আরিনা
প্র: ছোট থেকেই অভিনয় করবেন ভেবেছিলেন?
উ: বই পড়তে আমার খুব ভাল লাগে। তাই বই পড়ার সময়ে কোনও চরিত্র মনে ধরে গেলে ভাবতাম, আমিই সেই মেয়ে। টুয়েলভে থিয়েটারে আসার পরে অভিনয় ব্যাপারটা বুঝতে শিখলাম। তখন থেকে অবশ্য এটাই ধ্যানজ্ঞান।
প্র: তা হলে উচ্চমাধ্যমিকের পরেই অভিনয়?
উ: বারাসত গার্লস হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক দেওয়ার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছি। বাবার শর্তই ছিল, আগে পড়াশোনা।
প্র: তার মানে অভিনয়ে আসার ব্যাপারে বাড়ির মত ছিল না?
উ: একেবারেই না। বাবা ইঞ্জিনিয়ার, মা হোমমেকার। পরিবারের কেউই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নন। তবু মায়ের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম। মাকেই বলেছিলাম, বাবাকে এ ব্যাপারে রাজি করাতে।
প্র: সুযোগ এল কী করে?
উ: থিয়েটার করতাম। তার পরে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ ধারাবাহিকে সুযোগ পেলাম। বেশি দিন চলেনি। ওই একই প্রযোজনা সংস্থা ‘বধূবরণ’-এ রাধার চরিত্রটা দিয়েছিল। তার পরে ‘মুসকান’।
প্র: কেরিয়ারের শুরুর দিকেই মায়ের চরিত্র করার ঝুঁকি নিলেন?
উ: যখন শুরু করেছিলাম, তখন কী কী চরিত্রে অভিনয় করব, তার কোনও বাঁধাধরা তালিকা ছিল না। তাই অসহায় মহিলা বা মায়ের চরিত্র করব না— এমন ভাবিনি। মায়ের চরিত্রের সুযোগ এলে আবারও করব।
প্র: ‘মুসকান’-এর আরতি চরিত্রের অনুপ্রেরণা কে?
উ: বাবাকে কাজের জন্য নানা জায়গায় যেতে হতো। ছোটবেলা থেকে দেখেছি, মা আমার জন্য কত কিছু করেছেন। ফলে আরতি চরিত্রটা যেন মাকে দেখেই শেখা।
প্র: আর নাচ?
উ: নাচ ভাল লাগলেও বেশি দূর এগোতে পারিনি। বাবার নাচ-অভিনয় ভীষণ অপছন্দের। যেটুকু শিখেছি, সবটাই শ্রীদেবীকে দেখে। ওঁর নাচের ছন্দ, এক্সপ্রেশন খুঁটিয়ে ফলো করেছি।
প্র: কলকাতা আর মুম্বই কাজের দিক থেকে কতটা আলাদা?
উ: এখানকার লোকের কাছে সময়ই নেই। কাজ-বাড়ি-কাজ। কলকাতায় কাজ হয়ে গেলে কফিশপে গেলাম, আড্ডা মারলাম! মুম্বই ভীষণ প্রফেশনাল। কেউ আমার যতই ঘনিষ্ঠ হোক, কাজের পরে তাঁর কাছে মোটেও সময় নেই!
প্র: প্রেম করছেন?
উ: একদমই না। আমি ভীষণ বেরসিক। বৃষ্টিতে ভিজে গান গাওয়া, প্রেমে পড়া... এ সবের থেকে দূরে। এর চেয়ে গান চালিয়ে দিলে ধেই ধেই করে নেচে দিতে রাজি।
প্র: রাধা বা আরতির চেয়ে আরিনা কতটা আলাদা?
উ: পুরোপুরি। আমি অত শান্ত নই। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দু’বার ভাবি না। আরিনা অন স্ক্রিনে মা হয়ে মেয়েকে বকে। আর বাস্তবে আরিনা মায়ের বকুনি শোনে। মা বকতেই থাকে। আর আমিও কানে হেডফোন গুঁজে অন্য জায়গায় চলে যাই।