অকপটে অপরাজিতা।
অন্নদাদিদি হিসেবে কেমন লাগছে?
খুবই ভাল লাগছে। কারণ, সাহিত্যে আমরা অন্নদাদিদিকে এক রকম করে দেখেছি, স্নেহশীলা এক জন মানুষ, তাঁর জীবনের নিজস্ব দুঃখ আছে, বেদনা আছে, যন্ত্রণা আছে। শ্রীকান্ত এবং ইন্দ্রনাথকে পাশাপাশি দেখেছি ওই অধ্যায়ে, অন্নদাদিদির প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু শরৎচন্দ্রের অন্নদাদিদি দুম করে বেপাত্তা হয়ে যান। তার কোনও ট্র্যাক রেকর্ড নেই। মনে হয়, ‘ইস্, অন্নদাদিদির কী হল?’ ‘অন্নদাদিদির কী হল? ইস্!’–এর উত্তর এই ছবিতে আছে। দারুণ ব্যাপার যে সেই চরিত্রটাই আমি।
অন্নদাদিদি করে কী ফিডব্যাক পেলেন?
খুবই ভাল ফিডব্যাক পেয়েছি, মানে হাইলি অবলাইজড। আমি খুবই কৃতজ্ঞ যে চরিত্রটা মানুষের ভাল লেগেছে।
ঋত্বিক কী বলেছেন?
বলেছে, ‘পার্টটা তুই ভাল করেছিস।’ ভাল বলেছে, ভালই বলেনি। একটা ‘ই’-তেই তফাৎ হয়ে যায় কিন্তু... হা হা...।
আরও পড়ুন: ঋতুদার পরে বাংলা ছবি নিয়ে ক্যাটরিনা আর ভাবেনি: ঋতাভরী
ঘরকন্না কেমন চলছে?
দারুণ। ঘরকন্না করতে খুব ভালবাসি।
ঋত্বিক কেমন জীবনসঙ্গী?
এটা তো এক কথায় শেষ, খুব ভাল। খুবই ভাল। এখনও আমরা বন্ধুই। এটা সবচেয়ে ভাল।
ছেলের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাচ্চা হয়ে যাচ্ছেন?
নট রিয়েলি। ওর সঙ্গে খেলতে হয়। খেলার সময় আমাকেও ছোট হয়ে যেতে হয়। হোমওয়ার্ক করার সময় মা হয়ে যাই। কখনও বন্ধু, কখনও মা, কখনও কী বলব... ভাইবোন... নানান রকম সম্পর্ক যেগুলো এক্সিস্ট করে সেগুলো সবই আসা-যাওয়া করতে থাকে আমাদের মধ্যে। আর ওর জন্যই আমিও নিজের শৈশবে ফিরে যাই। ও না থাকলে এটা উপলব্ধি করতে পারতাম না। এটা খুবই ভাল।
ঋত্বিকের সঙ্গেও ওর এ রকম সম্পর্ক?
ঋত্বিকের সঙ্গে ভীষণই ক্লোজ। একেবারে বন্ধুজন। ওর যত আর্জি ও জানে, ঋত্বিককে বলাই ভাল, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপ্রুভড হবে। আমাকে বললে ভেস্তে যাবে এমনটা নয়, কিন্তু ভেস্তে যেতেও পারে। আমরা একেবারেই স্ট্রিক্ট বাবা-মা নই। আর সত্যি বলতে কি, ওর প্রতি স্ট্রিক্ট হওয়ার দরকারও পড়ে না। খুব বাধ্য।
ওর কতগুলো নাম?
ভাবাই যাবে না, অ...নে...ক!
যেমন?
ভাল নাম উপমন্যু। আমি ওকে ডাকি পান্ত। ঋত্বিক ওকে ডাকে... এটা ওদের দু’জনেরই থাক। আর আমার মা ওকে যা ডাকে... হা হা হা... সেটা... হা হা হা... এটাও সবার জন্য নয়। বড় হয়ে উপমন্যু বলতে পারে, ‘বল, তোমরা কে আমাকে বেশি উইয়ার্ড নামে ডাকো?’ প্রত্যেকটা নামেই ও সাড়া দেয়!
আমরা একেবারেই স্ট্রিক্ট বাবা-মা নই:অপরাজিতা
আপনারা খুব বেড়াতে ভালবাসেন। তাই না?
হ্যাঁ। উপমন্যুও ভালবাসে। কলকাতায় বেশি দিন থাকা হয়ে গেলে ও বলে, ‘অনেক দিন তো হয়ে গেল কোথাও যাচ্ছি না। চল একটু বোলপুর থেকে ঘুরে আসি। আমার খুব ইচ্ছে করে আবার এক বার আউলি (গাড়োয়াল হিমালয়) যেতে।’ ওখানে এক বার আমরা অনেক দিন ছিলাম। ওর মনে থেকে গিয়েছে। নেচারের সংস্পর্শ একটা মানুষকে ভাল মানুষ হতে সাহায্য করে, এক রকম ভাবে পৃথিবীকে দেখা শেখায়। ভিন্ন ভিন্ন জায়গা, ভিন্ন ভিন্ন মানুষ। মানে কলকাতায় এক জনের সঙ্গে আমার যা সম্পর্ক, শীতের জায়গায় থাকলে হয়তো সম্পর্কটা আলাদা হত। এগুলো খুবই সূক্ষ্ণাতিসূক্ষ্ণ ব্যাপার এবং আমার ভাবতে ভাল লাগে, আমাদের ছেলে এগুলো উপলব্ধি করতে পারছে।
আরও পড়ুন: দু’দশকের বেশি পুরনো ‘ত্রিকোণ সম্পর্কের’ ছবি শেয়ার করলেন নস্টালজিক নীনা
পরের কাজ?
অপেক্ষা করছি। নিজেকে স্পেস দিয়ে রেখেছি যাতে আবার একটা মনোমত কাজ করতে পারি। এই মুহূর্তে ‘শেষমেশ’ নামে জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস-এর একটা ফিল্ম করছি।
টেলিভিশনে?
যা খুশি হতে পারে। কিন্তু স্ক্রিপ্টটা মনোমত হতে হবে। আমি অনেক স্ক্রিপ্ট পড়ছি, মিটিং হচ্ছে, কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু তখনই ওয়ার্ক আউট করবে যখন আমার মনে হবে যে, হ্যাঁ, লেটস গো ফর ইট। ভাল কাজের জন্য অপেক্ষা দরকার। অপেক্ষাগুলো ভালবেসেই করি। উপভোগও করি।