ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
প্রথম বার একসঙ্গে কাজ করেছেন। কিন্তু বরুণ ধওয়ন এবং অনুষ্কা শর্মাকে প্রথম বার জুটি বাঁধার অভিজ্ঞতা জিজ্ঞেস করলে দু’জনেই খুব কড়া চোখে তাকিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করছেন, ‘‘আপনারা শিয়োর, এটা আমাদের প্রথম ছবি?’’ তার পর নিজেরাই হেসে গড়িয়ে গিয়ে বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, এটাই আমাদের প্রথম ছবি! আপনাদের ধাঁধায় ফেলতে পাল্টা প্রশ্ন করছি!’’
এই হল বরুণ আর অনুষ্কা, থুড়ি ‘সুই ধাগা: মেড ইন ইন্ডিয়া’র মৌজি-মমতার কেমিস্ট্রি। নায়ক-নায়িকা দু’জনেই খোশমেজাজে। বরুণ বরাবরের মতোই ফ্ল্যামবয়েন্ট। পরনে জিনস, সাদা জ্যাকেট এবং টিশার্ট। অনুষ্কা পোর্সেলিন-সুন্দরী। গত বার ‘পরি’র প্রচারে কলকাতায় এসে জামদানি কাজের সাদা শাড়ি কিনেছিলেন, একটা চেকার্ড ব্লাউজ়ের সঙ্গে সেটাই পরে চলে এসেছিলেন তিনি। সামনে পনির গুলনার, তন্দুরি আলু, চিকেন লাহোরি, চিকেন লাসুরি, মাটন বুরা সাজিয়ে দেওয়া হল। অনুষ্কা পনিরটা দেখে লোভ সামলাতে পারলেন না। ডায়েট ভুলে খেতে শুরু করে দিলেন।
প্রশ্ন করা হল, দু’জনের জুড়িদারিতে কে ‘সুই’ আর কে ‘ধাগা’? বরুণ অনুষ্কাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘আর ইউ দ্য সুই?’’ খেতেই খেতেই ঘাড় নেড়ে অনুষ্কা বললেন, ‘‘ইয়েস!’’ বরুণের মন্তব্য, ‘‘তা হলে আমিই ধাগা!’’ দু’জনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? ‘‘দারুণ! আমরা প্রায় একই বয়সি, মানে আমি অনুষ্কার চেয়ে ছ’মাসের ছোট...’’ বরুণের কথার ফাঁকেই চোখ পাকিয়ে তাকালেন অনুষ্কা, ‘‘আচ্ছা তিন মাসের ছোট?’’ খুনসুটি বরুণের। অনুষ্কা বললেন, ‘‘আমি জানি না ও কেন নিজের বয়স লুকোয়! কিছুতেই মানতে চায় না, আমি ওর চেয়ে এক বছরের ছোট!’’ প্রশ্নের উত্তরে ফিরে গেলেন বরুণ, ‘‘দু’জনেরই রসিকতা করার স্বভাব। এবং খুব অদ্ভুত রসবোধ আমাদের! সো ইট ওয়াজ় ভেরি কুল ওয়র্কিং উইথ হার। শরৎ (কাটারিয়া, পরিচালক) এত ভাল স্ক্রিপ্ট লিখেছে যে, কাজটাও খুব সুন্দর করে করতে পেরেছি আমরা।’’
আরও পড়ুন: ‘পরিশ্রম করেছি অনেক, ঝাড়ু লাগানো, গোবর দেওয়া, এ সবও শিখেছি’
মধ্যপ্রদেশের চান্দেরির রাস্তায় ১০ ঘণ্টা টানা সাইকেল চালাতে হয়েছিল বরুণকে। পিছনে অনুষ্কা। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বরুণ বললেন, ‘‘খুব গরম ছিল। ফলে বেশ কঠিন ছিল ব্যাপারটা। কয়েক বার পড়েও গিয়েছি।’’
র্যাপ ইট র্যাপিড
প্র: বরুণের কোন ব্যাপারটা সবচেয়ে চার্মিং লাগে?
অনুষ্কা: সেন্স অফ হিউমার। যে কোনও পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখে।
প্র: অনুষ্কার কোন ব্যাপারটা সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং?
অনুষ্কা: (হাসতে হাসতে) উনি অলরেডি জানেন আমি চার্মিং!
বরুণ: না, না অনুষ্কা ইজ় ভেরি চার্মিং!
অনুষ্কা: এক জনকে ইন্টারেস্টিং তখনই বলা হয় যখন মানুষটাকে বোঝা যায় না। ইন্টারেস্টিং হ্যায়, সমঝ মে নেহি আ রহা হ্যায় কেয়া হ্যায় (হাসি)!
বরুণ: অনুষ্কার যে গুণটা আমার সবচেয়ে ভাল লাগে, সেটা ওর অনেস্টি। ও প্রয়োজনের চেয়েও একটু বেশি সৎ! তার ফলে মাঝে মাঝে ওরই সমস্যা হয়ে যায়। আর অনুষ্কা খুব হেল্পফুল। কিন্তু ও তাদেরকেই সাহায্য করে, যাদের প্রয়োজন আছে। লোক দেখানো সাহায্যটা করে না।
প্র: একে অপরের কাছ থেকে কিছু শিখেছেন আপনারা?
অনুষ্কা: ইউটিউবার। ও আমাকে সব সময়ে অমুক ইউটিউবার, তমুক ইউটিউবারকে দেখাতে থাকে। আমি আসলে ইন্টারনেটে বেশি সময় দিই না। বরুণ আপ টু ডেট...
বরুণ: সব সময়ে আপ টু ডেট থাকা যে ভাল নয়, সেটা অনুষ্কা শিখিয়েছে!
প্র: অনুষ্কার করা কোন ছবিটা আপনার প্রিয়?
বরুণ: ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ আমার ভীষণ পছন্দের ছবি। আর ‘এনএইচ টেন’।
প্র: বরুণের কোন ছবি আপনার প্রিয়?
অনুষ্কা: বরুণকে ‘বদলাপুর’-এ দারুণ লেগেছিল আমার। আর ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’-এ ওর কনফিডেন্স ভাল লেগেছে। কী সুন্দর আলিয়া (ভট্ট) আর সিদ্ধার্থকে (মলহোত্র) গুঁতো মেরে সরিয়ে গোটা পর্দা জুড়ে একাই নাচছিল! ‘অক্টোবর’টা এখনও দেখা হয়নি।
প্র: বরুণের প্রিয় অ্যাপ কী জানেন?
অনুষ্কা: এক সেকেন্ডে বলে দেব। বরুণ সারাক্ষণ টুইটার আর ইনস্টাগ্রামে থাকে!
প্র: অনুষ্কার প্রিয় অ্যাপ?
বরুণ: টুইটার আর ইনস্টাগ্রাম, কিন্তু ওগুলো ও আমার ফোন থেকে করে থাকে (জোর হাসি)
অনুষ্কা: মোটেও না। আমি ওগুলো কম্পিউটার থেকে করি। অ্যান্ড আই সাইন আউট এভরি টাইম। সোশ্যাল মিডিয়া নয়, বাড়ির লাইট অন-অফ করার অ্যাপটাই আমার প্রিয়!
অনুষ্কা পাশ থেকে যোগ করলেন, ‘‘হ্যাঁ, এক বার আমাকে এমন ফেলে দিল! সে বার বেশ চোটও পেয়েছিলাম আমি।’’
কেক: ব্যাকস্টেজ বেকহাউস, খাবার: নৌশিজান