‘মাস্টার অংশুমান’ ছবির ফার্স্ট লুক পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলায় এই প্রথম রায় বাড়ির বাইরে বেরিয়ে সত্যজিৎ রায়ের কোনও গল্প অবলম্বনে বড় পর্দায় ছবি তৈরি হল। গল্পের নাম ‘মাস্টার অংশুমান’। নেপথ্যে রয়েছেন পরিচালক সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়। এর আগে ২০১৯ সালে ফেলুদার আবির্ভাবের ৫০ বছর উপলক্ষে সাগ্নিক তৈরি করেছিলেন তাঁর তথ্যচিত্র ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অফ রেজ় ডিটেকটিভ’। এই তথ্যচিত্রের জন্য পরিচালকের ঝুলিতে এসেছিল জাতীয় পুরস্কার। এ বার মুক্তির অপেক্ষায় ‘মাস্টার অংশুমান’। মুক্তির আগে ছবির ফার্স্ট লুক এবং টিজ়ার রইল আনন্দবাজার অনলাইনে।
সন্দীপ রায়ের সহকারী হিসাবে দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা সাগ্নিকের। এই ছবির স্বত্ব পাওয়া সম্ভব হল কী ভাবে? সাগ্নিক বললেন, ‘‘১৯৮৫ সালে শারদীয়া দেশ পত্রিকায় গল্পটা যখন প্রকাশিত হয়, তখন আমি ক্লাস ফোর কি ফাইভে পড়ি। পরবর্তী সময়ে বাবুদাকে (সন্দীপ রায়) গল্পটা নিয়ে ছবি করতে বললে উনি রাজি হননি। কারণ তত দিনে উনি ‘ফটিকচাঁদ’ করে ফেলেছেন।’’ এই প্রসঙ্গেই সাগ্নিক জানালেন, সন্দীপ রায়কে নিজের মনের কথা বলতেই তিনি রাজি হয়ে যান। সাগ্নিকের কথায়, ‘‘বাবুদা আমাকে বলেছিলেন যে, গল্পটা আমার জন্যই তিনি রেখে দেবেন। আমি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’
প্রেক্ষাপট আধুনিক হলেও মূল গল্পের কাঠামোকে ছবিতে অপরিবর্তিত রেখেছেন নির্মাতারা। ছবি: সংগৃহীত।
এক সময় একটি জাতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘মাস্টার অংশুমান’ ওয়েব সিরিজ়ের প্রস্তাব নিয়ে সাগ্নিকের কাছে আসেন। কিন্তু বাজেট সংক্রান্ত সমস্যায় তা ফলপ্রসূ হয়নি। সাগ্নিক বড় পর্দার জন্য ছবিটি নিজেই প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নেন। এগিয়ে আসেন শ্রীপর্ণা মিত্র। মূল গল্পের প্রেক্ষাপট রাজস্থানের উদয়পুর। সাগ্নিক তার গল্প সাজিয়েছেন দার্জিলিংয়ের প্রেক্ষাপটে। বললেন, ‘‘সত্যি বলতে রাজস্থানের বাজেট আমাদের ছিল না। আবার ফেলুদার প্রথম অভিযান দার্জিলিংয়ে। তাই শেষে আমরা দার্জিলিংকেই বেছে নিয়েছিলাম।’’
পরিচালকের সঙ্গেই এই ছবির চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন শ্রীপর্ণা। এর আগে অনীক দত্তর ‘অপরাজিত’ ছবির গবেষণা এবং চিত্রনাট্যের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন তিনি। এই গল্পের ক্ষেত্রে কী কী চ্যালে়ঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে? শ্রীপর্ণা বললেন, ‘‘সাধারণত ফেলুদার গল্পে একটা কাঠামো থাকে। সত্যজিৎ রায়ের এই গল্পটা একটু আলাদা। অংশুমান, বিশুদা এবং কৃষ্ণন ছাড়া অন্য চরিত্রগুলো সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নেই। সেটাকে আমাদের ডেভেলপ করতে হয়েছিল।’’ তবে ছবির গল্প সমকালীন করে বা চরিত্রদের আরও ছোটখাট ডিটেল যুক্ত হলেও মূল গল্পের কাঠামো থেকে তাঁরা সরে আসেননি বলেই দাবি করলেন সাগ্নিক এবং শ্রীপর্ণা।
২০২১ সালে ছবির ঘোষণা করেছিলেন নির্মাতারা। সে বছরেই প্রথম ভাগের শুটিং সেরে ২০২২ সালে বাকিটা শেষ করা হয়। ছবিতে অংশুমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্যমন্তক দ্যুতি মৈত্র এবং কৃষ্ণনের চরিত্রে রয়েছেন নবাগত সোম চট্টোপাধ্যায়। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন রজতাভ দত্ত, প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী উপেন্দ্র, সুপ্রিয় দত্ত, দেবেশ রায়চৌধুরী, রবি খেমু প্রমুখ। ছবিটি আগামী ৫ মে মুক্তি পাচ্ছে।