কৌশানী-বনি
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় চার বছর কাটিয়ে ফেললেন। জীবন কতটা বদলেছে?
উ: দেখুন, ‘বরবাদ’-এর পরে সে ভাবে পরিচিতি পাইনি। প্রায় দেড় বছর বসে ছিলাম। নিজেকে ক্রমশ গ্রুম করার চেষ্টা করেছি। এখন তো জিমের পাশাপাশি ডায়েটিংটাও মন দিয়ে করি। তবে ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ থেকে অনেকটাই উন্নতি করেছি। আমি রাজদা’র (চক্রবর্তী) কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, ‘যোদ্ধা’য় ওঁকে অ্যাসিস্ট করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেটাই অভিনয়ের খুঁটিনাটি শিখতে সাহায্য করেছে। জনপ্রিয়তাও দিয়েছে। এখন তো বাইরে শো করতে গেলেও প্রচুর মানুষ ঘিরে ধরে। এগুলো উপভোগ করছি।
প্র: প্রথম থেকেই কি স্বপ্ন ছিল অভিনেতা হওয়ার?
উ: বাবা-মা সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও আমার প্রথম প্রেম ছিল ক্রিকেট। সম্বরণদার (বন্দ্যোপাধ্যায়ের) ক্যাম্পে খেলতাম। হঠাৎই টাইফয়েড হয়। তার পরে শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ দুর্বল হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই ক্রিকেটের ইতি। এর পরে পাপা (পরিচালক অনুপ সেনগুপ্ত) বলেছিল, ‘তুই আমাকে অ্যাসিস্ট কর।’ পাপার সহকারী হিসেবে কাজ করতে গিয়েই গ্ল্যামার দুনিয়ার প্রেমে পড়ে যাই। তবে টাইফয়েডের পরেই ওজন বেড়ে গিয়েছিল (৯২ কেজি)! তার পর দেড় বছরে ৩০ কেজি ওজন কমিয়েছিলাম। সেই শুরু...
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে চেনাশোনা থাকার জন্যই কি শুরুটা এত মসৃণ হল?
উ: অভিনয়ে আসার চার বছর আগে থেকেই আমি নানা জায়গায় নিজের পোর্টফোলিও পাঠিয়েছি। অনেকেই বলতেন অপেক্ষা করতে। রাজদা আমার যে ছবি দেখে সিলেক্ট করেছিল, সেটা দেখলে আপনি আঁতকে উঠবেন! রোগা চেহারা, চুল পেতে আঁচড়ানো... কিন্তু চরিত্রের সঙ্গে মানানসই বলে সুযোগটা পেয়েছিলাম।
র্যাপিড ফায়ার
নির্জন দ্বীপের সঙ্গী: অবশ্যই কৌশানী
সুপারহিরো: থর
ছুটি কাটানোর ঠিকানা: বালি
মহিলাদের কোন বিষয়টি আকর্ষক: কথা বলার ধরন
পছন্দের খাবার: বিরিয়ানি
অবসর যাপন: প্লে স্টেশন
প্র: আপনার বাবা খ্যাতনামা পরিচালক। অথচ তাঁর কোনও ছবিতে আপনাকে দেখা গেল না কেন?
উ: পাপা বলেছিল, ‘আমি তোকে ল়ঞ্চ করব না। কারণ সকলে বলবে, বাবার হাত ধরে এসেছে।’ তাই পাপা নজর রাখত যেন নিজের যোগ্যতায় কাজের সুযোগ পাই।
আরও পড়ুন: ‘আমি কোনও লবিতে নেই’
প্র: নিন্দুকেরা বলে, আপনার মা ইম্পার পদাধিকারী বলেই এসভিএফ আপনাকে সুযোগ দিয়েছে...
উ: এটা আমিও শুনেছি। সত্যিটা হল ‘বরবাদ’-এর সময়ে মা (পিয়া দাস) ইম্পাতে ছিল না। ‘পারব না...’র শুরুর সময়ে মা ইম্পাতে যোগ দেয়। তখনও মা চেয়ারম্যান হয়নি। কিন্তু পরিশ্রমটা নিজেকেই করতে হয়েছে।
বনি
প্র: ইতিমধ্যে কয়েকটা ছবিতে অভিনয় করলেও কেরিয়ারে এখনও সুপারহিট নেই...
উ: সিনেমার ট্রেন্ডটাই তো বদলে গিয়েছে। এখন দর্শকের চিন্তাধারাতেও পরিবর্তন এসেছে। টলিউডে ক’টা সুপারহিট ছবি শেষ দু’ বছরে দেখেছেন?
প্র: সে জন্যই কি দেব, জিতের পরে আর কোনও নতুন সুপারস্টার দেখা যাচ্ছে না?
উ: এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। হয়তো দর্শকের রুচি ও মনোভাব বদলে গিয়েছে। দর্শক এখন হিসেবি। অথচ আমরা নিজেদের পরিশ্রমে তো কোনও ফাঁক রাখছি না। কমেডি, অ্যাকশন, রোম্যান্স... সব ধরনের কাজই চেষ্টা করছি।
প্র: তা, বাস্তবেও নাকি আপনি খুবই রোম্যান্টিক? কৌশানীর সঙ্গে তো চুটিয়ে প্রেম করছেন...
উ: হ্যাঁ। আমি আর কৌশানী ডেট করছি। ‘পারব না...’র পর থেকেই একে অপরকে পছন্দ করতে শুরু করি। তবে কয়েক মাস পর থেকে সম্পর্কটা দানা বাঁধে। কৌশানী খুবই পরিণত মনের মেয়ে। একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সুবাদে ও আমাকে বোঝে। অহেতুক সন্দেহ করে না। দু’জনেই একে অপরকে স্পেস দিই।
প্র: আপনাদের দুই পরিবারের প্রতিক্রিয়া কী?
উ: দুই বাড়ি থেকেই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে। আমার টেনশন ছিল কৌশানীর বাবাকে নিয়ে। কারণ ওর বাবা ইনকাম ট্যাক্স অফিসার। বুঝতেই পারছেন ইঙ্গিতটা!
প্র: বেশ বুদ্ধি করেই তো ইনকাম ট্যাক্স অফিসারকে আত্মীয় বানিয়েছেন!
উ: কৌশানী বলে, ‘যদি তুমি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছ, তা হলে বাবাকে বলে দেব।’ সত্যিটা হল, আঙ্কল ও আন্টি খুবই ভাল মানুষ।
ছবি: দেবর্ষি সরকার;
পোশাক: সুরভি পানসারি;
মেকআপ: প্রসেনজিৎ বিশ্বাস
লোকেশন ও ফুড পার্টনার: হলিডে ইন কলকাতা এয়ারপোর্ট