ঘটনাটি হয়তো নেহাত কাকতালীয়। তবে অতিমারি-বিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে এর গুরুত্ব এড়িয়ে যাওয়া যায় না। শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সিনেমা হলে সত্তর শতাংশ দর্শক প্রবেশ করতে পারবেন। আগামী সপ্তাহে দীপাবলি উপলক্ষে মুক্তি পাচ্ছে রোহিত শেট্টি পরিচালিত এবং অক্ষয়কুমার অভিনীত ‘সূর্যবংশী’। বড় বাজেটের এই হিন্দি ছবির ব্যবসার দিকে তাকিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হলমালিকেরা। পুজোয় রাজ্যে মুক্তি পেয়েছিল পাঁচটি বাংলা ছবি। পঞ্চাশ শতাংশ দর্শক নিয়ে মোটের উপরে আশাপ্রদ ব্যবসা করেছে ছবিগুলি। ‘সূর্যবংশী’ রিলিজ়ের আগে রাজ্যে একশো শতাংশ দর্শকের প্রবেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন হলমালিকেরা। তবে পঞ্চাশ শতাংশ থেকে বেড়ে সত্তর হওয়ায় তাঁরা খুশি।
নবীনা সিনেমা হলের মালিক নবীন চৌখানীর কথায়, ‘‘মানুষ যে সিনেমা হলে আসতে চাইছেন, সেটা পুজোর ছবিগুলির ব্যবসা থেকে আভাস পাওয়া গিয়েছিল। ‘গোলন্দাজ’ খুবই ভাল ব্যবসা করেছে। দর্শকের প্রবেশ সত্তর শতাংশ হওয়ায় খুব খুশি আমরা।’’ হলমালিক এবং এগজ়িবিটর শতদীপ সাহার কথায়, ‘‘একশো শতাংশ চেয়েছিলাম। সত্তর হওয়ায় খুশি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে একশো শতাংশ দর্শক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’
অগস্ট মাসে অক্ষয়ের ‘বেল বটম’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল সিনেমা হলে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে তখন মহারাষ্ট্রে সিনেমা হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে রাজ্যের সরকার। লাভের কথা না ভেবে হল মালিকদের পাশে দাঁড়াতে ওই পদক্ষেপ করেছিলেন অক্ষয় ও ছবির প্রযোজক। পুজোর সপ্তাহখানেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বারবার বৈঠকের জেরে মহারাষ্ট্রে হল খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। এখনও অবধি পঞ্চাশ শতাংশ দর্শকের প্রবেশ রয়েছে সেখানে। তবে শতদীপের কথায়, ‘‘দীপাবলির পরেই মুম্বই একশো শতাংশ করে দিতে পারে।’’
ইতিমধ্যে রাজস্থান, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা একশো শতাংশ দর্শকের ছাড় পেয়েছে। ১ নভেম্বরের পরে তামিলনাড়ুতে প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ করা যাবে। দীপাবলির সময় থেকে দিল্লি (৫০ শতাংশ), গুজরাত (৬০ শতাংশ), উত্তরপ্রদেশে (৫০ শতাংশ) একশো শতাংশ আসনসংখ্যা করে দেওয়া হবে বলে মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির পর্যবেক্ষকেরা।
সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতির নিরিখে হলে দর্শক প্রবেশের হার নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট রাজ্য। পুজোর পরে বাংলায় করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হলেও, ব্যবসার দিকে নজর রাখছে রাজ্য সরকার। হিন্দি ছবি নিয়ে বাংলার মানুষের আগ্রহ রয়েছে। দর্শক ও হলমালিকদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ থাকছে এই সিদ্ধান্তে।