এ ছবি চোখের আরাম, মনেরও

কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হল গৌতম ঘোষের ছবিকলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির স্ক্রিনিংয়ের আগে ‘রাহগির’-এর অভিনেত্রী তিলোত্তমা সোম বলছিলেন, ‘‘শিশু অবস্থায় আমাদের ত্বক স্পর্শকাতর হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা এমন হয়ে যাই যে, অনেক আঘাতই দাগ ফেলে না।’’

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

ছবিতে আদিল, তিলোত্তমা, নীরজ

ঘর, ঘরের মধ্যে ঘর, মুখোমুখি সংলাপ... এ বঙ্গের অধিকাংশ পরিচালকেরই চৌখুপি চৌহদ্দিতে আটকে থাকার প্রবণতা রয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গৌতম ঘোষের ‘রাহগির’ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ দেয়। দু’চোখ মেলে দেখেও ছবির ক্যানভাসের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায় না। দৃশ্যপটের সবুজের ছোঁয়া যেন চরিত্রদের মনেও। মাত্র তিনজন প্রান্তিক মানুষের মধ্য দিয়ে গোটা দেশকে তুলে ধরেছেন পরিচালক।

Advertisement

কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির স্ক্রিনিংয়ের আগে ‘রাহগির’-এর অভিনেত্রী তিলোত্তমা সোম বলছিলেন, ‘‘শিশু অবস্থায় আমাদের ত্বক স্পর্শকাতর হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা এমন হয়ে যাই যে, অনেক আঘাতই দাগ ফেলে না।’’ ছবিতে তিলোত্তমার চরিত্র নাথনিও তেমনই। যত সমস্যাই আসুক, কী নির্লিপ্তির সঙ্গে সে তা গ্রহণ করে। গরিবের বাড়িতে পেটের চিন্তার চেয়ে বড় কিছু আছে নাকি!

গৌতম বলছিলেন, ‘‘এখন বিনা স্বার্থে কেউ কিচ্ছু করে না। সংবাদপত্র খুললেই দেখা যায় চার দিকে স্বার্থের হানাহানি। সেই জায়গা থেকেই ছবির ভাবনা।’’ প্রফুল্ল রায়ের একটি কাহিনির ভিত্তিতেই চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন পরিচালক। নাথনি, লাখপতি (আদিল হুসেন), চপটলাল (নীরজ কবি) তিনটি চরিত্রই মাটির নিগড়ে বাঁধা। তিন চরিত্রের রূপক আলাদা পরত আনে। গৌতমের এ ছবিতে কোনও ভনিতা নেই। আড়ম্বরবর্জিত কাহিনির সরল চলনই ছবির আকর্ষণ। পথ চলতে চলতে মিলে যাওয়া কিছু মানুষের কথন ‘রাহগির’। মনে হয় যাক, কিছু ভাল মানুষ এখনও আছে!

Advertisement

চরিত্র যতটা গল্প বলে তার চেয়েও বেশি বলে ক্যামেরা। ঝাড়খণ্ডের নানা জায়গায় শুট করেছেন গৌতম। অকৃপণ ভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছেন। ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফার তাঁর ছেলে ঈশান ঘোষ। পর্দা জুড়ে সবুজের মেলা বসিয়ে দিয়েছেন তিনি । গৌতমের কিছু স্টাইলের সঙ্গে ঈশানের কাজের মিল রয়েছে। দৃশ্যায়নে সঙ্গত করেছে শব্দ। তার কৃতিত্ব অনির্বাণ সেনগুপ্তের।

গৌতমের ছবিতে বরাবরই রাজনীতি, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি উঠে আসে। এখানেও তা এসেছে। তবে তা কাহিনির মূল পাথেয় হয়ে ওঠেনি। নাথনির স্বামী ধর্মার (ওমকারদাস মানিকপুরি) রাজনীতিতে যোগদান বা পিকনিক পার্টির নাচগান— অনুচ্চ স্বরে অনেক কিছুই বলে দেয় ‘রাহগির’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement