মডেল: ঋতাভরী; ছবি: কৌশিক সরকার; চুলের সাজ ও মেকআপ: উজ্জ্বল দেবনাথ; পোশাক: রিচা ও মণীশ; পরিকল্পনা ও বিন্যাস: স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়; সহযোগিতা: অরিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
এ বার দিওয়ালিতে রমণীর বেশ কী?
কানে জবা ফুল, ক্লিভেজের কাছাকাছি হ্যাশ ট্যাগ ট্যাটু। আর যদি দিওয়ালির এফেক্ট জোরালো করতে চান হ্যাশ ট্যাগ ট্যাটুর পাশে এঁকে নিন দিয়া। ফ্যাশন ডিজাইনাররা বলছেন ট্যাটুই এ বার দিওয়ালির সেক্সি গয়না। মেহেন্দির দিনও শেষ। টেম্পোরারি ট্যাটু এঁকে নিন হাতে, পায়ে, পিঠে। ‘‘সময়টা ধনতেরসের। সেই থিমটাকে কাজে লাগিয়ে গোল্ড বা সিলভারের গুঁড়ো দিয়ে ট্যাটু আঁকুন। আর খুব সাহসী হতে চাইলে সেই ট্যাটু থাক কোমরের বাঁকে বা ক্লিভেজের ভাঁজে,’’ সেরা লুকের উপায় বলে দিচ্ছেন ফ্যাশন ডিজাইনার প্রণয় বৈদ্য। শুধু খেয়াল রাখবেন বডি পলিশিংটা যেন করা থাকে। ট্যাটু এঁকে পাঠিয়ে দিন বন্ধুদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে। দীপাবলির রকস্টার আপনিই।
আগের জমানার লাল-মেরুনের দিওয়ালি শেষ। জেনওয়াইয়ের ঝোঁক এখন সাদা, আসমানি, চ্যানেল ইয়েলো, লাল আর আগুন রঙের দিকে। জানালেন অভিষেক দত্ত। ‘‘শরীরের কার্ভ বোঝানোর জন্যই আজকের প্রজন্ম পোশাক বাছেন। সেই কারণে দিওয়ালিতেও লহেঙ্গা, লেয়ার্ড স্কার্ট, ডিপ নেক কাপ ব্লাউজ আর ক্রপটপের চল,’’ অভিষেকের বক্তব্য।
লহেঙ্গা চললেও দোপাট্টার দিন শেষ। এ বারের দিওয়ালিতে বাজার কাঁপাচ্ছে ‘কেপ’ দোপাট্টা। তবে প্রণয় বৈদ্য বলছেন, যাঁরা একটু সাহসী হতে চান তাঁরা ‘কেপ’ দোপাট্টা বাড়িতেই রেখে আসুন। হাজার হোক কালীপুজোর রাত, কালীপটকা যতই নিষিদ্ধ হোক আজকের প্রজন্ম বাজির পার্টিটা কিন্তু বাদ দেয় না। আগুন জ্বালানোর খেলায় দোপাট্টা বড়ই বেমানান। লহেঙ্গার ব্লাউজেই ঝরুক উষ্ণতার ফুলঝুরি। তবে ফ্যাশন ডিজাইনারেরা ব্লাউজের কাটের দিকে অবশ্যই নজর দিতে বলছেন। আগেকার মতো স্ট্র্যাপ দেওয়া অন্তর্বাস নয়, কাপ-ব্লাউজই এখন চল। এতে কার্ভটা সুন্দর বেরিয়ে আসে। টোনড পেট ও নাভি দেখানোটা এখন শিল্পের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সেই কারণেই অ্যাসেমিট্রিকাল স্কার্ট বা লহেঙ্গার এত কদর। ‘‘কিন্তু কেউ যদি পেট দেখাতে স্বচ্ছন্দ বোধ না করেন তিনি শর্ট ওয়েস্ট কোট চাপিয়ে নিতে পারেন।’’ পরামর্শ দিচ্ছেন অভিষেক।
দিওয়ালিই হোক বা কালীপুজো জেন ওয়াইয়ের অনেকেই ওয়েস্টার্ন ওয়্যার ছাড়া অন্য কিছু পরতে নারাজ। তাঁদের উৎসব ‘লুক’টা কেমন হবে?
