অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা
প্রায় দু’মাস হতে চলল অঙ্কুশের বাড়িতে এসে আটকে পড়েছেন ঐন্দ্রিলা সেন। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার দিন অঙ্কুশের বাড়িতেই ছিলেন অভিনেত্রী। তারপর থেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি। তবে শাপে বর হয়েছে বলা যায়। কারণ দু’জনে একসঙ্গে সময় কাটাতে পারছেন। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘এখন ট্রায়াল দিয়ে নিচ্ছি দু’জনে।’’
ঐন্দ্রিলা অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের দু’জনের কোনও দিনই গদগদ প্রেমের সম্পর্ক নয়। একসঙ্গে আড্ডা, ঘোরাফেরা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসি। এখনও সেটাই করছি। আমি আর মা এখানে এসে আটকে পড়েছি। চলে যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু কাকু-কাকিমা (অঙ্কুশের মা-বাবা) কিছুতেই যেতে দিলেন না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের একা ছাড়তে চাইছেন না। এত দিন এখানে আটকা পড়ে একটু তো অস্বস্তি হচ্ছে। আমাদের বাড়িটাও এত দিন বন্ধ পড়ে আছে। এখানে আমার জামাকাপড়ও প্রায় নেই। রোজ একই জামা কেচে ঘুরিয়েফিরিয়ে পরছি।’’
আর সময় কাটছে কী করে? কখনও ঘরের কাজ করে, তো কখনও রান্নাঘরেও টুকিটাকি কাজে সময় কেটে যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার। মার্চের শেষেই ইউরোপ টুরে যাওয়ার কথা ছিল দু’জনের। সেটা যাওয়া না হলেও অন্তত একসঙ্গে থাকতে পারছেন তাঁরা। দু’জনেই ওয়েব সিরিজ়ের ভক্ত। তাই অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে সিরিজ় দেখে। ঐন্দ্রিলার কথায়, ‘‘আমাদের একসঙ্গে সময় কাটানো মানে সিরিজ় দেখা। ‘মানি হাইস্ট’, ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’, ‘অসুর’... এগুলো সব দেখা হয়ে গিয়েছে। আর আমার পোষ্যও যেহেতু এখানে আছে, আমাদের পোষ্যদের নিয়েই অনেকটা সময় কেটে যায়। বিকেলের দিকে ওদের নিয়ে কমপ্লেক্সের নীচে নামি। ওদের একটু হাঁটিয়ে নিয়ে আসি।’’ আর আছে রান্না। এর মধ্যেই প্রায় পাঁচ-ছ’বার কেক তৈরি করেছেন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘অঙ্কুশ ডিম খেতে ভালবাসে বলে ডিম বাড়িতে থাকেই। আর আমরা দু’জনেই ভীষণ চকলেট খাই বলে কেকের উপকরণ সব হাতের কাছেই পেয়ে যাই। তাই কেকটা করছি। এক দিন এগ হোয়াইট বিট করে ওয়াটার পোচ করে একটা রান্না করেছিলাম। ওটা অঙ্কুশের খুব ভাল লেগেছিল। আর আছে নাচ। আমি নাচলে ও ভিডিয়ো করে দিচ্ছে আর ও নাচলে আমি।’’
তবে পরিবারকেও সঙ্গ দেন দু’জনেই। সন্ধে হলেই লুডো নিয়ে বসে পড়েন পরিবারের সকলে। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘এই লুডোর ঘুঁটি আমায় খুব সাহায্য করেছে। ঐন্দ্রিলার মা আর আমার সম্পর্ক অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আমি খুব লাজুক। ঐন্দ্রিলার মতো চট করে মিশতে পারি না। ও যেমন বরাবরই আমার মায়ের খুব ক্লোজ়। আমি বরং গুটিয়ে থাকতাম। কাকিমার সঙ্গে অত কথা হত না এতটা সময় উনি সামনে থাকছেন বলে সেই আড় ভেঙে গিয়েছে।’’
সম্পর্ক যে পোক্ত হচ্ছে এই কোয়রান্টিনে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এত দিন শুটিং বন্ধ, বাড়িতে বসে বেশ চিন্তিত ঐন্দ্রিলা। ‘‘আমরা কাজের মানুষ। এ ভাবে বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগছে না। তার পরে ইন্ডাস্ট্রির অনেকের হাতেই টাকাপয়সা নেই। নিজের চেনাজানার মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁদের হয়তো সাহায্য করছি এখন। কিন্তু কত দিন সাহায্য করতে পারব জানি না।’’ তবে ভরসা জোগাচ্ছেন অঙ্কুশ। অভিনেতা সদ্য শুটিং শেষ করেছেন ‘কেস জন্ডিস’-এর। তার স্ট্রিমিংও শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘‘একটু একটু করে কাজ শুরু হচ্ছে। আর আমার ভিডিয়োর ডিওপিতে ঐন্দ্রিলার নাম যাচ্ছে।’’ বলেই হাসলেন অঙ্কুশ। সেই পর্যন্ত নিজেকে তো পজ়িটিভ থাকতেই হবে। তার জন্য কখনও অভিনেতা ‘ঘুঙরু’র তালে নেচে উঠছেন, কখনও ঐন্দ্রিলার সঙ্গে মজার ভিডিয়ো শুট করছেন। এ ভাবেই কোয়রান্টিনে চলছে নতুন সংসারের ট্রায়াল...