কবীর সুমন। —ফাইল চিত্র।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়েই চিকেন স্যান্ডউইচ খাওয়ার বায়না ধরলেন অসুস্থ সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। ‘গানওলা’র সেই আবদার মঞ্জুরও করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, আগের তুলনায় পঁচাত্তর বছর বয়সি শিল্পীর শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনও তাঁর সঙ্কট কাটেনি। হাসপাতাল সূত্রে আরও খবর, রাতে সুমনকে খাবার দেওয়া হলে তিনি চিকেন স্যান্ডউইচ ছাড়া অন্য কিছু খেতে চাননি। তার পর স্যান্ডউইচ এনে তাঁকে খাওয়ানো হয়।
সুমনের ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে। হৃদ্যন্ত্রেও একাধিক সমস্যা রয়েছে। তাঁর রক্তে শর্করার পরিমাণও অনিয়ন্ত্রিত বলে জানা গিয়েছে। উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যাও রয়েছে তাঁর। এখনও সুমনকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। শিল্পীর চিকিৎসায় হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ, ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এর চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ সুমনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে রয়েছেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময়ে বুকে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় কাবু ছিলেন শিল্পী। মেডিসিন এবং হৃদ্রোগ (কার্ডিয়োলজি) বিভাগের চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে শিল্পীর চিকিৎসা শুরু করেন। হাসপাতালের একটি সূত্রে সোমবার বিকেলেই জানা যায়, স্থিতিশীল রয়েছেন এই গায়ক, গীতিকার এবং সুরকার। যে শারীরিক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার চেয়ে কিঞ্চিৎ উন্নতি হয়েছে স্বাস্থ্যের।
সোমবার বিকেলের দিকে নিজেই নিজের শারীরিক পরিস্থিতির খবর জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন সুমন। সেখানে তিনি লেখেন, “শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছি।” একই সঙ্গে অনুরাগী এবং হিতাকাঙ্ক্ষীদের আশ্বস্ত করে তিনি লেখেন, “শিগগিরি সেরে উঠব। চিন্তা করবেন না।”
পঁচাত্তরের ‘তরুণ’ কবীর সুমন এখনও সঙ্গীতের নদীতে বহমান সুর-স্রোতের মতো। বর্তমানে বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সুমন একটা সময় প্রত্যক্ষ রাজনীতিতেও এসেছিলেন। তৃণমূলের হয়ে যাদবপুর থেকে লোকসভার সাংসদ হন তিনি। যদিও পরবর্তী কালে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব কিছুটা বেড়েছিল। পরে তা মিটেও যায়। আর কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হননি তিনি। এখন নিজেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সমর্থক’ বলে থাকেন সুমন। এর আগে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সুরে বার বার সরব হন তিনি। বয়সজনিত কারণে ইদানীং মাঝেমধ্যেই তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন শিল্পীর কয়েক জন ঘনিষ্ঠ। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় শিল্পীকে।