথা বলেছেন গায়িকা। অর্কদীপকে বিজয়ী করা যে ভুল সিদ্ধান্ত নয়, সে কথাও জোর গলায় বলেছিলেন তিনি। কিন্তু বদলায়নি হাল। ইমনের কথার প্রত্যুত্তরে আরও কদর্য মন্তব্য ছুড়ে দেওয়া হয় তাঁর দিকে। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে অবশেষে মনোবিদের দ্বারস্থ হন ইমন। গায়িকার কথায়, “এই ঘটনাটি ঘটার পর আমাকে মনোবিদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। নেটমাধ্যমে আমার সমস্ত পোস্টের মন্তব্য বিভাগও আমি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমার রেওয়াজ, গান শোনা, বই পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।”
তবে হেরে যাওয়ার পাত্রী নন ইমন। সব ধরনের নেতিবাচকতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছেন তিনি। সঙ্গীত এবং শুভানুধ্যায়ীদের ভালবাসা তাঁর আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন শিল্পী। আপাতত গায়িকার হাতে একগুচ্ছ কাজ। সে সব নিয়েই দিন কাটছে তাঁর। একই সঙ্গে দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। দায়িত্ব নিয়েছেন নিজের এলাকায় পথে থাকা পশুদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার। একই সঙ্গে কাজ করে চলেছেন একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে।