মিস শেফালি। —ফাইল চিত্র
চলে গেলেন মিস শেফালি। বৃহস্পতিবার ভোর বেলা সোদপুরের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কলকাতার ক্যাবারে কুইন।
তাঁর ভাগ্নি আলভিনা সাহা জানিয়েছেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ভুগছিলেন কিডনির সমস্যাতেও। তবে ভোর বেলার হার্ট অ্যাটাক একেবারেই হঠাৎ। এই তো দু-তিন সপ্তাহ আগে বই বেরলো। খুব খুশি ছিল। তবে শেষ কয়েকটা দিন সমানেই বলছিল আমি আর বাঁচব না। এ বার চলে যাব...’’। আলভিনাই জানান যে, মিস শেফালির দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন এর আগে হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন তিনি। ৭৬ বছর বয়সে জীবনাবসান হল এই রাতপরির।
সত্তরের দশকে মিস শেফালি ওবেরয় গ্র্যান্ডের প্রিন্সেস ডিস্কোর স্টার ডান্সার। রাতের কলকাতা সম্মোহিত তাঁর নামে। থিয়েটারে এলেন প্রশংসাও পেলেন। সে সময়ের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত থেকে অভিজাত সমাজ তাঁকে গ্রহণ করেছিল সাদরে। বাড়িতে কেউ গেলেই শেষের দিকে মিস শেফালি মেলে ধরতেন তাঁর পুরনো দিনের উজ্জ্বল কথা।
অ্যালবামে অজস্র ছবি। তার মধ্যে একটা ছবি বিশেষ করে দেখাতেন। সেই ছবিতে দেখা যায় বিশ্বরূপা থিয়েটারে ‘চৌরঙ্গি’ নাটকের সহস্র রজনীর অভিনয়ে সহাস্য নাটকের দলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। এ সব আজ স্মৃতি।
‘চৌরঙ্গি’ নাটকে ক্যাবারে ডান্সার কনি-র চরিত্রে অভিনয় করেই মধ্যবিত্ত গৃহস্থের ঘরে হইচই ফেলেছিলেন মিস শেফালি। বাংলা থিয়েটারে ক্যাবারের সেই শুরু।
আরও পড়ুন: রাতের যান আতঙ্কে কি নয়া সংযোজন অ্যাম্বুল্যান্স
কী পেয়েছিলেন তিনি? পেটের টানে ক্যাবারে শেখা উদ্বাস্তু পরিবারের এই কন্যার গোটা কেরিয়ারে শিল্পীর সম্মান জোটেনি। কী পরিচয় তাঁর, নর্তকী না নটী? আর যা-ই হোক, তাঁকে অভিনেত্রী পরিচয় দেয় না বাঙালি। বহুকাল পরে ফিরে আসেন তিনি তাঁর নিজস্ব আলোয়। সেই নিয়েই কাটছিল দিন। হঠাৎ আজ ভোরবেলা ঝরে পড়লেন রাতের শেফালি।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে সাহিত্য উৎসব