অভিষেক বলছেন তাঁরা পরতে পারেন লং ওভার কোট। সঙ্গে আনারকলি। ইদানীং পার্টি থেকে প্রিমিয়ারে সোনম কপূরকে এই পোশাকেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। পরতে পারেন শর্ট শার্টের সঙ্গে লহেঙ্গা।
হেমন্তের হিম ভেজা রাতে সঙ্গে থাক একটা হাল্কা ওয়েস্ট কোট। ইদানীং জাম্পস্যুটের খুব চল। জাম্পস্যুটের সঙ্গে পরুন দু’হাত ভর্তি রঙ্গোলি রঙের অনেক কাচের চুড়ি। দিওয়ালির নতুন তারারা আপনার শরীরেই ফুটবে।
এত কিছুর পরেও মন যদি শাড়ি-শাড়ি করে, পরে নিতে পারেন ককটেল শাড়ি। সোশ্যাল মিডিয়ায় হানড্রেড শাড়ি প্যাক্টয়ের ছবি পোস্ট করতে হবে তো! আশ্চর্য, হলিউডের সেলিব্রিটিরা গাউনের বদলে সেক্স অ্যাপিল খুঁজছেন শাড়ির মধ্যে।
ডিজাইনারেরা অনেক ভাবে শাড়ি পরার নিয়মকানুন চালু করছেন। দিওয়ালিতে ঘাগড়া আর শাড়ি মিশে যাচ্ছে। শাড়ি এখন পরা যাচ্ছে জ্যাকেট, প্যালাজো, প্যান্ট, জিনসের সঙ্গেও। নতুন ধরনের শাড়ির তালিকায় রয়েছে ককটেল শাড়িও। তাতে ঐতিহ্যের দিকটাও যেমন থাকে, তেমনই থাকে গ্ল্যামারের দিক। বেশির ভাগ ককটেল শাড়িতেই আঁচল, কুচি সেলাই করে জোড়া দেওয়া থাকে। গাউনের মতো করে এই সব শাড়ি পরে ফেলা যায় নিমেষে।
‘‘সারা পৃথিবীর সেলিব্রিটিরা এখন শাড়ি পরছেন,’’ বললেন ডিজাইনার রিতু কুমার। এ বছরের ফ্যাশন উইকে রিতু বেনারসির বুনোটে তৈরি করেছিলেন ককটেল শাড়ি। কে জানত বেনারসিকে ব্যবহার করে এই রকম ককটেল শাড়ি বানানো যায়। ‘‘এই ধরনের ককটেল শাড়ির আঁচলের নকশায় সোনালি জরি আর মুগার কাজ করার রীতি ফিরে এসেছে। নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্যই এই ধরনের নকশার ব্যবহার শুরু হয়েছে। তাঁরা এই ধরনের নকশাদার শাড়ি সংগ্রহে রাখতে ভালবাসছেন,’’ বললেন রীতু কুমার।
ককটেল শাড়িতে শরীর প্রদর্শনের ব্যাপার থাকলেও কমনীয় ভাব ফুটিয়ে তুলতে এর জুড়ি নেই। ‘‘ককটেল শাড়ির ডিজাইন এমন ভাবে করা হয় যাতে নারী শরীরের পেলব ভাবটা ফুটে ওঠে,’’ বলছেন ডিজাইনার জয়া মিশ্র।
ডিজাইনার জ্যোতি খৈতান বলছেন, ‘শাড়ি পরার সময় দেখে নিতে হবে শাড়ি গাউনের রং আর স্টাইলিং যেন দিওয়ালির মেজাজের সঙ্গে মানানসই হয়,’’ বলছেন ডিজাইনার জ্যোতি খৈতান।
হোয়াটস অ্যাপের প্রোফাইল আর গ্রুপফিতে এই নতুন লুকে ঝলমলিয়ে উঠুন আপনি।